নয়াদিল্লি: ঘোষণার পর থেকেই ভারতের রাস্তায় টেসলার দৌড় চাক্ষুষ করার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন লোকজন। কিন্তু ভারতে টেসলার আগমনের পথে জট তৈরি হল এবার। বিদেশ থেকে আমদানিকৃত টেসলা গাড়ির উপর শুল্কে কোনও রকম ভর্তুকি বা ছাড় দিতে নারাজ কেন্দ্রীয় সরকার। তাতে ভারতের বাজারে টেসলার আগমন আরও পিছিয়ে যেতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। (Tesla in India)


শুল্ক নিয়ে টানাপোড়েনের বিষয়টি সংসদে খোলসা করেছে কেন্দ্রীয় সরকারই। কেন্দ্রীয় বাণিজ্য এবং শিল্প মন্ত্রকের জুনিয়র মন্ত্রী সোম প্রকাশ বুধবার সংসদে বলেন, "ভারতের বাজারে বিদ্যুৎচালিত বিদেশ থেকে আমদানিকৃত বিদ্যুৎচালিত গাড়ির দামের ভর্তুকি বা আমদানি শুল্কে ছাড় দেওয়ার কোনও প্রস্তাব আপাতত নেই।" (Electric Vehicles)


সংসদে প্রকাশ জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের 'মেক ইন ইন্ডিয়া' প্রকল্পের আওতায়, দেশে উৎপাদনের উপর জোর দিতেই এমন সিদ্ধান্ত। তিনি বলেন, " 'মেক ইন ইন্ডিয়া' প্রকল্পের আওতায় দেশের মাটিতে বিদ্যুৎচালিত গাড়ির উৎপাদন, দেশি এবং বিদেশি বিনিয়োগে জোর দেওয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎচালিত গাড়ির উৎপাদন বৃদ্ধি করতে  ২০২১ সালে ৩১০ কোটি ডলারের ইনসেন্টিভ প্রকল্পের সূচনা করে কেন্দ্র। এর পাশাপাশি, ভারতের বাজারে যাঁরা ব্যাটারি তৈরি করতে আগ্রহী, সেই সমস্ত সংস্থার জন্য বাড়তি ২০০ কোটি ডলারের ইনসেন্টিভ- প্রকল্পও রয়েছে।"


আরও পড়ুন: পার্সোনাল ফিনান্স এবং জীবন বিমা : এক নিরাপদ ভবিষ্যতের জন্য কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলা


কেন্দ্রের এই অবস্থান নিয়ে যদিও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ 'মেক ইন ইন্ডিয়া' প্রকল্পের আওতায় ভারতে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্য নিয়েছিল কেন্দ্র। বলা হয়েছিল, ভারতে উৎপাদনের প্রতিশ্রুতি আদায় করে বিদেশি সংস্থাগুলিকে দেশের বাজারে জায়গা করে দেওয়া হবে। তার জন্য প্রয়োজনে শুল্কে ছাড়ও দেওয়া হবে, যাতে ভারতকে উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে বেছে নেয় বিশ্বের তাবড় সংস্থা।  তাই টেসলার সঙ্গে শুল্ক-জট নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।


এই পরিস্থিতিতে ভারত সরকার এবং টেসলার মধ্যে আলোচনা থমকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগেও দীর্ঘ এক বছর দু'পক্ষের মধ্যে আলোচনা আটকে ছিল। ভারতের তরফে এ দেশে উৎপাদনে জোর দেওয়া হচ্ছিল যেখানে, সেখানে টেসলা-কর্তা ইলন মাস্কের যুক্তি ছিল, ভারতীয়দের সাধ্যের মধ্যে তাঁকে গাড়ি বিক্রি করতে হলে, শুল্কে ছাড় দিয়ে পুষিয়ে দিতে হবে কেন্দ্রকে। 


এর পর দীর্ঘ টানাপোড়েন চলে। শেষ পর্যন্ত আবারও গতি পায় আলোচনা। জুন মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আমেরিকায় গেলে মাস্ক জানান, ভারতের বাজারে মোটা টাকা বিনিয়োগ করতে প্রস্তুত তিনি। কথা ছিল, আগামী বছর থেকেই ভারতের বাজারে টেসলার গাড়ি পাওয়া যাবে। তার পর আগামী দু'বছরের মধ্য়ে কারখানা গড়ে উৎপাদনও শুরু করবে তারা।  কিন্তু শুল্ক জটে গোটা বিষয়টি নিয়েই দোলাচল দেখা দিয়েছে।