প্রসেনজিৎ সাহা, আগরতলা: নিয়মিত রোগী দেখতেন একসময়। মেডিক্যাল কলেজে হবু চিকিৎসকদের পড়াতেনও। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর রোজনামচায় পরিবর্তন ঘটে। তবে রাজনীতিকের আগে তিনি মানুষের সেবায় ব্রতী চিকিৎসক। তাই প্রশাসনিক কাজকর্ম সামলেও পুরনো পেশার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তিনি। বুধবার তার প্রমাণও মিলল হাতেনাতে। অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে এক বালকের অস্ত্রোপচার করলেন ত্রিপুরার (Tripura News) মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা (Tripura CM Manik Saha)। 


প্রশাসনিক কাজকর্ম সামলেও পুরনো পেশার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ মানিক


বুধবার সকালে হাপানিয়ায় নিজের পুরনো কর্মস্থল, ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজে ঢোকেন মানিক। এদিক ওদিক যাওয়ার বদলে, সরাসরি অপারেশন থিয়েটারে ঢুকে যান। সেখানে অপারেশনের টেবিলে তখন ১০ বছরের এক বালক। ওরাল সিস্টিক ক্ষত নিয়ে ভর্তি ছিল সে। গায়ে অ্যাপ্রন, মুখে মাস্ক এবং হাতে গ্লাভস পরে ওই বালকের অস্ত্রোপচার করতে ঢোকেন মানিক। সেখানে বাকি চিকিৎসকদের সঙ্গে তাঁর কথোপকথন, আলোচনার ছবিও সামনে এসেছে। 


খুব বেশি সময় যদিও লাগেনি অস্ত্রোপচারে। এ দিন সকালে সাড়ে ৯টা নাগাদই অপারেশন থিয়েটার থেকে বেরিয়ে আসেন মানিক। তিনি জানান, ১০ বছরের ওই বালকের নাম অক্ষিত ঘোষ। জনৈক সুকান্ত ঘোষের ছেলে তিনি। অস্ত্রোপচারের পর ভাল আছে অক্ষিত। গত বছর ১৫ মে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন মানিক। তার পর দীর্ঘ সাত মাস পর তিনি অপারেশন থিয়েটারে ঢুকলেন। 




অপারেশন থিয়েটারে মানিক সাহা।


আরও পড়ুন: Golden Globes 2023: প্রথম ভারতীয় ছবি হিসেবে গোল্ডেন গ্লোব জয়, টিম 'আরআরআর'কে শুভেচ্ছা প্রধানমন্ত্রীর


এই দীর্ঘ বিরতি নিয়ে প্রশ্ন করলে মানিক বলেন, "দীর্ঘ ব্যবধানে অস্ত্রোপচার করলেও কোনও অসুবিধা হয়নি।" এ দিন অস্ত্রোপচারের সময় তাঁর কাজে সহযোগিতা করতে উপস্থিত ছিলেন চিকিৎসক অমিতলাল গোস্বামী, পূজা দেবনাথ, ডেন্টাল সার্জারি এবং ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারি বিভাগের রুদ্রপ্রসাদ চক্রবর্তী, স্মিতা পাল, কাঞ্চন দাস, শর্মিষ্ঠা বণিক লেন এবং বেশালী সাহাও। অ্যানাস্থেসিয়া থেকে অপারেশন থিয়েটারে ছিলেন কংচাই চৌধুরী, পারমিতা দাস এবং অদিতি ভট্টাচার্য।


মানিক ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের দন্ত বিভাগের প্রধান ছিলেন


উল্লেখ্য, মানিক ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের দন্ত বিভাগের প্রধান ছিলেন। রাজনৈতিক জীবনের শুরু কংগ্রেসের হাত ধরে। পরে বিজেপি-তে যোগ দেন তিনি। বিপ্লবকুমার দেব ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলে, তাঁর জায়গায় অভিষিক্ত হন মানিক। তার পর প্রশাসনিক দায়-দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হাসপাতাল যাওয়া হয়নি মানিকের। দীর্ঘ সাত মাস পর এ দিন পুরনো পেশায় ফিরলেন তিনি।