কলকাতা : পকেট বা মানি ব্যাগে ভরে টাকা নিয়ে বেরনোর অভ্যেস অনেকেই ছেড়ে দিয়েছেন। হাতে ফোন আর পার্সে ক্রেডিট বা ডেবিট কার্ড থাকলে, ক্যাশ ক্যারি করতে অনেকেরই অনীহা। তাছাড়া রোজকার বাজার থেকে শখের সাজসজ্জা সবই তো এখন জাস্ট আ ক্লিক অ্যাওয়ে। তারপর ডেবিট কার্ডের সিভিভি আর এক্সপায়রি ডেট বসিয়ে ওটিপি এলেই শপিং কমপ্লিট ! কিন্তু আপনি কি জানেন, এই তথ্যগুলি চুরি করেই আপনার অ্যাকাউন্ট থেকে সব পয়সাকড়ি সাফ করে দিতে পারে প্রতারকরা। দেশে বিদেশে এরকম বেশ কিছু গ্যাং এইসব দুষ্কর্ম ঘটিয়ে থাকে। কোনও ভাবে যদি আপনার কার্ডের ডিটেইলস সেই সংস্থার অ্যাপ বা সাইটে সেভ থেকে যায় আর তা যদি লিক হয়ে যায়, তাহলে আপনার কার্ডের সব তথ্য চলে যাবে প্রতারকদের কাছে !! এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত 

ভাবছেন, কার্ডের তথ্য চুরি হলেও, ওটিপি ছাড়া কেনাকাটা যাবে না? 

ভুল ভাবছেন। নিজের দেশের মধ্যের কোনও ই-কমার্স সাইট বা অনলাইন বিপণি থেকে কেনার সময়, আপনার ফোনে ওটিপি আসবে, তা দিলে তবেই জিনিসপত্র কেনাকাটা করা যাবে। কিন্তু আপনি যদি কোনও বিদেশি সাইট থেকে কেনাকাটা করেন, তবে তো ওটিপি ছাড়াই কিনতে পারবেন। আবার বিদেশে বসে আপনার কার্ড ব্যবহার করে এদেশের সাইট থেকে কিনতেও ওটিপি লাগে না। তাই, একবার কার্ডের তথ্য হাতিয়ে নিতে পারলে আপনার অ্যাকাউন্ট খালি করতে প্রতারকদের সময় লাগবে না । তাহলে উপায় ? কয়েকটি টিপস মেনে চললে কিন্তু, আপনি বড় বিপদ থেকে কিছুটা বাঁচতে পারেন। বা বলা যায়, অল্প হলেও সেফ সাইডে থাকতে পারেন। 

আরও পড়ুন -


বাচ্চার অনলাইনক্লাসের মধ্যেই ঢুকে পড়তে পারে হ্যাকার, আপনার ফোনে সিঁধ কাটছে স্পাইওয়্যার !


মাথায় রাখুন 



  • বড় বড় সংস্থার সাইট থেকেও কিন্তু প্রতারকরা  ফাঁদ পেতে তথ্য হ্যাক করতে পারে। তাই ডেবিট কার্ড ডিটেইলস একেবারেই সেভ রাখবেন কোথাও। আপনার তথ্য ওই সাইটে যাতে সেভ না থাকে, তার জন্য একটি টিক অফ করতে হয়। সেটা মনে করে করবেন।

  • কোনও সাইট বাই ডিফল্ট আপনার কার্ডের ডিটেইলস সেভ রাখলে আপনি ম্যানুয়ালি তা মুছে দেবেন। 

  • প্রতিবার ট্রানজ্যাকশনের সময় সময় নিয়ে সব তথ্য লিখুন, সময় বাঁচানোর জন্য কার্ডের ডিটেইলস সেভ রাখবেন না। 

  • একেবারে অচেনা কোনও সাইটে কেনাকাটা করার আগে, বিশেষত পে করার আগে, তাদের কনট্যাক্ট নম্বরটিতে ডায়াল করে দেখুন। ফেক নয়ত? এমন অজস্র সাইট কিন্তু আছে, যারা জিনিস ডেলিভারি করবে বলে টাকা নেয়, পরবর্তীতে জিনিস না পেয়ে কাস্টমার কেয়ারে যোগাযোগ করে আর পাওয়া যায় না। 

  • কোনও ভেন্ডারকে না চিনে, তার সঙ্গে ব্যক্তিগত কেনাকাটায় যাবেন না। রেপুটেড প্ল্যাটফর্ম থেকেই কিনুন বা মাধ্যম হিসেবে রাখুন। 

  • প্রতিটি ব্যাঙ্কই গ্রাহককে প্রতিদিনের অনলাইন ট্রানজ্যাকশন করার ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেয়। সেটা অনলাইন ব্যাঙ্কিংয়ে গিয়ে আপনিও ইচ্ছেমতো সেট করে দিন। এতে অন্তত কার্ড বা কার্ডের তথ্য চুরি হয়ে গেলেও একদিনে একটা নির্দিষ্ট আ্যামাউন্ট অবদিই খরচ করতে পারবে প্রতারক। তার মধ্যে আপনি ব্যবস্থা নিতে পারবেন । 

  • ক্রেডিট কার্ডে খরচের ঊর্ধ্বসীমাও অকারণ বেশি রাখবেন না। 

    মনে রাখবেন, অনলাইন শপিং যতটা সুবিধে করে দিয়েছে আপনাকে, ততটাই ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে। তারই মধ্যে কিছু সাবধাণতা আপনাকে বিপদসীমার বাইরে রাখতে পারে। 


    পরামর্শ : সাইবার বিশেষজ্ঞ সন্দীপ সেনগুপ্ত