কলকাতা: পূর্বাভাস ছিল আগে থেকেই। সেই মতোই সমুদ্র থেকে স্থলভূমিতে প্রবেশ (Cyclone Mocha)। মায়ানমারে (Myanmar) ঘূর্ণিঝড় 'মোকা'র ল্যান্ডফল শুরু। মায়ানমারের সিতওে বন্দরে দাপট দেখাতে শুরু করেছে ঘূর্ণিঝড় 'মোকা'। প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বাংলাদেশ (Bangladesh) উপকূলেও। কক্সবাজারে উত্তাল হয়ে উঠেছে সমুদ্র। দুই দেশেই উপকূলবর্তী এলাকা খালি করে দেওয়া হয়েছে আগেভাগে। সতর্কতা জারি হয়েছে কক্সবাজার মহেশখালি, টেকনাফ, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে (Cyclone Alert)।


ঘূর্ণিঝড় 'মোকা'কে আপাতত বিপর্যয়ের নিরিখে পঞ্চম পর্যায়ে হয়েছে। এর প্রভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সতর্কতা জারি হয়েছে দুই দেশে। ঝড়ের গতিবেগ ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার পর্যন্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তার প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উপকূল এলাকায় বন্যা পরিস্থিতিও দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহবিদরা। বিশেষ করে, বাংলাদেশের কক্সবাজারে, যেখানে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী শিবির গড়ে উঠেছে, প্রায় ১০ লক্ষ রোহিঙ্গা মানুষের আশ্রয় যে জায়গা, সেখানে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা। ১৫০০ আশ্রয়স্থল গড়ে তোলা হয়েছে, যাতে দুর্গরা ঠাঁই নিতে পারেন।


এখনও পর্যন্ত যে তথ্য পাওয়া গিয়েছে, সেই অনুযায়ী, ঢেউয়ের উচ্চতা হতে পারে চার মিটার। উপকূল অঞ্চলের গ্রামগুলি তাতে জলের নীচে চলে যেতে পারে বলে আশঙ্কা।  বিগত দুই দশকে যত ঘূর্ণিঝড় নেমে এসেছে, বাংলাদেশের জন্য 'মোকা' সবচেয়ে বিধ্বংসী প্রতিপন্ন হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন আবহবিদরা। তাই আগাম বিপদের আঁচ পেয়ে, এখনও পর্যন্ত ৫ লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেখানে।



বাংলাদেশ আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, ঝড়ের গতিবেগ ঘূর্ণিঝড়ের একেবারে কেন্দ্রে বাতাসের গতি ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার। ঘণ্টায় ২১৫ কিলোমিটার হতে পারে ঝোড়ো হাওয়ার গতিবেগ। ইতিমধ্যেই চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার বিমানবন্দরে বিমানের ওঠনমা বন্ধ রাখা হয়েছে। সমুদ্রে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের। শুক্রবার রাত থেকেই নোকা চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে। 


আরও পড়ুন: Cyclone Mocha: 'মোকা' এখন সুপার সাইক্লোন, কোথায় আছড়ে পড়বে ঘূর্ণিঝড়?



ঘূর্ণিঝড় 'মোকা'র প্রভাবে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির আশঙ্কাও করা হচ্ছে। তার জেরে জায়গায় জায়গায় ধসও নামতে পারে বলে অনুমান করছেন সকলে। ধস নামতে পারে কক্সবাজার, বান্দরবন, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি এবং চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায়। বাংলাদেশে রবি ও সোমবার শিক্ষাবোর্ডের যে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল, তাও আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। উপকূল সংলগ্ন সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও বন্ধ। 


বাংলাদেশ আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রভাব পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড় 'মোকা'র। তবে বাংলাদেশের উপর ঘূর্ণিঝড়ের অর্ধেক অংশ থাকায়, সিডরের মতো ততটাও বিপর্যয় নেমে আসবে না বলে আশা করছেন আবহবিদরা।