নয়াদিল্লি: করোনার জেরে লকডাউনের ধাক্কায় নজিরবিহীন সঙ্কটের মুখে ভারতীয় অর্থনীতি। ঝিমুনির ধাক্কা কাটিয়ে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে যে ধারণা করা হচ্ছিল করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে তা রাতারাতি ওলটপালট হয়ে গিয়েছে। ঋণনীতি সংক্রান্ত রিপোর্টে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই) এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনীতির এগিয়ে চলার পথে অতিমারির ধাক্কার প্রসঙ্গ  উল্লেখ করা হয়েছে আরবিআইয়ের রিপোর্টে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বলেছে, কোভিড-১৯ এর সংক্রমণের আগে ২০২০-২১ অর্থবর্ষে দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াবে বলে মনে হচ্ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাস অতিমারি সেই হিসেব-নিকেশ ওলটপালট করে দিয়েছে। ২০২০-তে সামগ্রিকভাবে বিশ্বের অর্থনীতি মন্দার কবলে পড়তে চলেছে। কোভিড-পরবর্তী পূর্বাভাসে এমনই ইঙ্গিত।
এমনিতেই বেশ কিছু খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে হাঁটছিল দেশের অর্থনীতি। ২০১৯-র শেষ তিনটি ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ছিল গত ছয় বছরে সবচেয়ে তলানিতে। অর্থবর্ষে সামগ্রিকভাবে বৃদ্ধির হার গত এক দশকে সবচেয়ে কম ৫ শতাংশ হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছিল।
কিন্তু দেশজুড়ে লকডাউন মার্চ ত্রৈমাসিকে চরম আঘাত হানতে পারে বলে বলে করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা ২০২০-২১-এ বৃদ্ধির হার নজিরবিহীনভাবে দেড় থেকে দুই শতাংশে নেমে আসতে পারে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক বলেছে, দীর্ঘমেয়াদে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে খনিজ তেলের দামের মূল্য হ্রাসের প্রভাবও লকডাউন ও বিশ্বে চাহিদা হ্রাসের জেরে  খাদের মুখে চলে যাওয়া অর্থনীতিতে সেভাবে সুফল যোগাতে পারবে না।
দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব রোখার প্রয়াস যুদ্ধকালীন তত্পরতায় শুরু হয়েছে। এই প্রয়াসের অঙ্গ হিসেবেই লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে, যা দেশে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে প্রভাব ফেলেছে। এর সঙ্গে রয়েছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বাণিজ্য ও আর্থিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও অধোগতি দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হারে প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছে আরবিআই।
বর্তমান সময়কে অত্যন্ত টালমাটাল উল্লেখ করে আরবিআই-এর রিপোর্টে জানানো হয়েছে যে, কোভিড ১৯-এর তীব্রতা, ছড়িয়ে পড়া ও সময়কালের বিষয়গুলি পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
করোনা প্রতিরোধের পরে সব কিছু স্বাভাবিক হলে ভারতের অর্থনীতি ছন্দে ফিরবে বলেও আশা আরবিআইয়ের। যদিও সেটা কবে, সেই উত্তর নেই রিপোর্টে।