Kunal Ghosh : 'বুদ্ধবাবুর ইমেজ সৎ, পরিচ্ছন্ন', লিখেছিলেন কুণাল, এখন তবে কেন উল্টো কথা ?
অসুস্থ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যকে বেলাগাম আক্রমণ করেই চলেছেন কুণাল ঘোষ ( Kunal Ghosh ) । তাঁর দলীয় নেতা-নেত্রীদের মন্তব্য যেখানে সহানুভূতিশীল, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, শতাব্দী রায়, মদন মিত্রর মতো তাবড় নেতানেত্রীরা যেখানে বুদ্ধদেবের ( Buddhadeb Bhattacharjee ) প্রশংসায় পঞ্চমুখ, সেখানে কুণালের মুখে বুদ্ধদেব-আমলে সিপিএমের ( CPM ) সন্ত্রাস-কথা। হালে তিনি বলেছেন, যে আদিখ্যেতা করে তাঁকে অতিমানব বানানো হচ্ছে, তার প্রতিবাদ করছি। তাঁর জমানায় যে সন্ত্রাস গণহত্যা চলেছে, তা এ যুগে মনে করিয়ে দেয়া উচিত। অথচ সেই কুণাল ঘোষই কয়েকবছর আগে প্রকাশিত বইতে বুদ্ধবাবুর অকুণ্ঠ প্রশংসা করেন। সেই বইয়েরই কয়েকটি অংশ 'ঘণ্টাখানেক সঙ্গে সুমন' ( Ghantakhanek Sange Suman ) অনুষ্ঠানে পড়ে শোনান এবিপি আনন্দ-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে ( Suman De ) ।
কী লিখেছিলেন কুণাল ঘোষ ?
কুণাল ঘোষ তাঁর বইতে লেখেন, ' বুদ্ধবাবুর ইমেজ সৎ, পরিচ্ছন্ন। বুদ্ধবাবুর ইমেজ ছিল পরিচ্ছন্ন। কোনও বিতর্কিত ঘটনার কালি ছিল না।' ২০০১ সালের নির্বাচন সম্পর্কে লিখতে গিয়ে কুণাল ঘোষ লিখেছেন, 'মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় V ( ভিকট্রির কথা বলা হচ্ছে ) দেখালেন, কিন্তু বামফ্রন্ট ফিরল বিপুল ভাবে। তার আসল কারণ বুদ্ধবাবু। পরিচ্ছন্ন ইমেজের নতুন মুখ বুদ্ধবাবু। বুদ্ধবাবুর স্লোগান, কৃষি আমাদের ভিত্তি, শিল্প আমাদের ভবিষ্যৎ এটা মোটেই খারাপ ছিল না । বুদ্ধবাবু বাংলায় সময়োপযোগী শিল্প গড়তে চেয়েছিলেন। সেটা মোটেই খারাপ ছিল না। বুদ্ধবাবু বাংলা সম্পর্কে নেতিবাচক ভাবনা পাল্টাতে চেয়েছিলেন। ঠিক করেছিলেন। কী আশ্চর্য আমার অভিজ্ঞতা কিন্তু ভালই। আমার ওঁকে বেশ ভাল লেগে গেছিল এবং অনুভব করতাম উনিও আমাকে পছন্দই করেন। বুদ্ধবাবু ছিমছাম জীবনযাত্রায় আগাগোড়াই ছিলেন। তাঁর কারণে সরকারের খরচও তেমন বাড়েনি। সেসব দিক থেকে বুদ্ধবাবুর সাদা পোশাকে কোনও দাগ নেই। একদিন তাঁর সঠিক মূল্যায়ন হবে । একদিন বাংলার মানুষ নতুন করে ভাববে। আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বুদ্ধবাবুর চিন্তা ভালো ছিল। '
তিনি আরও লেখেন, 'মহাভারতে পড়েছি যুদ্ধক্ষেত্রে তিরে ছিন্নভিন্ন করলেও সন্ধেয় অর্জুন যেতেন শরশয্যায় বিক্ষত পিতামহ ভীষ্মকে প্রণাম করতে। আমি আমার লেখার মধ্যে দিয়েই প্রণাম জানালাম। ব্যক্তি কুণাল, সাংবাদিক কুণাল, হৃদয় উজাড় করে আপনাকে কৃতজ্ঞতা ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছে।'
এই লাইনগুলি কুণাল ঘোষের লেখা বইয়ের। বেশি দিন আগে প্রকাশিত নয়। ২০২২ সালে প্রকাশিত হয়েছে । সত্যিই কি কুণাল ঘোষ আজ যা বলছেন, তা নিজে থেকেই বলছেন ? নাকি তাঁকে দিয়ে বলানো হচ্ছে ? বলানো হলেই বা কে বলাচ্ছে ? প্রশ্নটা উঠছেই।