Tax Implications on Gold Sale: সোনা বহু বছর ধরেই ভারতীয় পরিবারের ঐতিহ্য, সমৃদ্ধি এবং আর্থিক নিরাপত্তার প্রতীক হয়ে এসেছে। প্রায়ই বংশ পরম্পরায়, বংশানুক্রমিকভাবে পারিবারিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে এই সোনাকে গ্রহণ করা হয়েছে। বাবা-মা, দাদু-ঠাকুমারা বিয়ে বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে উপহার হিসেবে দিয়ে থাকেন সোনার গয়না। বিয়েতে বাবা-মায়ের কাছ থেকে, আত্মীয়-পরিজনদের কাছ থেকে সোনার গয়না পেয়ে থাকে মেয়েরা। যদি এই উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া এই সোনা বিক্রি করার প্রয়োজন হয় কখনও, তখন কত টাকা কর দিতে হবে আপনি জানেন কী ? উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সোনা বিক্রি করার সময়ে কত কর প্রযোজ্য হবে তা আগাম জেনে রাখা জরুরি।

উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সোনা কি করযোগ্য ?

এক শব্দে উত্তর হল হ্যাঁ। উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সোনা বিক্রি করতে গেলে কর দিতে হবে। ভারতের আয়কর আইন অনুসারে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সোনাকে মূলধন সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অর্থাৎ এই মূলধন সম্পদ বিক্রি করলে এর মুনাফার উপরে আপনাকে কর দিতে হবে যাকে বলা হয় ক্যাপিটাল গেন ট্যাক্স। এই উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া সোনার একটি অনন্য দিক হল করের ক্ষেত্রে আসল মূল্য যে সময় কেনা হয়েছিল সেই সময়ের নিরিখেই গণনা করা হয়।

যেমন ধরে নেওয়া যাক আপনার ঠাকুমা ১৯৮১ সালে যদি কোনও সোনা কিনে থাকেন আর আপনি যদি আপনার বিবাহের সময় তা পেয়ে থাকেন তাহলে ক্যাপিটাল গেন গণনা করার জন্য ১৯৮১ সালের দাম ও ক্রয়ের তারিখ ব্যবহার করা হবে। অর্থাৎ সেই সোনা আপনি কবে পেয়েছেন তা গ্রাহ্য হবে না, প্রাধান্য পাবে সেই সোনার মূল মালিকের ক্রয়ের তারিখ।

২০০১ সালের আগে কেনা সোনায় রয়েছে সুবিধে

যদি এই সোনা মূলত ১ এপ্রিল ২০০১ সালের আগে কেনা হয়ে থাকে তাহলে আপনার কাছে প্রকৃত ক্রয় মূল্যের বদলে ১ এপ্রিল ২০০১ তারিখের ন্যায্য বাজার মূল্য ব্যবহার করার বিকল্প রয়েছে। এটি প্রায়ই সুবিধেজনক হয় বিক্রেতার দিক থেকে। ঐতিহাসিক রেকর্ড বা কবে সোনা কেনা হয়েছে তার প্রমাণাদি না থাকলে এই পদ্ধতিতে অনেক সুবিধে হয় এবং সোনার ক্যাপিটাল গেনও খানিক কম ধরা হয়, ফলে কর কম দিতে হয়।

স্বল্পমেয়াদী বনাম দীর্ঘমেয়াদী ক্যাপিটাল গেন

৩৬ মাসের বেশি সময় ধরে রাখা সোনাকে দীর্ঘমেয়াদী সম্পদ বলে বিবেচনা করা হয়। ২০২৪ সালের ফিনান্স অ্যাক্টের পরে যদিও এই সীমা কমিয়ে ২৪ মাস করা হয়েছে। আর তাই এখন ২৪ মাস পরে সোনা বিক্রি করলে তাতে ১২.৫ শতাংশ লং টার্ম ক্যাপিটাল গেইন ট্যাক্স ধার্য হবে এবং ২৪ মাসের মধ্যে সেই সোনা বিক্রি করলে আপনার আয়কর স্ল্যাবের মধ্যেই এটি অতিরিক্ত আয় হিসেবে ধার্য করা হবে।

আপনার কাছে উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সোনার রেকর্ড না থাকলে কী করবেন

এক্ষেত্রে দুটি সহজ সমাধান রয়েছে। প্রথমত একজন সার্টিফায়েড স্বর্ণকারের কাছ থেকে সেই সোনার একটি ভ্যালুয়েশন সার্টিফিকেট করিয়ে রাখা যায়। অথবা স্থানীয় জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক প্রকাশিত ঐতিহাসিক সোনার দাম ব্যবহার করা যায়। কর গণনার সময় এই নথিগুলিই বৈধ প্রমাণ হিসেবে ধরা হয়।