গুয়াহাটি : অসমে বন্যা পরিস্থিতি (Assam Flood Situation) ভয়াবহ আকার নিয়েছে। এখনও রাজ্যের ১০ জেলায় প্রায় ৩১ হাজার মানুষ বন্যা কবলিত এলাকায় আটকে। এমনই খবর সরকারি সূত্রে। 


এদিকে এই পরিস্থিতিতেই আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে একাধিক জেলায় 'ভারী' থেকে 'অতি ভারী' বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। এই মর্মে 'লাল সতর্কতা' (Red Alert) জারি করা হয়েছে। ফলে, নতুন করে আতঙ্ক দানা বাঁধছে।


বিশেষ এক বুলেটিনে, গুয়াহাটিতে (Guwahati) অবস্থিত IMD-র আঞ্চলিক আবহাওয়া কেন্দ্র থেকে সোমবার থেকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। পরবর্তী দুই দিনে 'কমলা সতর্কতা' জারি করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার 'হলুদ সতর্কতা' (Yellow Alert) জারি করা হয়েছে। 


লাল, কমলা ও হলুদ সতর্কতা কী ?


বন্যা পরিস্থিতির ক্ষেত্রে লাল সতর্কতা তখনই জারি করা হয়, যখন দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। অন্যদিকে, 'কমলা সতর্কতার' ক্ষেত্রে পদক্ষেপের জন্য প্রস্তুত থাকতে হয়। 'হলুদ সতর্কতা' বলতে পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে এবং আপডেট থাকতে বলা হয়। 


অসম রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষের তরফে বন্যা পরিস্থিতি সংক্রান্ত দৈনন্দিন রিপোর্টে বলা হয়েছে, চিরাঙ্গ, দারাঙ্গ, ধেমজি, ধুবরি, ডিব্রুগড়, কোকরাঝাড়, লখিমপুর, নলবাড়ি, সোনিতপুর ও উড়ালগুড়ি জেলায় ৩০ হাজার ৭০০-র বেশি মানুষ বন্যা কবলিত। সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত জেলা লখিমপুর। এখানে ২২ হাজারের বেশি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। এর পরেই রয়েছে ডিব্রুগড়। যেখানে ৩ হাজার ৮০০-র বেশি মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। কোকরাঝাড়ে ১ হাজার ৮০০ মানুষ।


এই পরিস্থিতিতে ৭ জেলায় ২৫টি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র খুলেছে প্রশাসন। কিন্তু, এখন কোনও ত্রাণ শিবির চলছে না। এই মুহূর্তে রাজ্যের প্রায় ৪৪৪টি গ্রাম জলের তলায়। অসমজুড়ে ৪,৭৪১.২৩ হেক্টর জমির শস্য ক্ষতিগ্রস্ত। 


বন্যার জেরে বিশাল ভূমিক্ষয় দেখা গেছে- বিশ্বনাথ, ধুবরি, ডিব্রুগড়, গোলাঘাট, কামরুপ, করিমগঞ্জ, কোকরাঝাড়, লখিমপুর, মাজুলি, মারিগাঁও,নগাঁও, নলবাড়ি, শিবসাগর, সোনিতপুর, দক্ষিণ শালমারা, তামুলপুর ও উড়ালগুড়িতে।


রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অতি বর্ষণে বাঁধ, রাস্তাঘাট, সেতু ও অন্য়ান্য পরিকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সোনিতপুর, নগাঁও, নলবাড়ি, বাকসা, চিরাঙ্গ, দারাঙ্গ, ধেমজি, গোলপাড়া, গোলাঘাট, কামরুপ, কোকরাঝাড়, লখিমপুর, ডিব্রুগড়, করিমগঞ্জ ও উড়ালগুড়ির মতো এলাকায় এই পরিস্থিতি দেখা গেছে। 


এদিকে কামপুর এলাকায় ব্রহ্মপুত্রের উপনদী কোপিলিতে জলস্তর বিপদসীমার উপরে। এমনই খবর পাওয়া যাচ্ছে।