কলকাতা: বাড়ি বসে কাজের (Work from Home) নামে জমিয়ে ঘুম? কিংবা অন্য কাজে ব্যস্ত? এমন হলে কোপ পড়তে পারে চাকরিতে। এমনটাই হয়েছে বহুজাতিক সংস্থা ওয়েলস ফার্গো (Wells Fargo)-তে। 'ভুয়ো কাজ' এর অভিযোগে তাদের একাধিক কর্মীকে ছাঁটাই করেছে এই মার্কিন সংস্থা। যে কাজ অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়েছে- তার পোশাকি নাম 'mouse jiggling'।


সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সংস্থায় একাধিক কর্মী যার ওয়ার্ক ফ্রম হোম (Remote Working) করেছিলেন, তাঁদের একাংশের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ পদ্ধতিতে কি-বোর্ড অ্যাক্টিভ রাখার অভিযোগ উঠেছে তাঁদের দিকে। এর মাধ্য়মে আসলে কাজ না করেও কাজ করা হচ্ছে এবং সিস্টেম চালু আছে- এমন ধারণা তৈরি করা হয়। এনটিডি টিভির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই সংস্থা বিবিসিকে জানিয়েছে যে, এমন ধরনের অনৈতিক কাজকে কোনওরকম প্রশয় দেওয়া হবে না হলেই ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংস্থা।


মাউস জিগলার (mouse jiggler) আসলে কী?
ছোট্ট কোনও যন্ত্র বা সফটঅয়্যার প্রোগ্রামের মাধ্য়মে এই জালিয়াতি করা হয়। সাধারণত নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কম্পিউটারে কোনও কাজ না করলে নিজে থেকে মেশিন Sleep mode-এ চলে যায়। কিন্তু এই পদ্ধতির মাধ্যমে কোনও কম্পিউটারকে স্লিপ মোডে যাওয়া থেকে আটকানো নয়। কাজ না করলেও যাতে মেশিন স্লিপ মোডে না যায় বা স্ক্রিনসেভার অ্যাক্টিভ না হয় সেই ব্য়বস্থা করা হয়।


নির্দিষ্ট সময় অন্তর মাউসের স্বয়ংক্রিয় ব়্যানডম মুভমেন্ট করানো হয়, সরানো হয় কারসারের অবস্থান। এর ফলে কম্পিউটার বোঝে এখনও মেশিনে কাজ হচ্ছে তাই স্লিপ মোডে যায় না। 


কীভাবে ধরা হয় এই পদ্ধতি?


একাধিক সফটঅয়্যার (Software) রয়েছে যার মাধ্যমে এমন ধরনের সফটঅয়্যারের গতিবিধি লক্ষ্য করা যায়। সংস্থা সেই ধরনের সফটঅয়্যারগুলি কম্পিউটারে ইনস্টল করাতে পারে। এগুলি মাউস বা কি-বোর্ডের অস্বাভাবিত প্যাটার্ন ধরতে পারে। 


কাজের সময় কোনও কর্মী কতটা সাড়া দিচ্ছেন সেটা ট্র্যাক করা হয়। মাউস জিগলার্স পদ্ধতিতে মেশিন চালু থাকলেও মেসেজের রিপ্লাই দেওয়া কিংবা কল রিসিভ করতে পারে না।


কম্পিউটারে কোনও অনুমোদনহীন ডিভাইস রয়েছে কিনা দেখা হয়। অথবা কম্পিউটারের সফটঅয়্যারে কোনও অনুমোদনহীন সফটঅয়্যার রয়েছে কিনা তা দেখা হয়


অনেকসময়েই এমন ঘটনার কথা শোনা গিয়েছে। সময়ের চেয়ে বেশিক্ষণ বিরতি নিলে, কাজের সময়ে কাজে না থেকে অন্যত্র ব্য়স্ত থাকলে- সেই বিষয়টি লুকোনর জন্য রিমোট ওয়ার্কে থাকা অনেক কর্মী এমন করে থাকেন বলে বিভিন্ন পেশাগত সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা হতে দেখা গিয়েছে আগেও। আবার কাজের জন্য অনেকসময় এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। কম্পিউটারে কোনও নথি পড়ার সময়ে স্ক্রিন বদল না হলেও যাতে বারবার স্লিপ মোডে কম্পিউটার না যায় তার জন্যও এই পদ্ধতি ব্য়বহার হয়ে থাকে।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে। 


আরও পড়ুন: চাকরি থেকে ছাঁটাই! তারপরেও টাকা ফেরত চেয়ে আইনি চিঠি মাস্কের সংস্থার!