নয়াদিল্লি : তৃতীয়বার কেন্দ্রে সরকার গড়তে গিয়ে এবার বিজেপিকে নির্ভর করতে হয়েছে শরিকদের উপর। তাই প্রথম থেকেই জল্পনা ছিল এবার মোদি সরকার তাঁর শরিক দলগুলির আবদার মেটাবে উজাড় করেই। হলও ঠিক তাই। বিহারে নীতীশ কুমারের জেডিইউ এবং অন্ধ্রপ্রদেশে চন্দ্রবাবু নায়ডুর টিডিপির কথা ভেবে দুই রাজ্যে হাত উপুড় করে দিল মোদি সরকার। দুই গুরুত্বপূর্ণ শরিক দলের রাজ্যের জন্য কল্পতরু হলেন অর্থমন্ত্রী সীতারমণ। 


বিহারের বিভিন্ন সড়ক প্রকল্পের জন্য মোট ২৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী। এছাড়া, বিশেষ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হল অন্ধ্রপ্রদেশকে। নির্মলার ঘোষণা, চলতি অর্থবর্ষে অতিরিক্ত ১৫ হাজার কোটি টাকা পাবে চন্দ্রবাবুর রাজ্য। অমরাবতীতে নতুন রাজধানী নির্মাণের এই বরাদ্দ বলে ঘোষণা করলেন অর্থমন্ত্রী।  এছাড়াও অন্ধ্রপ্রদেশের গ্রামোন্নয়নে বরাদ্দ করা হল ২.৬৬ লক্ষ কোটি টাকা। 


লোকসভা ভোটে বাংলা থেকে কাঙ্খিত আসন না পেলেও  বাজেটে এ রাজ্যের জন্য কলকাতা-অমৃতসর বাণিজ্য সড়ক তৈরি হবে বলে জানালেন অর্থমন্ত্রী। এছাড়া দেশের পূর্ব দিকের চার রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, অন্ধপ্রদেশ এবং‌ বিহারের উন্নতিতে বিশেষ জোর দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করলেন নির্মলা। এবার ওড়িশার মানুষ বেছে নিয়েছে বিজেপিকে। 


এছাড়া, অর্থমন্ত্রী ঘোষণা করলেন, বিহারে ৪টি এক্সপ্রেসওয়ে ও ব্রিজ তৈরিতে ২৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণে ঢালাও বরাদ্দ করা হল  বিহারের জন্য। কিন্তু বাংলার প্রতিবেশী রাজ্য বাংলার জন্য এই খাতে কোনও কিছুই ঘোষণা করা হল না।  কেন্দ্রীয় বাজেটে বিহারের পর্যটনেও বিশেষ নজর দেওয়া হল। বিহারে হাইওয়ের জন্য ২৬ হাজার কোটি বরাদ্দ করার পাশাপাশি ২১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য । বিহারে নতুন বিমানবন্দর, মেডিক্যাল কলেজও তৈরি হবে বলে ঘোষণা করা হল। এছাড়াও পাটনা-পূর্ণিয়া এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করবে কেন্দ্র , ঘোষণা করলেন সীতারমণ।  


আরও পড়ুন :


আয়কর কাঠামোয় বিরাট পরিবর্তন, বাড়ানো হল স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন, কাদের কত আয়কর দিতে হবে ? 


এই বাজেটে বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশকে ঢেলে দেওয়া হয়েছে। বাজেট বক্তৃতার পরই তৃণমূল কংগ্রেস এই নিয়ে আক্রমণ করে কেন্দ্রকে। এই বাজেটকে Andhra-Bihar Budget বলে কটাক্ষ করা হয় অল ইন্ডিয়া তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকেও। কুণাল ঘোষ আলাদা ভাবে ট্যুইটে লেখেন, 'কেন্দ্রীয় বাজেট নয়। এটা কুর্সি রাখতে অন্ধ্র ও বিহারকে তোষণের বাজেট। বাংলাকে আবার বঞ্চনা। অথচ বাংলার কিছু কাজকে নকল করার চেষ্টা। দেশের মূল সমস্যাগুলির সমাধানের দিশা নেই। শব্দ আর সংখ্যার জাগলারিতে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা। কেন্দ্রের আর্থিক ও রাজনৈতিক দেউলিয়ার প্রতিফলন।'