বাংলাদেশ : প্রথমে বেধড়ক মার। তারপর অর্ধমৃত অবস্থায় আগুনে পুড়িয়ে মেরে ফেলা হয়েছে বাংলাদেশের এক হিন্দু যুবককে। দীপু চন্দ্র দাসের সঙ্গে ঘটে যাওয়া নৃশংস ঘটনার কথা এখন সারা বিশ্ব জানে। ইতিমধ্যেই এই যুবকের মৃত্যুর কেন হয়েছে, তা নিয়ে একাধিক কারণ প্রকাশ্যে এসেছে। প্রাথমিক ভাবে 'ধর্মীয়' কারণে এই যুবকের মৃত্যু হয়েছে, এমনও শোনা গিয়েছে। তবে বাংলাদেশের সংবাদপত্র 'ডেলি স্টার' সূত্রে খবর, সম্প্রতি র্যাব (RAB)- এর তরফে জানানো হয়েছে যে, দীপু দাস ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে কোনও মন্তব্য করেছেন, এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। ময়মনসিংহের ভালুকায় গণপিটুনির পর আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে দীপু চন্দ্র দাসকে। এই যুবক ছিলেন একটি পোশাক কারখানার শ্রমিক। তাঁর মৃত্যুর পর প্রথমে শোনা গিয়েছিল, সোশ্যাল মিডিয়ায় তিনি নাকি ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে (ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে) আপত্তিকর মন্তব্য করেছিলেন। এই প্রসঙ্গেই র্যাব (RAB) - এর তরফে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে, দীপু দাস ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে কোনও মন্তব্য করেছেন বলে সরাসরি কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
অভিযোগ উঠেছিল, দীপু চন্দ্র দাস ফেসবুকে ইসলাম ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর কথা লিখেছেন। যদিও Rab-14- র ময়মনসিংহের কোম্পানি কম্যান্ডার মহম্মদ সামসুজ্জামান দ্য ডেলি স্টার- কে জানিয়েছেন, এমন কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি যা এই দিকে নির্দেশ করে যে, মৃত যুবক ফেসবুকে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে কিছু লিখেছিলেন। কম্যান্ডার আরও জানিয়েছেন, স্থানীয় বাসিন্দারা এবং ওই পোশাক কারখানা যেখানে দীপু কাজ করতেন, সেখানকার অন্যান্য শ্রমিকরাও এই ধরনের কোনও কাজ দীপু করেছিলেন, সেই ব্যাপারে কিছু ইঙ্গিত করেননি। কম্যান্ডার সামসুজ্জামানের কথায়, 'সকলেই এখন বলছেন, কেউই ব্যক্তিগত ভাবে দীপুকে ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত করে কিছু বলতে শোনেননি। এমন কোনও লোককে পাওয়া যায়নি, যিনি দাবি করেছেন যে, ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে দীপু কিছু বলেছেন, এমন কিছু তিনি দেখেছেন বা শুনেছেন।'
দীপু চন্দ্র দাসকে নৃশংস ভাবে হত্যা করার ঘটনায় ১০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। ঘটনার দিন উন্মত্ত জনতা প্রথমে পিটিয়ে আধমড়া করে দিয়েছিল বছর ২৭- এর ওই যুবককে। তারপর রাস্তার পাশে থাকা গাছে টাঙিয়ে দেওয়া হয়েছিল যুবকের গুরুতর চোট পাওয়া শরীরটাকে। এরপর বেঁচে থাকা অবস্থাতেই আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় যুবকের গায়ে। পুড়িয়ে মারা হয় দীপু চন্দ্র দাসকে। আশপাশে তখন উল্লাস করে গোটা ঘটনার ভিডিও তুলছিল উন্মত্ত জনতার একাংশ। সেই নৃশংস ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়।
তথ্যসূত্র- দ্য ডেলি স্টার (বাংলাদেশের সংবাদপত্র)