নয়াদিল্লি: মারুতির ব্যালেনো (Maruti Baleno) এবং টয়োটার গ্ল্যাঞ্জা (Toyota Glanza)। এর আগে পর্যন্ত সংস্থার ব্য়াজ ছাড়া দুটি গাড়ির পার্থক্য তেমন কিছু ছিল না। দেখে মনে হতো একই গাড়ি কিন্তু দুটি আলাদা সংস্থার লোগো। বাজারে টয়োটা গ্ল্যাঞ্জার চাহিদা থাকলেও বাজারে ওই মডেলের তুলনায় অনেক কম ভ্যারিয়েন্ট ছিল। এবার নতুন করে ভেবেছে প্রস্তুতকারী সংস্থা। নতুন করে সাজিয়ে-গুছিয়ে বাজারে এসেছে নতুন টয়োটা গ্ল্যাঞ্জা (Glanza)। বাইরের ডিজাইন থেকে গাড়ির অন্দরসজ্জা-সবেতেই এসেছে বদল।
নতুন ডিজাইন:
নতুন গ্ল্যাঞ্জার বাইরের ডিজাইনে (Design) বেশ কিছু বদল এনেছে সংস্থা। গাড়ির সামনের দিকে যা বদল আনা হয়েছে তার ফলে ব্য়ালেনোর সঙ্গে পার্থক্য স্পষ্ট হয়েছে। গ্রিল প্রায় একই রয়েছে। কিন্তু বাম্পারের নীচের দিকে যে ভাবে সাজানো হয়েছে তা যথেষ্ট নজরকাড়া। বাম্পারের নীচের দিক কার্বন ফাইবার (Carbon fiber) দিয়ে তৈরি হয়েছে। হেডল্যাম্পেও আনা হয়েছে বদল, যা ব্যালেনোর থেকে বেশ খানিকটা আলাদা দেখতে। গ্ল্যাঞ্জাতে DRL লাইটিংয়ের সজ্জা আনা হয়েছে।
নানা রং:
এখন ৫টি আলাদা আলাদা রং রয়েছে
টয়োটা গ্ল্যাঞ্জার। তার মধ্যে তিনটি নতুন। সেগুলি হল স্পোর্টিং রেড (Sporting red),গেমিং গ্রে (Gaming grey), এনটাইসিং সিলভার (Enticing silver)। এছাড়াও রয়েছে ইনস্টা ব্লু (Insta blue), ক্যাফে হোয়াইট (Cafe white)।
চাকাতেও বদল:
নতুন টয়োটা গ্ল্যাঞ্জাতে (Glanza) রয়েছে ১৬ ইঞ্চির চাকা। যেখানে বেশ কিছু বদল আনা হয়েছে। ফলে ব্যালেনোর (Baleno) তুলনায় অনেকটাই আলাদা হয়েছে। গাড়ির পিছনের দিকের (Rear part) ডিজাইন অনেকটাই এরকম হয়েছে। সবমিলিয়ে আগের মডেলের তুলনায় নতুন গ্ল্যাঞ্জা অনেকটাই দেখতে ভাল হয়েছে। ডিজাইনের দিক থেকেও ব্যালেনোর তুলনা অনেকটাই আলাদা হয়েছে।
অন্দরসজ্জাতেও চমক:
ব্যালেনোর মতোই নতুন গ্ল্যাঞ্জার অন্দরসজ্জায় ব্যবহৃত জিনিসের মান বেশ ভাল। ব্যালেনোর অন্দরসজ্জায় নীল ও কালো রংয়ের সঙ্গে রুপোলি রং (Silver trim) মিশিয়ে ব্যবহার হয়েছে। নতুন গ্ল্যাঞ্জায় ব্যবহার হয়েছে গ্লস ব্ল্যাক ড্যাশবোর্ড (Gloss black dashboard), সঙ্গে রয়েছে beige colour-এর ছোঁয়া। বাকি অনেককিছুতেই ব্যালেনোর সঙ্গে মিল রয়েছে। গ্ল্যাঞ্জায় রয়েছে ৯ ইঞ্চি টাচস্ক্রিন (Touchscreen)। এছাড়াও আরও একাধিক ফিচার রয়েছে সেগুলি হল, টয়োটা আই-কানেক্ট (Toyota i connect), টিল্ট ও টেলেস্কোপিক স্টিয়ারিং (Tilt and Telescopic Steering), ক্রুজ কন্ট্রোল (Cruise control)। যাত্রীদের স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য পিছনেও এসি ভেন্ট রয়েছে (Rear AC Vents), রয়েছে ক্লাইমেট কন্ট্রোলও (Climate control)। নতুন টয়োটা গ্ল্যাঞ্জাতে রয়েছে হেড আপ ডিসপ্লের ( Heads up display) মতো অত্যাধুনিক ব্যবস্থাও। সুরক্ষার দিকেও খেয়াল রেখেছে সংস্থা। গাড়িতে রয়েছে ৩৬০ ডিগ্রি ক্যামেরা এবং ৬টি এয়ারব্যাগও (Airbag)।
শক্তিশালী ইঞ্জিন:
টয়োটা গ্ল্যাঞ্জাতে রয়েছে K-series ইঞ্জিন। গিয়ারবক্সেও রয়েছে অপশন। একটি ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশন (manual transmission বা MT) এবং অন্যটি অটোমেটিক ট্রান্সমিশন (Automatic Transmission বা AMT)। এই প্রথম টয়োটা তাদের কোনও গাড়িতে AMT গিয়ারবক্স আনল। এর আগের মডেলের গ্ল্যাঞ্জাতে CVT অটোমেটিক গিয়ারবক্স রয়েছে।
নানারকম অপশন:
নতুন গ্ল্যাঞ্জাতে একাধিক ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে। শুরুর দামও তুলনায় সস্তা। আগে ছিল G এবং V ভ্যারিয়েন্ট। এখন তার সঙ্গে জুড়েছে E এবং S ভ্যারিয়েন্ট। গ্ল্যাঞ্জায় ৩ বছর অথবা ১ লক্ষ কিলোমিটার warranty রয়েছে। রয়েছে extended warranty-র সুযোগও। সেক্ষেত্রে ৫ বছর অথবা ২লক্ষ ২০ হাজার কিলোমিটারের ওয়ারান্টি পাওয়া যাবে।
কত দাম:
Toyota Glanza E--এটি শুধু ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশনেই পাওয়া যাবে। এক্স শোরুম প্রাইস ৬ লক্ষ ৩৯ হাজার টাকা।
Toyota Glanza S--ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশনের এক্স শোরুম প্রাইস সাত লক্ষ ২৯ হাজার টাকা, অটোমেটিক ট্রান্সমিশনের এক্স শোরুম প্রাইস সাত লক্ষ ৭৯ হাজার টাকা।
Toyota Glanza G--ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশনের এক্স শোরুম প্রাইস আট লক্ষ ২৪ হাজার টাকা, অটোমেটিক ট্রান্সমিশনের এক্স শোরুম প্রাইস ৮ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা।
Toyota Glanza V--ম্যানুয়াল ট্রান্সমিশনের এক্স শোরুম প্রাইস ৯ লক্ষ ১৯ হাজার টাকা, অটোমেটিক ট্রান্সমিশনের এক্স শোরুম প্রাইস ৯ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা।
আরও পড়ুন: মারুতি সুজুকিতে বড় খবর ! ১ এপ্রিল থেকে দায়িত্বে পরিবর্তন