Panchayat Election 2023: 'আমি আজ দুঃখিত কয়েকজন মারা গেছে বিক্ষিপ্ত ঘটনায়', শোক প্রকাশ মমতার

Continues below advertisement

সকলকে ধন্য়বাদ জানাচ্ছি। যারা বিরোধিতা করেও সাহায্য় করেছেন। যারা সমালোচনার মধ্য়ে দিয়ে আমার আত্মনির্ভরতাকে বাড়িয়েছেন। অনেক কুৎসা অনেক অপপ্রচার, অনেক এজেন্সি।

একটা জিনিস লক্ষ্য় করুন। কী অপরাধ করেছি? আমি সোশাল ওয়ার্কার। যতদিন বিরোধী ছিলাম মার খেয়েছি। ২০১৪ থেকে, যেদিন থেকে বিজেপি ক্ষমতায়, সেদিন থেকে উগ্র বিদ্বেষমবলক মনোভাব, কিম্ভুককিমাকার মনোভাব, কথার ভদ্রতা একটা কথাও বলেনি। অপরাধ করলে শাস্তি দিন। মানুষের শাস্তি মেনে নিতে রাজি। 

এত মিথ্য়ে এক কুৎসা প্রিন্ট এতটা করেনি। একাংশ করেছে। টিভি চ্য়ানেল, আজকে দিল্লি থেকে বলছে, এই নিউজটা যাবে। আমার সাথে কসের ঝগড়া, কীসের রাগ। আমি মাটি থেকে উঠে আসা লোক বলে। আমি দরিদ্র সমাজের প্রতিনিধিত্ব করি বলে। 

পঞ্চায়েত ওভার। ভেবে দেখুন, আমার সত্য়ি অপরাধ থাকলে, মানুষ যা দেবে মাথা পেতে নেব। জাম্ভিকতা কোনও পার্টির ঔদ্ধত্য় হতে পারে না। আমি একদিকে অ্য়াগ্রেসিভ, মা দুর্গার সাধক, কালীর সাধক, রামকৃষ্ণর সাধক, গান্ধীজি আন্দোলনের পথপ্রদর্শক, আবার নেতাজির মতো অ্য়াগ্রেসিভ। প্রয়োজন মতো পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করি, প্রয়োজনে নিজের মতো থাপ্পড়ও মারি শাসন করার জন্য়। এটা ভালবাসার লক্ষণ। 

রুলিং পার্টি হিসেবে ত্রিপুরায় যান। ৯৩ শতাংশ আসনে লড়তে দেয়নি। একবারও তো বললেন না। মাথা ফাটিয়েছে। অভিষেকদের অ্য়াটাক করা হয়েছে। সুস্মিতাদের অ্য়াটাক করা হয়েছে। আপনারা তো বললেন না। অসমে টিম গেছে। অ্য়াটাক করেছে। আপনারা তো বললেন না। আমি তো সর্বপ্রথম চিঠি দিয়েছিলাম। 

কথায় কথায় ফ্য়াক্ট ফাইন্ডিং টিম। এভাবে দেশ চলে না। দেশ চালাতে ধৈর্য রাখতে হয়। 

ইচ্ছে হল পেনশন কেটে দিলাম, এভাবে দেশ চলে না। একটা নকুলদানা কিনতে গেলে জিএসটি। তারপর ইডি দিয়ে ধরবেন। কত অত্য়াচার করবেন? বিধানসভাও তো হয়েছিল সেন্ট্রাল ফোর্স দিয়ে। 

আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর ২-১টা ঘটনা ছাড়া আর কিছু ঘটেনি। এখনও পর্যন্ত ছেলেগুলো জেলে আছে। ধরে রাখা হয়েছে। 

সুপ্রিম কোর্ট ৩২ হাজার ছেলে মেয়ের চাকরি ফিরিয়ে দিয়েছে। গণতন্ত্র সবাইকে নিয়ে। এক দফা মানুষ কাজ করছে না। কোঅর্ডিনেশন কমিটির অনেক লোক কর্মচারী। অনেক জায়গায় সই করেনি। দোষ কার? তার বিরুদ্ধে পানিশমেন্ট হবে না কেন? 

এই ভোটটা হয় ব্য়ালটের মাধ্য়মে। তারা ভোট দিয়ে অভ্য়স্ত ইভিএমে। এখানে প্রিসাইডিং অফিসার, কাউন্টিং অফিসারদের আগে থেকে ট্রেনিং দিয়ে করা উচিত ছিল। এজন্য় তৃণমূলের ৫০-১০০টা ভোট বাতিল হয়েছে। তাও পার্টি শৃঙ্খলাবদ্ধ। তাই কোথাও কাউকে ঘেরাও করতে অ্য়ালাও করিনি। আমরা চেয়েছি শান্তিতে হোক। 

গতকাল যারা বড় বড় ভাষণ দেয়, সবাই ঘুমোতে চলে গেছিল। আমরা ঘুমোইনি। ভোর ৬টা অবধি পাহারা দিয়েছি। অভিষেকের লাস্ট কথা হয়েছে রাত তিনটেয়। বলছে শুতে যাও আমি দেখে নিচ্ছি। ২ মাস ধরে নবজোয়ার করে, মানুষের কাছে গিয়ে আমাদের কী ভুল আছে জানতে চাই। এটাই দলের কাজ। যা দেখলাম, যা শুনলাম, এমনকী মাথায় যখন মেরেছিল, রাজ্য়সভা অ্য়াডজর্ন হয়েছিল, সেখানে বলছে মাথায় ফেট্টি বেঁধে ঘোরে। আপনার সাথে পার্সোনাল লড়াই থাকতে পারে, কিন্তু একটা লোক অসুস্থ হলে আরোগ্য়ও কামনা করে। আমি কিন্তু যোগাযোগ রাখি। 

আমি কুৎসাটাকে হাসিমুখে মেনে নিয়েছি। বদলা নেব না। এতদিন মুখ বুজে সহ্য় করেছি। আজকে যদি বলি, এত অত্য়াচার সত্ত্বেও ৮০ হাজার সেন্ট্রাল ফোর্স ছিল। ভাঙড়ে গন্ডগোল হল কীকরে কাল রাত? ওখানে তো সেন্ট্রাল ফোর্স ছিল। অ্য়াডি এসপিকে গুলি করা হয়। বাইরে থেকে গুন্ডা আগে থেকে জড়ো করে রেখেছিল। সেখান থেকে বেরিয়ে বিডিওকে ঘেরাও। গায়ের জোরে লেখানো হয়। খুশি হতাম, তৃণমূলের কেউ অন্য়ায় করলে তাদেরও গ্রেফতার করলে। আরাবুল হেরেছে। আরাবুলের সিট হারা নয়। 

এত ভায়োলেন্স ভায়োলেন্স করে বদনাম করলেন। আমি মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি। বাংলার নাম নিয়ে যারা ছিনিমিনি খেলেছে, তাদের চিনে রাখুন। আফটার ডেথ ডাক্তার এলে ট্রিটমেন্ট করবে কোথায়। মিথ্য়ে শিখিয়ে সাজিয়ে, বলো ভোট দিতে দেয়নি। দেখান তো, কোনও ইলেকশনের পর, ৭০০-র বেশি এলাকায় রিপোল, কোনও ঘটনা ছাড়া। যারা রিপোল চেয়েছিল, আমাদের এলাকাতেও রিপোল করিয়েছি। কারণ সেটা ভুল ছিল বলে। 

ইলেকশন কমিশন সিদ্ধান্তমতো রিপোল করেছে। আমরা মেনে নিয়েছি। একমাত্র ভাঙড়ের কাউন্টিংয়ের ইন্সিডেন্ ছাড়া আর কিছু হয়নি। আবার টিম পাঠিয়েছে। আর কত টিম পাঠাবেন? ভাজপার অপদার্থ নেতাগুলোকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করে, যারা রুখে দাঁড়াতে পারে না। সহ্য়ের লিমিট থাকে। লেবু কচলালে তেতো হয়। 

আমি তো গিনিপিগ নই। যে আপনারা আমাকে গিনিপিগ করে ফেলবেন। যা করেছেন, ভালই হয়েছে। 

আমি আজ দুঃখিত কয়েকজন মারা গেছে বিক্ষিপ্ত ঘটনায়। এই জায়গাগুলো আজ নয়, চিরকাল ২৫-৩০ বছর ধরে গন্ডগোল হয়। ডোমকল তো , গন্ডগোল হয়েছে। জিতেছে বিরোধীরা। ভাঙড়ে করেছে বিরোধী দল। জিতেছে ওরা। সিট ছিনিয়ে নিয়েছে। 

৭১ হাজার বুথে ভোট হয়েছে। ঘটনা ঘটেছে কটা এলাকায়। বড়জোড় ৬০টা বুথে। সেটা ঘটানো হয়েছে। অধিকার আছে, আঁচলে করে জলের বোতল নিয়ে গিয়ে ভোট নষ্ট করে দেব? কেন সে অ্য়ারেস্ট হবে না? ব্য়ালট পুকুরে ফেলেছে, সিপিএমের কায়দা। আগুন লাগাও, নির্যাতন করো। এই কালচার আমি বন্ধ করেছি। আমি কোনও হিংসাকে সাপোর্ট করি না। 

আমি দুঃখিত, যে রাম, বাম শাম প্লাস আরেকজন জোট বেঁধেও মহাঘোঁট বেঁধেছিল। প্ল্য়ানিং ছিল গন্ডগোল করার। কী করেনি? কোর্ট যা নির্দেশ দিয়েছে মেনেছি। বিএসএফ মেনেছি, সিআরপিএফ মেনেছি। ত্রিপুরায় যখন ৯৩ শতাংশ আসনে ভোট হয় না, কোথায় থাকে ফ্য়াক্ট ফাইন্ডিং কমিটি? উত্তরপ্রদেশে খন ৬৭ শতাংশ আসনে ভোট হয় না, কোথায় থাকে তারা? মণিপুর জ্বলছে। কোথায় ফ্য়াক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। অসমে এত খুন হল। কোথায় কমিটি? উত্তরপ্রদেশে এত লোক খুন হল কোথায় কমিটি? বিজেপি বলছে আমরা থাকলে এনকাউন্টার করে দিতাম। কাকে করবে? এনআরসি নিয়ে আন্দোলন করছিল দিল্লিতে। কত ডেডবডি খুঁজে পাওয়া গেল না। কটা কমিটি গেছে? ২ বছরে এত ইডি, এত ফোর্স, ১৫৪টা সেন্ট্রাল কমিশন এসেছে। ফ্য়াক্ট ফাইন্ডিং নিয়ে। ওরা বিজেপির প্রোটেকশন কমিটি। বিজেপিকে প্রোটেকশন দেওয়া। প্রোভোকেশন কমিটি। 

তা সত্ত্বেও বলব, যারা মারা গেছেন, কিছু রাজনৈতিক দলে, তাদের সকলের জন্য় দুঃখী। পরিবারের সকলকে সমবেদনা জানাই। তারা পরিস্থিতির শিকার। পুলিশকে ফ্রি হ্য়ান্ দিচ্ছি, কড়া ব্য়বস্থা নিতে। সরকার ঠিক করেছে, পরিবারকে সাহায্য়। ২ লক্ষ টাকা করে। ১৯ জন মরা গেছে। তার মধ্য়ে বেশিরভাগ আমাদের লোক। একটা করে স্পেশাল হোমগার্ড চাকরি দেব। সিপিএম, কংগ্রেস, ভেদাভেদ হবে না। 

এবার আবদন করব, পঞ্চায়েত করতে গেলে, কোথাও বিনা অরাজনৈতিক পঞ্চায়েত, কোথাও রাজনৈতিক। এ ওর মুখ দেখে না। গ্রামে এটা হয়। কারও হাতে নেই। বাংলায় ১১ কোটি মানুষ। বিচ্ছিন্ন কয়েকটা ছাড়া... পূর্ব বর্ধমানে হার্ট অ্য়াটাকে মৃত্য়ু। বর্ধমানে ঘটনা নেই। পশ্চিমে নেই। হাওড়ায় নেই। হুগলিতে নেই। বীরভূমে নেই। বাঁকুড়ায় নেই। পুরুলিয়ায় নেই। আলিপুরদুয়ারে নেই। 

কোচবিহারে একটা ঘটনা শীতলকুচিতে। রায়গঞ্জে একটা ঘটনা ঘটেছে। অ্য়াকচুয়াল ঘটনা দুটো জায়গায়। 

কাল রায়দিঘিতে আমাদের নেতাকে খুন করেছে। বাসন্তীতে একটা খুন ছাড়া কোনও ঘটনা নেই। ভাঙড়ের ঘটনা সবার জানা। সেই বিদ্য়ুতের সময় থেকে কারা অপারেট করছে। কারা প্রোটেকশন দিচ্ছে।

২ টো জেলায় ঘটনা। তার জন্য় ২৩টা জেলার ভাবমূর্তি নষ্ট করেছেন। মুর্শিদাবাদ ও মালদা। মুর্শিদাবাদের ঘটনা কে ঘটিয়েছে জানেন। দেশের নেতা। আসলে জিরো। রাম বাম শাম আর অত্য়াচারের ধাম। যারা কুমীরের মুখে মানুষ ঠেলে মারে। যারা স্ত্রী থেকে বউ কাউকে মানতে পারে না। সরি বলার জন্য়। ওনার বন্ধু আছে। বুদ্ধদেববাবু হতে চান। তার শ্বশুর জেলা প্রেসিডেন্ট ছিল। একটি যুবককে গলার মধ্য়ে কইমাছ খাইয়ে গাছে বেঁধেছিল। ভুলে গেছি আমরা? আমতার হাত কে কেটেছিল? আনন্দ মার্গীদের পুড়িয়ে মেরেছিল কারা? মরিচঝাঁপিতে যারা ছিল, তাণ্ডব করেছিল কারা? ডিসি পোর্ট মেহতাকে মেরেছিল কারা? 

ওয়াশিং মেশিন ভাজপা। মহারাষ্ট্রে গেল, সব ক্লিয়ার। সেম হয়েছে মহারাষ্ট্রে সরকার ভাঙা নিয়ে। সেম অরুণাচলে সরকার ভাঙা নিয়ে। সেম ঝাড়খণ্ডে সরকার ভাঙা নিয়ে। আমরা বাঁচিয়ে দিয়েছিলাম। এত টাকা কোথা থেকে পাচ্ছে বিজেপি? কার মারফত টাকা আসছে, তদন্ত চাই? নিরপেক্ষ তদন্ত। কোন এজেন্সি কোন প্লেনে টাকা আনছে? এখানে কেন ইডি-সিবিআই কাজ করবে না? করবে কে? যাদের ওপর দায়িত্ব, তারাই তো নৈতিক দায়িত্বহীনতার কাজ করছে? 

বিজেপির কোনও প্ররোচনার কাছে মাথা নত করবেন না। এখানকার সিপিএম-কংগ্রেসকে দেখে দয়া হয়। কিছ বলব না। দেশে জোটের কথা চলছে। ভেবে কথা বলবেন। এখানে গালাগালি করবেন, পুজোর নৈবেদ্য় দেব না। 

আপনারা জানেন, পঞ্চায়েতে নতুন ঘটনা নয়। এই প্রথম রেকর্ড।  ২ লক্ষ  ৩১ হাজার নমিনেশন জমা পড়েছে। আরও বড় হত, নবজাগরণে শান্তির বার্তা না দেওয়া হত। যেটুকু ঘটেছে, আগামীদিনে চেষ্টা করব, যাতে এটুকুও না ঘটে। এখনও চেষ্টা চলছে। প্রথম থেকেই চাইছিল না ভোট হোক। 

যখন হেরেছেন, হারটা মেনে নিন না। বলুন, মানুষের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আমি তো কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলতে চাই, ২১ জুলাই যে মানুষগুলো বিজেপির আমলে সিপিএমের আমলে মারা গেছেন, সবার জন্য়, দেশের জন্য়, সব শহিদ পরিবারের জন্য় শ্রদ্ধা দিবস পালন করব। 

কাউন্টিংয়ের পর যে ঘটল, না হওয়া উচিত ছিল। কাউকে ছাড়া হবে না। 

ত্রিপুরায় যে অত্য়াচার, একটু যদি প্রচার করেন।

Continues below advertisement

JOIN US ON

Whatsapp
Telegram