দুর্গাপুজো-চিরন্তন বাঙ্গালিয়ানার খাঁটি অনুভূতি, ঐক্যের উৎসবকে উদযাপন শালিমারের
সময়ের থেকে আগে সবাই ভাবতে পারে না। কিন্তু যারা ভাবে এবং সেই কল্পনাকে সঠিক রূপ দিতে পারে, সময় তাদের পুরস্কারে ভরিয়ে দেয়! সময়টা ছিল ২০০০ সালের আশেপাশে, যখন শালিমার কেমিক্যাল ওয়ার্কস তাদের বিজ্ঞাপনে একটু অন্যরকমের ভাবনা চাইছিল। একটি বাঙ্গালী সংস্থা হিসেবে তারা নিজেদের বিজ্ঞাপনে চেয়েছিল বাংলার উৎসব আর সংস্কৃতিরউদযাপন। সেই সূত্রে প্রথমে বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে একটি বিজ্ঞাপনী গান তৈরি করা হয়। আর সেটার সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে পরে শারদোৎসব উপলক্ষ্যে তৈরি হয় দ্বিতীয় একটি বিজ্ঞাপনী গান। বাংলার জল মাটি এবং বাঙ্গালিয়ানার অনুভূতি আবেগকে ঘিরে তৈরি এই দুটো বিজ্ঞাপন আবির্ভাবেই অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছিল। আর সেখান থেকেই শুরু হয় এমন ধারার বাংলা বিজ্ঞাপনের এক নতুন ট্রেন্ড। তার দু দশক বাদে আজ পয়লা বৈশাখকে “বঙ্গ দিবস” ঘোষণার প্রস্তাব শোনা যাচ্ছে এবং বহুজাতিক ব্র্যান্ডরাও বাংলায় পুজোর বিজ্ঞাপন নিয়ে আলাদা ভাবে ভাবছে। সময়ের সেই দূরত্ব পেরিয়ে এসে তখন শালিমার-এর পুজোর বিজ্ঞাপনটি আক্ষরিক অর্থেই হয়ে উঠেছে বাংলার পুজো আন্থেম! ইতিমধ্যে দুবার এই বিজ্ঞাপনের নতুন সংস্করণ হয়েছে। ২০১০ সালে নতুন ভাবে বিজ্ঞাপন তৈরির সময় নতুন ধারার বাংলা আধুনিক গান আর ব্যান্ড সঙ্গীত, দুটোই খুব ট্রেন্ডিং ছিল। তাই সেই সব জনপ্রিয় শিল্পীদের নিয়ে বিজ্ঞাপনটি তৈরি করা হয়। যেখানে শুধু কণ্ঠ নয়, বিজ্ঞাপনের দৃশ্যে শিল্পী হিসেবেও সেই জনপ্রিয় গায়কদের দেখা গিয়েছিল। আবার দশ বছর বাদে ২০২০-তে বিজ্ঞাপনটির নতুন সংস্করণ তৈরির কথা ভাবা হয়। কিন্তু মূলতঃ কোভিড-এর কারণে ভাবনার বাস্তবায়ন ঘটাতে আরও দুবছর দেরী হয়ে গেল। এবারে গ্রাম বাংলার ঘরোয়া পুজোর পরিবেশকে তুলে ধরা হয়েছে বিজ্ঞাপনে। একদম প্রতিমা তৈরির মাটি সংগ্রহের মুহূর্ত থেকে শুরু করে পুজোর নানা মুহূর্তের মধ্যে দিয়ে এগিয়ে চলে কাহিনীর যাত্রা। যার মধ্যে রয়েছে নারী শক্তির উদযাপনও। তাই এবারের স্লোগান “মায়েদের হাতে মায়ের পুজো।” বিজ্ঞাপনের গানের মধ্যে একদিকে প্রাধান্য পেয়েছে বাউল আঙ্গিক। পার্বতী দাস বাউল এই প্রথম বিজ্ঞাপনের গান গাইলেন। আরেক দিকে পণ্ডিত অজয় চক্রবর্তী, ব্যান্ড শিল্পী রূপম ইসলাম এবং সোশ্যাল মিডিয়া ট্রেন্ডিং স্টার অন্তরা নন্দীর কণ্ঠে রেকর্ড করা হয়েছে গানটির ফিউশন ভার্সান। তাই এই বছরে শালিমারের পুজোর বিজ্ঞাপন দুটি আলাদা ভার্সানে আলাদা স্বাদে দেখা যাবে। তবে চিরন্তন বাঙ্গালিয়ানার খাঁটি অনুভূতি যে তাতে একটুও বদলাবে না, সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। কারণ, শালিমার শুদ্ধতারই নামান্তর। আর সেই জন্যই আনন্দ উৎসবে বাংলার ঘরে ঘরে তার উপস্থিতি ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে।