নয়াদিল্লি: ধনী-দরিদ্রের মধ্যে ফারাক দিন দিন চওড়া হচ্ছে বলে একমত প্রায় সব সমীক্ষাই। কিন্তু পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ইলন মাস্ক একেবারে উল্টো ভবিষ্যদ্বাণী করলেন। তাঁর দাবি, আগামী দিনে আয়ের সার্বিক বৃদ্ধি ঘটবে। ফলে সঞ্চয়ের কোনও প্রয়োজনই আর থাকবে না। ধনকুবের মাস্কের এহেন মন্তব্যে সাড়া পড়ে গিয়েছে। (Elon Musk on Money)
বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করেছেন মাস্ক। আমেরিকায় নতুন একটি প্রকল্পের ঘোষণা করেছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সরকার, যার নাম ‘Trump Accounts’. ওই প্রকল্পের আওতায় আমেরিকার সদ্যোজাত এবং শিশুদের নামে অ্যাকাউন্ট থাকবে। ওই অ্যাকাউন্টে সরকারের তরফে ১০০০ ডলার জমা দেওয়া হবে। পাশাপাশি, পরিবার-পরিজন, কোনও সংস্থাও টাকা জমা দিতে পারবে ওই অ্যাকাউন্টে। (Elon Musk on Poverty)
যে শিশুর নামে টাকা জমা পড়বে, সে ১৮ বছর বয়স থেকে ওই অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তুলতে পারবে। ইতিমধ্যেই ওই প্রকল্পে ভালসাড়া মিলতে শুরু করেছে। ধনকুবের রে ডালিও কানেটিকটের ৩ লক্ষ শিশুর অ্যাকাউন্টে ২৫০ ডলার করে জমা দেওয়ার কথা জানিয়েছে। এতে পরবর্তীতে উচ্চশিক্ষায় ছেলেমেয়েদের টাকার সমস্যা হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
ট্রাম্পের ওই প্রকল্পের প্রশংসাও করেছেন মাস্ক। কিন্তু সঞ্চয় নিয়ে তাঁর ভাবনা চমকে দিয়েছে অনেককেই। মাস্কের বক্তব্য, ‘অবশ্যই ভাল উদ্যোগ। কিন্তু ভবিষ্যতে দারিদ্রই থাকবে না। তাই টাকা জমানোর প্রয়োজন নেই। সার্বিক ভাবেই আয় বৃদ্ধি পাবে’। তবে দারিদ্র নিয়ে এই প্রথম এমন মন্তব্য করলেন না মাস্ক।
দারিদ্র নিয়ে এর আগেও মুখ খোলেন টেসলা কর্তা। সেই সময় ইলনের দাবি ছিল, যন্ত্রমেধা বা রোবোটিক্স এমন জায়গায় পৌঁছবে যে দারিদ্র বলে পৃথিবীতে আর কিছু থাকবে না। ফলে চিরাচরিত শ্রমের প্রয়োজন থাকবে না আর, সম্পদ বাড়বে, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা তৈরি হবে পৃথিবীতে। AI এবং Robotics-এর দৌলতে উৎপাদন এতটাই বাড়বে যে, ভবিষ্যতের পৃথিবীতে টাকা অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে বলেও দাবি করেন মাস্ক। পৃথিবীতে অক্সিজেন যেমন সর্বত্র পাওয়া যায়, আগামীতে টাকার অবস্থাও একই রকম হবে বলে দাবি করেন।
ফলে দারিদ্র নিয়ে ফের যে মন্তব্য করলেন মাস্ক, তা ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। যদিও এই মন্তব্যের জন্য সমালোচনার মুখেও পড়তে হচ্ছে তাঁকে। পৃথিবীর ধনীতম ব্যক্তি মাস্কের সম্পত্তির পরিমাণ ৬০০ বিলিয়ন ডলার। যাঁর নিজের এত টাকা রয়েছে, তিনি কী করে অন্যকে টাকা না জমানোর পরামর্শ দেন, প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। তাহলে মাস্ক নিজে কেন সম্পত্তি বাড়াচ্ছেন, সেই প্রশ্নও উঠে আসছে।