Manmohan Singh Died : 'কথা কম, কাজ বেশি'। ব্যক্তিগত জীবনে এই ছিল সদ্য প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের আদর্শ। বিরোধীরা সেই কারণে অনেক সময় তাঁকে 'মৌনমোহন'ও বলতেন। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর পদ থেকে দেশের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার যাত্রাপথে ভারতের আর্থিক সংস্কারের কাণ্ডারী ছিলেন তিনি। FDI থেকে লাইসেন্স রাজ, এই পাঁচ কারণে তাঁকে মনে রাখবে দেশ।
১ লাইসেন্স রাজ খতমের কারিগর
বেসরকারি কোম্পানিগুলির আর্থিক উন্নতিতে সবথেকে বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল এই নিয়ম। যেখানে লাইসেন্স দেওয়ার বা অনুমতি পাওয়ার জন্য লাল ফিতের ফাঁসে আটকে থাকত অনেক কিছু। এই লাইসেন্স রাজ খতমের কারিগর দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। ১৯৯১ সালের আর্থিক সংকটের সময় অনেক লেনদেনের সমস্যা সামনে এসেছিল।
সেই সময় মনমোহন সিংহ এই লাইসেন্স রাজের সমাপ্তি ঘটান। যার দীর্ঘমেয়াদি ফল আজ ভোগ করছে দেশবাসী। রাতারাতি এই সিদ্ধান্তের পরে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ দেশে বেড়ে যায়। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখানে ইনভেস্ট করতে আগ্রহী হন। এমনকী দেশীয় রফতানিকারী কোম্পানিগুলিও সহজে বিদেশে পণ্য পাঠাতে শুরু করেন। এই বিষয়ে মনমোহন সিংহ বলেছিলেন 'আমরা কম পণ্য় রফতানি করছি, বেশি পণ্য় আমদানি হচ্ছে। যা ঠিক নয়।'
২ বিদেশি পণ্য়ের শুল্ক কমানো
তাঁর আমলেই ভারতে বিদেশি পণ্য় আমদানি অনেক সহজ হয়ে যায়। আমদানি শুল্ক কমানোর জন্যই এই সুবিধা পায় দেশবাসী। যাকর ফলে ঘরে ঘরে কম দামে বিদেশি পণ্য় ঢুকে যায়। সেই সময় এক ঝটকায় আমদানি শুল্ক ৩০০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫০ শতাংশ করে দেন সিং। যার সুফল পায় ভারতবাসী। এমনকী বিদেশি সস্তের পণ্য় দেশে ঢোকায় কম দামে নতুন পণ্য় তৈরি করতে শুরু করে দেশীয় কোম্পানিগুলি। বিদেশি কোম্পানিগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতার আবহ তৈরি হয় ভারতে।
৩ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগে উৎসাহ
মনমোহন সিংহের সময় দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বাড়তে শুরু করে। তাঁর সরকার এমন সব আর্থিক নীতি তৈরি করে, যাতে ভারতের বাজারের প্রতি আকৃষ্ট হয় বিদেশি কোম্পানগুলি। বিভিন্ন খাতে বিধি নিষেধ তুলে দেন সদ্যপ্রয়াত প্রধানমন্ত্রী। এই নীতির কারণে টেলিকম, খুচরো ব্যবসা ও বিমা খাতে প্রতিযোিগতা তৈরি হয়। যার সুফল পায় দেশবাসী।
৪ আয়করে সংস্কার
দেশবাসীকে আয়কর জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহ দেন মনমোহন। সেই সময় আয়করের ধাপ চার থেকে কমিয়ে তিনে নামিয়ে আনেন তিনি। আয়করে বেশ ছাড় দেওয়া শুরু হয়। ফলে দেশবাসী বেশি করে আয়কর জম দেওয়ায় উৎসাহ পায়। ব্যক্তিগত আয়কর ৫৬ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৪০ শতাংশে নিয়ে আসেন তিনি।
৫ জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন
২০১৩ সালে দেশে সবথেক গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক সুরক্ষা আইনের বাস্তবায়ন হয়। যেখানে National Food Security Act (NFSA) তৈরি করেন মনমোহন সিংহ। এই আইনের আওতায় দেশের দুই তৃতীয়াংশ লোক ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যশস্য় পাওয়া শুরু করে। সব মিলিয়ে এর মাধ্যমে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত হয়। এরফলে দেশে একাধারে অপুষ্টি ও আর্থিক বৃদ্ধি শুরু হয়।
আরও পড়ুন: Voter List: ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ গেছে, এভাবে করুন অভিযোগ, দ্রুত কাজ হবে