আগরতলা: ভোট ঘোষণা হতেই চড়েছিল উত্তেজনার পারদ। শাসক বিজেপি ও বিরোধী সিপিএম-এর মধ্যে তুঙ্গে উঠেছিল বাগযুদ্ধ। এই বছর নানা জট কাটিয়ে অবশেষে হাত মিলিয়েছে বাম ও কংগ্রেস। অন্যদিকে এবার ত্রিপুরায় বিশেষ ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে তিপ্রা মথা, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। পাশাপাশি এবার উত্তর পূর্বের এই রাজ্যে কোমর বেঁধে নেমেছিল তৃণমূল। 


হেভিওয়েট প্রচারক:
বিজেপি-কংগ্রেস-সিপিএম থেকে তৃণমূল। সব দলেরই হেভিওয়েটরা প্রচার করেছেন এই রাজ্যে। অমিত শাহ ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একই দিনে পৌঁছেছিলেন ত্রিপুরায়। একদিকে অমিত শাহ, নরেন্গ্র মোদি- অন্যদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঝোড়ো প্রচার চলেছে ত্রিপুরায়। চড়েছে বক্তব্যের পারদও। বাংলার উন্নয়নের একাধিক উদাহরণ সামনে রেখে ত্রিপুরায় প্রচার চালিয়েছে তৃণমূল। ত্রিপুরায় জিতলে বাংলার মতোই একাধিক সামাজিক প্রকল্প চালুর বার্তাও দেওয়া হয়েছিল প্রচারে। খোদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও দিয়েছিলেন আশ্বাস।  


ভোটের দিন হিংসার অভিযোগ:
ভোট প্রচারের সময় থেকেই বারবার নানা জায়গা থেকে হিংসার ঘটনার অভিযোগ উঠেছে। এমনকি সেই অভিযোগ উঠেছে ভোটের দিনেও। এদিনও ত্রিপুরায় বিক্ষিপ্ত অশান্তির অভিযোগ উঠেছে। গোমতী জেলার কাঁকড়াবন-শালগড়া বিধানসভা কেন্দ্রে সিপিএমের দুই পোলিং এজেন্টকে মারধরের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। অভিযোগ অস্বীকার করেছে শাসক শিবির। পুরনো আগরতলার খয়েরপুর বিধানসভা কেন্দ্রের নাথপাড়ায় ভোটারদের বাধা, লাঠি দিয়ে মারধরের অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। নাথপাড়া এলাকার একটি বুথের ঘটনা। অন্যদিকে, শান্তিরবাজার বিধানসভার কালাছড়াতেও গন্ডগোল বাধে। অভিযোগ, বিজেপির হাতে আক্রান্ত হন দুই সিপিএম কর্মী। শান্তিরবাজার নিয়ে গতকালই জাতীয় নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছিল বামেরা। দুটি ক্ষেত্রেই হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে বিজেপি। 
ধনপুর বিধানসভা কেন্দ্রের ভবানীপুর ও দুর্লভপুরে ভোটারদের বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠল বিজেপির বিরুদ্ধে। প্রতিবাদে পথ অবরোধ করেন ভোটাররা। পরে পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী তাঁদের ভোটকেন্দ্রে নিয়ে যায়। গন্ডগোলের দায় বাম-কংগ্রেসের ঘাড়ে চাপিয়েছে গেরুয়া শিবির। 


বৃহস্পতিবার ভোটের পরে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে ত্রিপুরায় গড়ে ভোটদানের হার শতকরা ৮০ শতাংশের উপরে। ত্রিপুরায় মোটের উপর শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।   


ত্রিপুরার ৬০টি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন বিভিন্ন দলের মোট ২৫৯ জন প্রার্থী। মোট বুথের সংখ্যা ৩ হাজার ৩৩৭। এর মধ্যে স্পর্শকাতর ও অতিস্পর্শকাতর মিলিয়ে বুথপ্রায় ১১০০টি। ভোট নিরাপত্তায় নেমেছিল ৪০০ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী (CISF)। বুথের বাইরে এবং এলাকার নিরাপত্তা দেখেছে রাজ্য পুলিশ (Police)। ভোটের ফল পাওয়া যাবে ২ মার্চ।


আরও পড়ুন: বিধানসভা ভোটে রক্তাক্ত ত্রিপুরা, ধারালো অস্ত্র-লাঠি নিয়ে হামলার অভিযোগ