কলকাতা : জেলায় জেলায় ভোট পরবর্তী হিংসা থামার নাম নেই। এরই মধ্যে আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের নিয়ে রাজ্য়পালের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েও দেখা করতে পারেননি শুভেন্দু অধিকারী। সেই ঘটনার জল গড়িয়েছে আদালত পর্যন্ত। এই আবহেই আবার বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রে মারধর খেয়ে বীভৎস অবস্থা বিজেপি কর্মীর। এই পরিস্থিতিতে দলের কর্মীদের অবস্থা দেখে গর্জে উঠলেন রাজ্য সভাপতি ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার ( Sukanta Majumdar ) । ধর্নায় বসতে চাইলেন শুভেন্দু অধিকারী ( Suvendu Adhikari ) ।
বসিরহাট লোকসভার হাড়োয়াতে বিজেপি কর্মীকে বাইক থেকে নামিয়ে মারধর, গলায় দড়ি বেঁধে টেনে নিয়ে নদীতে ফেলে দেওয়ার চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। বিজেপি কর্মীর দাবি, গত সোমবার বসিরহাট আদালত থেকে বাড়ি ফেরার সময়, তাঁর বাইক থামিয়ে ইট দিয়ে থেঁতলে মেরে ফেলার চেষ্টা করে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। গলায় দড়ি বেঁধে বিদ্যাধরী নদীতে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা হয়। এছাড়াও প্রতিদিনই প্রায় আসছে বিভিন্ন জেলা থেকে বিজেপি কর্মীদের আক্রান্ত হওয়ার খবর।
এই পরিস্থিতিতে সুকান্ত মজুমদার সরাসরি নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বললেন, ' মুখ্যমন্ত্রী কী চান বিজেপি কর্মীরা ডুবে মরুক, আত্মহত্যা করুক? মুখ্যমন্ত্রী বলে দিন বিজেপি কর্মীরা ওঁর বাড়ির সামনে গিয়ে আত্মহত্যা করবে। আক্রান্ত বিজেপি কর্মীরা রাজ্যপালের কাছেও যেতে পারছে না। রাজ্যপালকে গিয়ে দেখা করতে হচ্ছে আক্রান্তদের সঙ্গে। গণতন্ত্রের পক্ষে এটা লজ্জার'
অন্যদিকে, গত বৃহস্পতিবার রাজভবনে ঢুকতে বাধা পেয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি আক্রান্ত কর্মীদের নিয়ে রাজভবনে ঢোকার আগেই আটকে দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে তিনি বললেন, ' রাজভবনের সামনে ৫ দিন ধর্নায় বসতে চাই। তৃণমূল কংগ্রেস যেখানে ধর্নায় বসেছিল সেখানেই বসতে চাই। কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে চিঠি দিয়েছি, উত্তর পাইনি'
এরই মধ্যে রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আসছে বিজেপির কেন্দ্রীয় টিম। হিংসা পরিস্থিতি পর্যালোচনায় কেন্দ্রীয় টিম গঠন করেছেন বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডা । টিমে আছেন ৪ সাংসদ বিপ্লব কুমার দেব, রবিশঙ্কর প্রসাদ, ব্রিজলাল এবং কবিতা পতিদার। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়া অন্য কোনও রাজ্যে, ভোট পরবর্তী হিংসার খবর নেই বলে দাবি বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বর।
অন্যদিকে উত্তর ২৪ পরগনার আমডাঙায় আইএনটিটিইউসি নেতার বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, রাতে তৃণমূলের অটো ইউনিয়নের নেতা আব্দুল হান্নানের বাড়ি লক্ষ্য করে বোমাবাজি হয়। ঘরে ঘুমিয়েছিলেন আইএনটিটিইউসি নেতা। অল্পের জন্য রক্ষা পান তিনি, বোমার আঘাতে তাঁর বাড়ির টালির চাল ভেঙে যায়। কী কারণে বোমাবাজি, খতিয়ে দেখছে আমডাঙা থানার পুলিশ।
ভোট মিটেছে, সরকার গঠন হয়েছে। আর ৩ দিন পর সংসদে শুরু হবে অধিবেশন। কিন্তু বাংলায় ভোট পরবর্তী সন্ত্রাসে রক্ত ঝরেই চলেছে।
আরও পড়ুন:
তৃণমূলের পরই উপনির্বাচনের জন্য ৪ প্রার্থীর নাম ঘোষণা বাম কংগ্রেস জোটের, তালিকায় কারা?