বাংলাদেশ : ইস্তফা দিতে বাধ্য করা হয়েছিল বাংলাদেশের দীপু চন্দ্র দাসকে। তারপর পরিস্থিতি বেগতিক দেখে দীপুকে উন্মত্ত জনতার হাতে তুলে দেন তাঁরই কারখানার ফ্লোর ইন-চার্জ। সম্প্রতি প্রেস বিবৃতিতে এমনটাই জানানো হয়েছে র‍্যাব (Rapid Action Battalion - RAB) - এর তরফে। শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহে সাংবাদিক বৈঠকে এমনটাই জানানো হয়েছে র‍্যাব- এর তরফে। 

Continues below advertisement

বাংলাদেশের হিন্দু যুবক দীপু চন্দ্র দাস। বয়স ২৭ বছর। একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন তিনি। এই শ্রমিকেরই মৃত্যু হয়েছে ময়মনসিনহ জেলার ভালুকাতে। নৃশংস ভাবে হত্যা করা হয়েছে তাঁকে। প্রথমে গণপিটুনি। তারপর অর্ধমৃত অবস্থাতেই গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয় যুবকের শরীর। আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় দীপু চন্দ্র দাসের শরীরে। পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয় যুবককে। ইতিমধ্যেই এই ঘটনায় ১০ জন গ্রেফতার হয়েছে। আর বর্তমানে এই যুবকের মৃত্যুকে একের পর এক বিস্ফোরক তথ্য প্রকাশ্যে আনছে র‍্যাব। সিসিটিভি ফুটেজ এবং ভিডিও খতিয়ে দেখে ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। বাকি ৩ জনকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ। 

অন্যদিকে, প্রথম আলো সূত্রে খবর, শনিবার দুপুর ১টায় (বাংলাদেশের সময়) সাংবাদিক সম্মেলনে র‍্যাব- ১৪ - র ময়মনসিংহের কম্যান্ডার নইমুল হাসান বলেন, 'গত বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টে নাগাদ ওই ঘটনাটি ঘটেছিল। কারখানার ফ্লোর ইন-চার্জ দীপুকে ইস্তফা দিতে বাধ্য করেন এবং তাঁকে তুলে দেন উন্মত্ত জনতার হাতে।' যেহেতু দীপুকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়নি এবং তাঁর নিরাপত্তা বজায় রাখতে কারখানা কর্তৃপক্ষ সক্ষম হয়নি, সেই অভিযোগে কারখানার ২ জন আধিকারিককে গ্রেফতার করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে র‍্যাবের তরফে। 

Continues below advertisement

র‍্যাব- এর তরফে আরও জানানো হয়েছে যে, দীপু ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে কোনও কথা বলেছেন বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা সম্পূর্ণ ভুয়ো। এই বিষয়ে তারা তদন্তও করেছে। কিন্তু কেউ পরিষ্কার ভাবে কিছু বলতে পারেনি। দীপু দাসের সঙ্গে আগে কারও কোনও শত্রুতা ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে র‍্যাব- এর তরফে। কার সঙ্গে সেদিন ঘটনার সূত্রপাত হয়েছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয় বলেই জানিয়েছে র‍্যাব। এর পাশাপাশি র‍্যাব- এর তরফে আরও জানানো হয়েছে যে ঘটনার দিন কারখানার ভিতরে একটি বিতর্ক শুরু হয়েছিল। সেই সময় কাজ চলছিল কারখানায়। এই পরিস্থিতিতে দীপুকে কারখানার ভিতরে নিরাপদে রাখা কোনও ভাবেই সম্ভব ছিল না। ইতিমধ্যেই কিছু অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে ভিডিও ফুটেজ দেখে। কেন এই ঘটনা ঘটল, দ্রুত সেই কারণ প্রকাশ্যে আনতে চাইছে র‍্যাব। এর সঙ্গে যুক্ত সকলকে গ্রেফতার করা হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে র‍্যাবের তরফে। অভিযুক্তদের হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে আরও তথ্য প্রকাশ্যে আসবে বলে জানিয়েছে র‍্যাব কর্তৃপক্ষ। 

তথ্যসূত্র- প্রথম আলো এবং দ্য ডেলি স্টার (বাংলাদেশের সংবাদপত্র)