নয়াদিল্লি: করোনাভাইরাস অতিমারীর জেরে অর্থনীতির আকাশে কালো মেঘ। শিল্প, ব্য়বসা-বাণিজ্য়, জীবন-জীবিকা মার খাচ্ছে। তার মধ্য়েই গত বেশ কয়েকটি দশকে অর্থনীতির সবচেয়ে বেহাল দশার ছবি তুলে ধরল সোমবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যান। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি রূপায়ণ মন্ত্রকের দেওয়া সরকারি তথ্য় বলছে, ভারতের মোট অভ্যন্তরীণ পণ্য বা জিডিপি এপ্রিল-জুন ত্রৈমাসিকে ২৩.৯ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে দেশের অর্থনীতির বৃদ্ধি হয়েছিল ৩.১ শতাংশ, গত অন্তত আট বছরে বৃদ্ধির হার এত ধীর, শ্লথ হয়নি কখনও। জিডিপি পরিসংখ্যানে ফুটে উঠেছিল, মানুষ খরচ করছে কম, ব্যয় সংকোচন হয়েছে, বেসরকারি বিনিয়োগ, রপ্তানিরও সংকোচন হয়েছে মার্চ ত্রৈমাসিকে। বিশেষজ্ঞরা বলেইছিলেন, দেশের অর্থনীতির সংকোচন হতে চলেছে কেননা একটানা দেশব্যাপী ৬৮ দিনের লকডাউনের বেশিরভাগটাই কেটেছে এই পর্বে। নোভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে গত ২৫ মার্চ থেকে লকডাউনের বিধিনিষেধ চালু করে সরকার।
যদিও আগে প্রকাশিত তথ্য পরিসংখ্যানেই প্রকাশ, কোভিড-১৯ সংক্রমণ সামলাতে চালু লকডাউন চালু হওয়ার আগেই দেশের জিডিপি বৃদ্ধির হার কমে, তার গতি ধীর হয়ে গিয়েছিল। ২০২০ অর্থবর্ষের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে ৩.১ শতাংশ বৃদ্ধির হার ছিল ২০১২-১৩ থেকে শুরু হওয়া নতুন তথ্য পরিসংখ্যান সিরিজের দুর্বলতম হার। ২০২০ অর্থবর্ষের প্রকৃত জিডিপি বৃদ্ধির হার হল ৪.২ শতাংশ, যা এই সিরিজে সবচেয়ে দুর্বল, খারাপ হার।
২০১৩র পর থেকে ভারতের অর্থনীতি সবচেয়ে কম হারে বেড়েছে গত বছরের এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে, কেননা বিশ্বস্তরে বাণিজ্য় সংঘাতের মধ্য়ে ক্রেতার চাহিদা ও সরকারি ব্য়য় ঝিমিয়ে পড়ে। ফলে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের সুদের হার আরও কমানোর সম্ভাবনা দেখা দেয়। বছর থেকে বছরের হিসাবে এশিয়ার তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির বৃদ্ধি হয় মাত্র ৫ শতাংশ। ২০১৮র একই ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি ছিল ৮ শতাংশ, তার আগের ত্রৈমাসিকে ৫.৮ শতাংশ। কোভিড-১৯ অতিমারীর ধাক্কায় গোটা বিশ্ব অর্থনীতিতেই সঙ্কোচনের ছায়া। ২০২০ সালে গোটা বিশ্বের অর্থনীতির ৪.৯ শতাংশ সঙ্কোচন হবে বলে হিসাবে আইএমএফের। জুন ত্রৈমাসিকে ব্রিটিশ অর্থনীতির এক বছরের হিসাবে পতন হয়েছে ২১.৭ শতাংশ।