প্রসেনজিৎ সাহা, আগরতলা: পৌরসভা নির্বাচনের প্রচারে রামরাজ্যে সীতার দুর্দশার কথা শোনা গিয়েছিল তাঁর মুখে। তার জেরে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত হানার মামলা দায়ের হয়েছিল। সেই সংক্রান্ত তিনটি মামলাকেই সশরীরে হাজিরা দেওয়া থেকে অব্যাহতি পেলেন বাংলায় তৃণমূলের (TMC) রাজ্য় সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। কুণালের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়ার ক্ষেত্রেও পুলিশ নিয়ম মানেনি বলেও অভিযোগ উঠল। ত্রিপুরায় কুণালের বিরুদ্ধে চার্জগঠনও আপাতত আটকে গেল (Tripura News)।
আপাতত সশরীরে হাজিরা দিতে হচ্ছে মা কুণাল ঘোষকে
শনিবার আদালতে শুনানি চলাকালীন কুণালের আইনজীবী অয়ন চক্রবর্তী যুক্তি দেন, যে ধারাগুলিতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে একটি ধারায় আইন না মেনেই চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ। এর উপর দাঁড়িয়ে চার্জ গঠন করা যায় না। সরকারি আইনজীবীও মেনে নেন চার্জশিটে আইনের নির্দেশ মানা হয়নি বলে। তাতেই দীর্ঘ শুনানির পর আটকে যায় চার্জগঠন।
এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে কুণাল বলেন, "জনমদুখিনী সীতা মায়ের কথা বলে কোনও অন্যায় করিনি। বিজেপি কর্মীরা জয় শ্রীরাম স্লোগান দিয়ে আক্রমণ করত বলেই আমি কথা প্রসঙ্গে বিষয়টি তুলেছিলাম। রাজনীতিতে ধর্ম জড়ানো কখনই উচিত নয়।"
আরও পড়ুন: Jawhar Sircar: বিতর্কের জের! সকালে সরিয়ে বিকেলে হোয়াটসঅ্যাপে গ্রুপে জহরকে ফেরাল তৃণমূল
ত্রিপুরায় দলের হয়ে প্রচারে গিয়ে কুণাল রামচন্দ্রের শাসনকাল নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তৃণমূলের একটি সভায় দাঁড়িয়ে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, অযোধ্যায় রাম সিংহাসনে বসলেও, রানির আসনে সীতা কেন অনুপস্থিত ছিলেন?কেন অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সীতাকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হয়? কেন লব-কুশকে জঙ্গলে জন্ম নিতে হয় এবং কেন সীতাকে শেষমেশ পাতাল প্রবেশ করতে হয়। রামরাজ্যের সঙ্গে বিজেপি শাসনের তুলনা টেনে মহিলা নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কুণাল। সেইসময়ই বিষয়টি নিয়ে সরব হয় বিজেপি। কুণালের কড়া শাস্তির দাবি তোলে তারা।
ভোটের প্রচারে সীতাকে নিয়ে মন্তব্য করেছিলেন কুণাল
সেই নিয়ে এবিপি আনন্দকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কুণাল বলেছিলেন, "ত্রিপুরা পুলিশ আমার বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। অকারণ হয়রান করার প্রচেষ্টা। তার কারণ যে বিষয়ে মামলা দেওয়া হয়েছে, ইতিমধ্যেই ১২ নভেম্বর ২০২১ নোটিসে সাড়া দিয়ে পুলিশের সঙ্গে দেখা করে বুঝিয়ে এসেছিলাম। দেখুন আমি নিজে হিন্দু ঘরের ছেলে। সব ধর্মকে সম্মান করি। কোনও ধর্মকে আঘাত করার উদ্দেশ্যই নেই। কিন্তু জয় শ্রীরাম স্লোগানটিকে যেখানে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হচ্ছে, আমি সেখানে মা সীতার অপমান, ওই ভাবে চলে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলাম। সেটিকে বিকৃত করে মামলা দিয়েছে। পুলিশ যখন জানতে চেয়েছিল, রামায়ণের গবেষণা গ্রন্থ নিয়ে বুঝিয়ে দিয়ে এসেছিলাম। তার পরেও চার্জশিট দিয়েছে।"