Airtel BLACK Launch: মহামারী ও লকডাউনের প্রভাব থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসছে বিশ্ব। তবে 'নিউ নরমাল' বর্তমান পৃথিবীতে নতুন জায়গা তৈরি করেছে। আমরা জানি, জীবন এখন আর আগের মতো স্বাভাবিক হবে না। তবে কঠিন সময়ে প্রযুক্তি আমাদের সবথেকে কাছের বলে প্রমাণিত হয়েছে। এই প্রযুক্তির কারণে মানুষ কেবল তার কাজ ও পড়াশোনার পদ্ধতিতে বদল আনেনি, তারা তাদের পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গেও জুড়ে থেকেছে।এত অল্প সময়ের মধ্যে এত বড় পরিমাণে ভার্চুয়াল স্পেসে স্থানান্তর মানুষের পক্ষে সহজ ছিল না। ভাল যোগাযোগ ব্যবস্থা ও দুর্দান্ত হার্ডওয়্যার এই পথকে গ্রাহকদের কাছে সহজ করে তুলেছে। গত এক বছরে এমন কোন ট্রেন্ড ছিল, যার মাধ্যমে মানুষ 'নিউ নর্মাল'-এর দিকে যেতে পেরেছে ?

হাইব্রিড ওয়ার্কিং সলিউশন

লকডাউনের বিধিনিষেধের কারণে বেশিরভাগ সংস্থাগুলি কেবল বাড়িতে থেকে কাজ করেছে। যার অর্থ দাঁড়ায়, আপনাকে একই জায়গায় থাকতে ও কাজ করতে হবে। সেই সময় বাড়িতে ডেস্কের জায়গা ট্র্যাডিশনাল কাজের জায়গায় রূপান্তরিত হয়েছে। যদিও ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে এই প্ল্যাটফর্মগুলি নিশ্চিত করে যে, এইভাবেও একজোট হয়ে কাজ করা সম্ভব। শুধু তাই নয়, এই পদ্ধতিতে কাজ করে নতুন কৌশল ও ভাবনার সৃষ্টি করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। বাড়ি থেকে কাজের এই পরিসরের কথা মাথায় রেখে অনেক কোম্পানি গ্রাহকদের আরও ভাল পরিষেবা দেওয়া শুরু করে। যেমন আমরা দেখতে পাই এয়ারটেলের নতুন অফার এয়ারটেল ব্ল্যাক।

এই অফারে ডিটিএইচ, পোস্টপেইড ও ফাইবার সংযোগগুলিকে একটি বিলের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। এরফলে একাধিক বিল শোধের বোঝা হ্রাস হয়। এই অফারের মাধ্যমে কোম্পানি গ্রাহকদের জন্য একটি ডেডিকেটেড রিলেশনশিপ ম্যানেজার টিম দেয়। এই টিম অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সমস্যাগুলি সমাধানের চেষ্টা করে। এইভাবে সব সমস্যা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ঠিক করার চেষ্টা করা হয়।যার কারণে সমস্যা মেটাতে কম সময় লাগে। শুধু তাই নয়, গ্রাহকদের কোনও অতিরিক্ত খরচ ছাড়াই ওয়েবসাইট ও থ্যাঙ্কস অ্যাপের মাধ্যমে এয়ারটেল ব্ল্যাক প্ল্যানে যোগ দেওয়ার সুবিধা দেওয়া হয়। 

ঝঞ্ঝাটমুক্ত ডিজিটালাইজেশনলকডাউনের বিধিনিষেধ গ্রাহকদের ঘরের জিনিস ও ওষুধ কেনার সহজ বিকল্প বেছে নিতে বাধ্য করেছে। সেই কারণে ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম, সুপারমার্কেট, ডেলিভারি অ্যাপের চাহিদা অনেক বেড়ে গিয়েছে। মানুষের অভ্যাসের পরিবর্তনের কারণে ব্যবসার মডেল অনলাইনের দিকে চলে গিয়েছে। সেই কারণে স্থানীয় মুদি দোকানগুলিও ই-স্টোরের মতো সেটআপে যোগ দিতে শুরু করেছে। এর সাথে ডিজিটাল পেমেন্ট, নেট ব্যাঙ্কিং ও ইউপিআই সহজতর হওয়ায় মানুষের প্রয়োজনীয়তার মধ্যে ঢুকে পড়েছে। দেখে মনে হচ্ছে না, যে এই মডেল শীঘ্রই পরিবর্তন হবে।

সামাজিক দূরত্বের যুগে দূরবর্তী স্বাস্থ্য পরিষেবা 

মহামারীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা সামনে থেকেছেন। ভিডিও কল ও টেলিফোন হাসপাতালের অতিরিক্ত বোঝা কমাতে সাহায্য করেছে। অনলাইনে পরামর্শ ও ওষুধ সরবরাহের মাধ্যমে মানুষের চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও সহজতর হয়ে উঠেছে।এই পদ্ধতি রোগী ও ডাক্তার উভয়ের জন্যই নিরাপদ বলে প্রমাণিত হয়েছে।

বাড়িতে বিনোদনের বিকল্পএরকম একটা সময়ে বাইরে গিয়ে সিনেমা দেখা অসম্ভব হয়ে পড়ে। সেই কারণে ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলি নতুন বিষয়বস্তু এনে তাদের দর্শক বাড়ানোর সুযোগ পেয়েছে। প্রযুক্তির উন্নতির সঙ্গে সঙ্গে নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম, হটস্টারের মতো স্ট্রিমিং প্লাটফর্মগুলি বিপুল সংখ্যক লোককে তাদের কনটেন্ট ডাউনলোড ও স্ট্রিমিংয়ের ব্যবস্থা করেছে। অনলাইন গেমিংয়ের জগতেও ব্যাপক বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। ভারতে অনলাইন গেমিংয়ের গড় সময় ঘণ্টায় ২.৫ থেকে বেড়ে ৪.১ হয়েছে। এই বৃদ্ধির জন্য ধন্যবাদ জানাতে হয়, ভাল স্মার্টফোন ও ভাল গতির ইন্টারনেট পরিষেবাকে। আাগামী দিনেও এই ক্ষেত্রটি আরও বৃদ্ধি পাবে। 

এই মহামারী কোটি-কোটি স্কুলশিশুকে বাড়িতে বন্দি থাকতে বাধ্য করেছে। তবে যাদের কাছে ভাল ইন্টারনেট কানেকশন ও হার্ডওয়্যার ছিল তারা বাড়িতে অনলাইনে পড়াশোনা করতে পেরেছে। এই সময়ে শিক্ষা সম্পর্কিত টেক প্লাটফর্মগুলির চাহিদা বেড়েছে। ভার্চুয়াল ক্লাসের মাধ্যমে  জ্ঞান ছড়িয়ে দেওয়ার নতুন রাস্তা তৈরি করেছে প্লাটফর্মগুলি। অনলাইন সিস্টেমের উপর ক্রমবর্ধমান নির্ভরতা মানুষের মনে নতুন ধারণার জন্ম দিয়েছে। কেউ জানে না কতদিন অনলাইন পদ্ধতিতে এই শিক্ষাদান চলবে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা ভাল বিকল্প হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্র হোক বা প্রতিভার উদ্ভাবন সবেতেই কাজে লেগেছে এই পদ্ধতি। গত ২০ মাস ধরে এই ট্রেন্ডগুলি খুবই দ্রুত উঠে এসেছে। আগামী বহুদিন ধরে এই ট্রেড বা প্রযুক্তি নির্ভর প্রবণতা বজায় থাকবে। তবে এটা দেখতে হবে, এই ট্রেন্ডগুলির সঙ্গে আগামী দিনে আরও কী ট্রেন্ড যোগ দেয় ও আমরা কত দ্রুত সেগুলির সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারি।