নয়াদিল্লি : নতুন বিপদের সম্মুখীন স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গ্রাহকরা। চিনা বংশদ্ভূত কিছু হ্যাকার ইতিমধ্যেই নতুন উপায়ে গ্রাহকদের লুঠতে শুরু করেছে। সাইবার সিকিউরিটির গবেষকরা ইতিমধ্যেই সাবধান করেছেন যে, চিনা হ্যাকাররা গ্রাহকদের ব্যাঙ্কের জরুরি KYC আপডেট করার নামে তাঁদের হোয়াটসঅ্যাপে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের লিঙ্ক পাঠাচ্ছে এবং ৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ফ্রি গিফটেরও লোভ দেখাচ্ছে। এবং গ্রাহকরা সেই লিঙ্কে ক্লিক করলেই তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা গায়েব হয়ে যাচ্ছে।


অটোবট ইনফোসেক প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে মিলে নয়াদিল্লির থিঙ্ক ট্যাঙ্ক সাইবার পিস ফাউন্ডেশন একটি সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছে যে, বেশ কিছু স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটেছে। তাঁরা জানাচ্ছেন যে, যে লিঙ্কগুলি গ্রাহকদের প্রলোভন দেখানোর জন্য পাঠানো হচ্ছে, সেগুলির প্রতিটা ডোমেনই চিনের। একটি ঘটনায় গ্রাহকদের টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে KYC আপডেট করার কথা বলা হয়। এবং লিঙ্কও পাঠানো হয়। সেই লিঙ্কে ক্লিক করে কনটিনিউ টু লগইন বোতামে ক্লিক করতেই পেজটিতে বেশ কিছু গোপন তথ্য জানতে চাওয়া হচ্ছে। যেমন, নাম, পাসওয়ার্ড এবং ক্যাপচা। সমস্ত তথ্য দেওয়ার পরই গ্রাহকের মোবাইলে OTP আসে। এবং বলা হয় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব OTP দেওয়ার জন্য। ওটিপি দেওয়ার পরই আরও কিছু তথ্য প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয় যেমন অ্যাকাউন্ট হোল্ডারের নাম, মোবাইল নম্বর, জন্ম তারিখ। সেই সমস্ত তথ্য দেওয়ার পর ফের ওটিপি দিতে হয়। গবেষকরা জানাচ্ছেন, হ্যাকাররা এতটাই সুচতুরভাবে কাজটা করছে, যাতে সাধারণ মানুষের সন্দেহ হওয়ার সম্ভাবনা না থাকে। একেবারেই সেভাবে স্টেট ব্যাঙ্কের ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিংয়ের পদ্ধতিতেই। সমস্ত তথ্য দেওয়ার পরই একটি থার্ড পার্টি ডোমেন খুলে যায় স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার অফিশিয়াল ওয়েবসাইটের পরিবর্তে। আর এর মাধ্যমেই চলে জালিয়াতি।


দ্বিতীয় ঘটনা গ্রাহকদের ফ্রি গিফটের লোভ দেখিয়ে। গবেষকরা জানাচ্ছেন, হ্যাকাররা গ্রাহকদের ফোনে হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে ফ্রি গিফটের মেসেজ পাঠাচ্ছে এবং তার সঙ্গেই একটি লিঙ্কও পাঠাচ্ছে। লিঙ্কে ক্লিক করলে যে ল্যান্ডিং পেজটি খুলে যাচ্ছে, সেখানে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার ছবি দেওয়া রয়েছে এবং গ্রাহকদের একটি সমীক্ষায় অংশ নিতে বলা হচ্ছে ৫০ লক্ষ টাকার ফ্রি গিফট পাওয়ার জন্য। এবং এরপরই হচ্ছে জালিয়াতি। গবেষকরা তাই প্রতি ক্ষেত্রেই সাবধান করছেন যে, সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যদি কোনও লিঙ্ক আসে, তা এড়িয়ে যাওয়া দরকার। শুধু স্টেট ব্যাঙ্কের গ্রাহকরাই নন, কোটাক ব্যাঙ্ক, পিএনবি প্রভৃতি আরও অন্যান্য ব্যাঙ্কের গ্রাহকরাও বিপদে পড়তে পারেন।