নয়াদিল্লি: আগামীকাল সংসদে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করবেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তার আগে এদিন আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্ট পেশ করেছেন অর্থমন্ত্রী। সমীক্ষা রিপোর্টে সরকার করোনা অতিমারীর ধাক্কা মোকাবিলায় গৃহীত বারবেল স্ট্যাটেজি (Barbell Strategy)সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিয়েছে। গত বছরের আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্টেও বারবেল স্ট্র্যাটেজির উল্লেখ করা হয়েছিল।
করোনার ধাক্কা মোকাবিলায় সারা বিশ্বেই চিরাচরিত ওয়াটারফল মেথড দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণ করেছিল। এই দৃষ্টিভঙ্গী থেকে সরে নরেন্দ্র মোদি সরকার কীভাবে করোনা অতিমারীর প্রভাবে আর্থিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বারবেল স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করেছিল, তার ব্যাখ্যা আর্থিক সমীক্ষা রিপোর্টে দেওয়া হয়েছে।
সমীক্ষায় বলা হয়েছে, চরিত্র বদল করে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ফিরে এসে বারবারই নতুন নতুন ঢেউ তৈরি করেছিল। ফলে জারি করতে হয় যাতায়াতের ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ। সরবরাহ সংক্রান্ত শৃঙ্খল বিঘ্নিত হয়ে পড়ে এবং বিশ্বজুড়েই মুদ্রাস্ফীতি দেখা দেয়। এতে সারা বিশ্বেই নীতি নির্ধারণের কাজ অত্যন্ত কঠিন হয়ে উঠেছে।
অনিশ্চিত পরিস্থিতির মুখে পড়ে কেন্দ্র বারবেল স্ট্র্যাটেজি গ্রহণ করে। এই স্ট্যাটেজি সমাজের প্রান্তিক মানুষ ও ব্যবসাকে ধাক্কা থেকে বাঁচাতে ভিন্ন ভিন্ন সুরক্ষা-জালের একটা সংমিশ্রণ। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নীতি সংক্রান্ত নমনীয়তা এই কৌশলে রয়েছে। সমীক্ষায় বলা হয়েছে, এ সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় যখন যেমন তথ্য পাওয়া গিয়েছে, তার ভিত্তিতে নীতির হেরফের করা হয়েছিল।
এক্ষেত্রে চিরাচরিত ওয়াটারফল মেথডে সমস্যার বিস্তারিত প্রাথমিক পর্যালোচনা করে একটা মোটামুটি অনমনীয় আগাম পরিকল্পনা রূপায়ণের জন্য গৃহীত হয়। অন্যদিকেস বারবেল স্ট্যাটেজিতে প্রাথমিকভাবে চরম সম্ভাবনার কথা ধরে নিয়ে তারপর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ফিডব্যাক লুপের মাধ্যমে এরপর ধাপে ধাপে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়।
সমীক্ষা অনুযায়ী, সরকার এক্ষেত্রে আপৎকালসীন সহায়তা ও আর্থিক নীতি সংক্রান্ত ব্যবস্থার সযত্নে মিশ্রণ ঘটিয়েছিল যাতে, অতিমারীর প্রভাবে যে ধাক্কা পড়েছে, তা মোকাবিলা করা যায়। এমনকি, পরিবর্তিত পরিস্থিতি অনুযায়ী নমনীয়তা বজায় রেখে এগোনো যায়, সেই চেষ্টাও করা হয়েছিল। এর মধ্যেই ছিল, আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকা অবস্থাতেই একটি কঠোর লকডাউন ঘোষণা। সমীক্ষায় বলা হয়েছে,এই সিদ্ধান্তের ফলে সরকার পরীক্ষা, কোয়ারেন্টাইন সেন্টার ও অন্যান্য পরিকাঠামো গড়ে তোলার সময় পেয়েছিল।
সমীক্ষা অনুযায়ী, লকডাউন ও কোয়ারিন্টিন আর্থিক ক্রিয়াকলাপ ক্ষতিগ্রস্ত করছে বোঝার পরই সরকার বিশ্বের সর্ববৃহৎ নিখরচায় খাদ্য ও সরাসরি অর্থ হস্তান্তর ও ছোট ব্যবসার ক্ষেত্রে সুরাহা মূলক পদক্ষেপের মতো সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করে।