পুকুরে পড়ে যাওয়ার পর উদ্ধার করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার বদলে ঝাড়ফুঁক-তুকতাক! দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলায় মৃত্যু শিশুর

Continues below advertisement
সময় এগোচ্ছে, এগোচ্ছে বিজ্ঞান। কিন্তু কুসংস্কারের অন্ধকার এখনও পুরোপুরি কাটেনি। আড়াই বছর আগের বাসন্তীর ঘটনার পুনরাবৃত্তি এবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলার উত্তর পাতিখালি গ্রামে। আবারও কুসংস্কারের রাক্ষস কেড়ে নিল ৪ বছরের ফুটফুটে শিশুর প্রাণ।
শনিবার সকাল ১১টা নাগাদ খেলতে খেলতে পুকুরে পড়ে যায় চার বছরের ফরিদ সর্দার। সঙ্গে সঙ্গে কয়েকজন গ্রামবাসী ঝাঁপিয়ে পড়েন পুকুরে। শিশুকে উদ্ধারও করা হয়। কিন্তু এ কী! সঙ্গে সঙ্গে চিকিত্‍সকের কাছে না নিয়ে গিয়ে জলে দাঁড়িয়েই শুরু হয় তুকতাক! জলে পড়ে যাওয়া শিশুকে মাথায় তুলে নাচ...!
গ্রামবাসীদের অন্ধবিশ্বাস, পুকুরে না কি জলরাক্ষস রয়েছে। তাই তাকে লাঠি দিয়ে মার। এতে না কি শিশুটি সুস্থ হয়ে উঠবে। এ ভাবেই প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে চলে ঝাড়ফুঁক-তুকতাক! ফুটফুটে ফরিদ ততক্ষণে নিস্তেজ। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যেতে নারাজ তাঁরা। স্থানীয় এক চিকিৎসক গ্রামবাসীদের অনেক বুঝিয়ে-সুজিয়ে শিশুকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। দুপুর দেড়টা নাগাদ বাইকে করে দুই যুবক শিশুটিকে ১০ কিলোমিটার দূরের ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু, শেষরক্ষা হয়নি। চিকিত্‍সকরা বলেন, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে। শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
মালদার গাজোলে যেদিন অন্ধবিশ্বাসের বলি ২ শিশু, ঠিক তার পরই সেখান থেকে ৪০৯ কিলোমিটার দূরে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জীবনতলায় কুসংস্কারের অন্ধকারে হারিয়ে গেল চার বছরের ফুটফুটে আরেক শিশু। কিন্তু, কবে দূর হবে এই কুসংস্কারের অন্ধকার? যুক্তিবাদীরা বলছেন, অন্ধবিশ্বাসের এই অন্ধকার দূর করতে সবার আগে দরকার জনসচেতনতা। কিন্তু তা কি ঠিকমতো হচ্ছে? না কি একাংশের মনে আরও গভীরে শিকড় চালিয়ে দিচ্ছে অন্ধবিশ্বাস? পর পর ২ দিন গাজোল ও জীবনতলার ঘটনা আরও একবার তুলে দিল এইসব প্রশ্ন।
Continues below advertisement

JOIN US ON

Whatsapp
Telegram