কলকাতা: কাজের জগতে বিষাক্ত কাজের পরিবেশের খবর সমাজমাধ্যমের দৌলতে এখন প্রায়ই প্রকাশ্যে আসছে। সম্প্রতি পুনের ইওয়াই সংস্থায় অত্যধিক কাজের চাপের (Work Culture) কারণে আনা সেবাস্টিয়ান পেরাইলের মৃত্যুর খবরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে সমাজমাধ্যমে। এমনকী বাজাজ ফিনান্সের আরেক কর্মী তরুণ সাক্সেনারও মৃত্যু ঘটে কাজের চাপের কারণে। কাজের জগতে (Viral News) বিষাক্ত পরিবেশের বিরোধিতা করছেন সকলেই। আর এই কারণেই কর্মীদের মানসিক চাপ বাড়ছে ক্রমাগত। সমাজমাধ্যমের দৌলতেই এই দুটি খবর বিশ্বের দরবারে প্রকাশ্যে এসেছে। কাজের পরিস্থিতি এবং ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা নিয়েই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে নেটিজেনদের মধ্যে।


সম্প্রতি এমনও খবর পাওয়া গিয়েছে যে একটি সংস্থায় যোগ দেওয়ার পরের দিনই এক কর্মী চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন। সেই সংস্থার বসের টক্সিক আচরণ তিনি মেনে নিতে পারেননি। প্রথম দিনে বসের কথা শুনেই তিনি বুঝেছিলেন যে এই সংস্থায় কাজের পরিবেশ ভাল নয়। আর এই কাজে যোগ দিলে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে আগামী দিনে।


অনেক বেশি কাজ করতে হবে, অতিরিক্ত টাকা পাওয়া যাবে না


সমাজমাধ্যম রেডিটে এই ব্যক্তি শ্রেয়স তাঁর এই নিজের কাহিনি লিখে পোস্ট করেছেন। বছরে ৭ লাখ টাকার প্যাকেজে একজন অ্যাসোসিয়েট প্রোডাক্ট ডিজাইনার হিসেবে কাজ শুরু করেন তিনি। প্রথম যে দিন তিনি অফিসে আসেন, তিনি তাঁর রিপোর্টিং ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করেন। তিনিই সেই কর্মীকে বলেন যে এই অফিসে প্রত্যেককেই অফিসের শিফটের বাইরেও অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। এমনকী সেই অতিরিক্ত কাজের জন্য কোনও ওভারটাইম পাবেন না তিনি। তিনি এও বলেন যে এই অফিসে কাজ করলে ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্স বলে সেভাবে কিছুই থাকবে না। এইসব নিয়ম শুধু বাইরের দেশেই চলে, ভারতে নয়।


কর্মীকে বিদ্রুপ করেন বস


শ্রেয়স তাঁর পোস্টে লিখেছেন যে তিনি যখন ওয়ার্ক লাইফ ব্যালেন্সের কথা ম্যানেজারকে বলেন, তখন তিনি তাঁকে নিয়ে মজা করেন, বিদ্রুপ করেন। শ্রেয়স বসকে জানিয়েছিলেন যে শরীরচর্চা এবং পড়াশোনার জন্য তিনি সময় চান, তাঁর বস তাঁকে বিদ্রুপ করে বলেন যে এইসব তাঁর কাজ না করার অজুহাত মাত্র। তিনি স্পষ্টই পোস্টে লেখেন যে এই ধরনের কাজের নীতি-নিয়ম সম্পূর্ণ অযৌক্তিক, অমানবিক এবং অপরিকল্পিত। কিন্তু কাজে যোগ দেওয়ার প্রথম দিনেই যে এভাবে অমানবিক ব্যবহার সহ্য করতে হবে তা তিনি বুঝতেও পারেননি।


চাকরি ছেড়ে দেন সেই কর্মী


প্রথম দিনে কাজে যোগ দিয়েই চাকরি ছেড়ে দেন শ্রেয়স নামের সেই কর্মী। তাঁর রেজিগনেশনের চিঠিতে তিনি স্পষ্টই লেখেন যে কাজের পরে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে তিনি খুশি হতে পারবেন না এই কাজ করে। কাজ সামলিয়ে অফিস থেকে বাড়ি গিয়ে যদি কেউ শরীরচর্চা করে, বই পড়ে, পরিবারের সঙ্গে সময় কাটায়, তাহলে কারও কিছু বলার থাকবে না। এটা কোনও পেশাদার আচরণ হতে পারে না। আপনি যদি আরও অতিরিক্ত কোনও কাজ করতে চান, তাহলে অফিসকেও অতিরিক্ত টাকা দিতে হবে। রেজিগনেশন লেটারের শেষে তিনি লেখেন, 'আশা করছি আপনি এমন কাউকে পেয়ে যাবেন যিনি এই সমস্ত নিয়ম মেনে চলবেন।'


আরও পড়ুন: Credit Card Rules: ফের ক্রেডিট কার্ডের নিয়মে বদল আনল এই ব্যাঙ্ক, পাবেন না বেশ কিছু সুবিধে