LinkedIn Online Network: কর্মক্ষেত্রে আবেগের আদানপ্রদানের ফলে উৎপাদনশীলতার পাশাপাশি বাড়ে আত্মবিশ্বাস। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় উঠে এসেছে এই তথ্য। ২১৮৮ জন ভারতীয় পেশাদারের ওপর সমীক্ষা চালিয়ে এই তথ্য প্রকাশ করেছে অনলাইন প্রফেশনাল নেটওয়ার্ক লিঙ্কডইন (LinkedIn)। যেখানে ৮৭ শতাংশ ভারতীয় পেশাদার কর্মক্ষেত্রে আবেগের গুরুত্বের কথা স্বীকার করেছেন। 


LinkedIn Update: সমীক্ষায় উঠেছে এসেছে এই চিত্র
সমীক্ষায় দেখা গেছে, ভারতে প্রতি ৪ জনের মধ্যে ৩ জন (৭৬ শতাংশ) পেশাদার কোভিড পরবর্তী সময়ে কর্মক্ষেত্রে আবেগ প্রকাশ করতে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেছেন। এই পরিবর্তন লিঙ্কডইনেও প্রতিফলিত হয়েছে। যেখানে দেখা দেখা গিয়েছে, এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মে 'পাবলিক কনভারসেশন' বেড়েছে ২৮ শতাংশ।


LinkedIn Online Network: পেশাদারদের ভাল কাজের রহস্য লুকিয়ে এখানে   
প্রতিবেদন বলছে, কর্মক্ষেত্রে আবেগ ভাগ করার ফলে এই হাইব্রিড কাজের জগতে কর্মীদের মনোবল বাড়ে। সঙ্গে কোম্পানির উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে আবেগের আদানপ্রদান। প্রায় ১০ জনের মধ্যে ৯ জন (৮৭ শতাংশ) এই বিষয়ে একমত। তাদের মতে, কাজের জায়গায় মনের ভাব ভাগ করে নিলে সবার সঙ্গে আত্মীয়তার পরিবেশ তৈরি হয়, যা ভাল অনুভূতি জাগায়।


LinkedIn Update: আবেগ এখন 'পেশাদারিত্বের' অঙ্গ
ভারতের কর্মক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বেশিরভাগ কর্মীরা তাদের আবেগকে ধরে রাখেন না। বরং আরও ভাবুক হয়ে পড়েন। রিপোর্ট বলছে, প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ (৬৩ শতাংশ) তাদের বসের সামনে কান্নার কথা স্বীকার করেছেন। এক তৃতীয়াংশ (৩২ শতাংশ) জানিয়েছেন, তাঁরা একাধিক সময় বসের সামনে কেঁদেছেন।


LinkedIn Online Network: আবেগ প্রকাশেও আছে সমস্যা
তবে সব আবেগের আদানপ্রদানে সুখকর অনুভূতি হবে এমনটা নয়। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ভারতে ১০ জনের মধ্যে ৭ (৭০ শতাংশ) পেশাদার বিশ্বাস করেন, কর্মক্ষেত্রে আবেগ বা অনুভূতি ভাগ করলে পরবর্তীকালে সমস্যা তৈরি হয়। এই কারণে, ভারতের এক চতুর্থাংশ কর্মী (২৭ শতাংশ) এখনও বিষয়টিকে দুর্বলতার চোখে দেখেন। কর্মক্ষেত্রে আবগের বহিপ্রকাশ বিষয়টি ২৫ শতাংশের কাছে অ-পেশাদারিত্বের পরিচয়।


LinkedIn Update: বেশি ক্ষতি হচ্ছে মহিলাদের ?
রিপোর্ট বলছে, এই মনের ভাব প্রকাশের ফলে মহিলারা কর্মক্ষেত্রে বেশি ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। ভারতে প্রায় ৫ জনের মধ্যে ৪ জন (৭৯ শতাংশ) পেশাদার একমত যে, নারীরা কর্মক্ষেত্রে আবেগ ভাগ নিলে তাঁদের পুরুষদের থেকে বেশি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।


LinkedIn Online Network: যুব প্রজন্মও কর্মক্ষেত্রে ভাব প্রকাশের পক্ষে
সমীক্ষার দিকে থাকলে দেখা যাবে, কাজের জায়গায় আবেগ ভাগ করার পক্ষপাতী জেনারেশন জেড (৭৩ শতাংশ) ও মিলেনিয়ালস (৭৯ শতাংশ)। এরা কর্মক্ষেত্রে আবেগ ভাগ করে নেওয়ার ক্ষেত্রে বেশি স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। সেই তুলনায় মাত্র ২০ শতাংশ ৫৮-৬০ বছর বয়সীরা কর্মক্ষেত্রে নিজেদের প্রকাশ করতে পারেন।


LinkedIn Update: ভারতে ৫ জনের মধ্যে ৩ জন কর্মী কর্মক্ষেত্রে হাসির পরিবেশ চান
ভারতের তিন-চতুর্থাংশেরও বেশি (৭৬ শতাংশ) পেশাদাররা বিশ্বাস করেন, কাজের জায়গায় " রসিকতা" অফিস সংস্কৃতির জন্য ভাল। তবে অর্ধেকেরও বেশি (৫৬ শতাংশ) এই হাসি তামাশাকে 'অপেশাদার' বলে মনে করেন। এই মিশ্র অনুভূতি সত্ত্বেও ভারতে ১০ জনের মধ্যে ৯ জন (৯০ শতাংশ) কর্মী মনে করেন, কর্মক্ষেত্রে রসিকতা সবথেকে কম দেখা যায়। প্রকৃতপক্ষে, ৫ জনের মধ্যে ৩ জনেরও বেশি (৬১ শতাংশ) কর্মী কর্মক্ষেত্রে আরও হাসি-আনন্দের পরিবেশ চান।


LinkedIn Online Network: দক্ষিণে কাজের জায়গায় রসিকতা বেশি 
সামগ্রিকভাবে দেখলে দক্ষিণ ভারতের কর্মীরা দেশে সবচেয়ে বেশি রসিকতা করে। যেখানে ৫ জনের মধ্যে ২ জন (৪৩ শতাংশ) দিনে অন্তত একবার রসিকতা বা হাসিতামাশায় আনন্দ উপভোগ করেন। এরপরে রয়েছে পশ্চিমের কর্মীরা (৩৮ শতাংশ), পূর্বের ক্ষেত্রে এই নম্বরটা (৩৭ শতাংশ) , উত্তরে (৩৬ শতাংশ) ও উত্তর-পূর্ব (৩৩ শতাংশ) পেশাদার কর্মক্ষেত্রে রসিকতা উপভোগ করেন।


LinkedIn Update: রসিক কর্মীর তালিকায় শীর্ষে ভারত, ইতালি 
বিশ্বের রসিক কর্মীদের সমীক্ষায় সবার ওপরে রয়েছে ভারত ও ইতালির নাম। এই দুই দেশের কর্মীরা কর্মক্ষেত্রে তৃতীয়াংশেরও বেশি (৩৮ শতাংশ) দিনে অন্তত একবার হাসির কিছু করেন। রসিক কর্মীদের তুলনামূলক বিচারে অস্ট্রেলিয়ার কর্মীরা (২৯ শতাংশ) সবথেকে পিছিয়ে রয়েছেন। সেই তুলনায় জার্মান (৩৬ শতাংশ), ব্রিটিশ (৩৪ শতাংশ), ডাচ (৩৩ শতাংশ) ,ফরাসি (৩২ শতাংশ) রসিক কর্মী বলে বিবেচিত হন। 


LinkedIn-এর উদ্যোগ 
বিশ্বের কাজের জগতের পরিবর্তনের কথা মাথায় রেখে মজার প্রতিক্রিয়া দেওয়ার একটা প্লাটফর্ম তৈরি করেছে LinkedIn। এটি সদস্যদের পোস্ট ও আর্টিকেলগুলিতে তাদের মজার অনুভূতি প্রকাশ করতে সাহায্য করে। ২০১৯ সালে লিঙ্কডইন এই মজার প্রতিক্রিয়া দেওয়ার বৈশিষ্ট্য এনেছিল। আজ থেকে বিশ্বব্যাপী LinkedIn সেই 'funny reaction'-এর যাত্রা শুরু করল।


LinkedIn Update: কী বলছে কোম্পানি ?
LinkedIn ভারতের কান্ট্রি ম্যানেজার আশুতোষ গুপ্ত বলেছেন, “গত দু-বছর বলতে গেলে পরিবেশে অস্থিরতা ছিল। এখন মানুষ বুঝতে পারছে, কর্মক্ষেত্রে একে অপরের সঙ্গে আরও বেশি আন্তরিক হওয়া প্রযোজন। এটি লিঙ্কডইন-এ আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে, যেখানে লোকজন কেবল দোকানের কথা বলে না, বরং কাজ সামলে কীভাবে নিজেদের যত্ন নেওয়া যায় তা প্রকাশ করে। এই 'funny reaction' আমাদের সদস্যদের সর্বাধিক অনুরোধ করা বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি। ফানি রিয়্যাকশনের হাসির ইমোজি কর্মক্ষেত্রে ও লিঙ্কডইন-এ সদস্যদের হাস্যকর দিকগুলি কীভাবে তুলে ধরবে, এখন তা ভেবেই আমরা উত্তেজিত।'' 


আরও পড়ুন : Agniveer Recruitment 2022: বিতর্ক অতীত ! অগ্নিবীর হতে ভারতীয় বায়ুসেনায় ৫৭,০০০ আবেদন, দরখাস্তের শেষ তারিখ জানেন ?