জয়ন্ত রায়, দক্ষিণ ২৪ পরগণা : মহেশ তলার আবাসনের চার তলার ঘর তখন রক্তে ভাসছে। মাটিতে পড়ে মধ্যবয়সী মহিলার দেহ পড়ে। ফ্ল্যাটের মালিকের নাম দেবায়ন কর্মকার। মৃত দেহটি তাঁর স্ত্রী নন্দিতার। শুক্রবার দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায় পুলিশ।
পরে মৃতার স্বামী দেবায়নকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চালায় পুলিশ। বয়ানে তিনি যা যা বলেন, তা ধোঁয়াশায় ভরা। বক্তব্য রীতিমতো পরস্পরবিরোধী বলেই জানিয়েছে পুলিশ। অন্যদিকে নন্দিতার পরিবারের পক্ষ থেকেও কোনও প্রকার অভিযোগ গভীর রাত পর্যন্ত মহেশতলা থানায় জমা পড়েনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, দেবায়নের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার দুপুর বারোটা নাগাদ তিনি খিদিরপুরের বাড়ি থেকে মহেশতলার আবাসনের যখন আসেন, তখনই দেখেন দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করা ছিল। ডেকে সাড়া না পেয়ে তিনি আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীকে না জানিয়েই তালা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। দরজা খুলেই দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন তাঁর স্ত্রী। দেহ প্রাণহীন বুঝে তিনি ঘাবড়ে গিয়ে ঘরের নতুন চাবি আবার লাগিয়ে খিদিরপুরের বাড়িতে চলে যান। যদিও তিনি নন্দিতার বাড়ির কাউকেই এই বিষয়ে কিচ্ছুটি জানাননি। এখানেই দানা বাঁধছে রহস্য। অপরদিকে ঐ আবাসনের রেজিস্টার খাতায় দেবায়ন কর্মকারের আসা এবং যাওয়ার সময়ের সঙ্গে, মুখে বলা সময়ের মিল পাওয়া যাচ্ছে না।
সূত্রানুসারে, ২০১৯ সালে বছর ৪৩ এর নন্দিতা ভট্টাচার্যের সঙ্গে খিদিরপুরের বাসিন্দা পেশায় ট্যাক্সিচালক ৪২ বছরের দেবায়ন কর্মকারের বিবাহ হয়। ট্যাক্সিতে যাতায়াতের সূত্রেই দেবায়নের সঙ্গে তাঁর আলাপ। দুজনের আগেও একটি করে বিয়ে হয়। দু নন্দিতা ভট্টাচার্যের প্রথম স্বামী দিল্লিতে থাকেন। তিনি তাঁর প্রাক্তন স্ত্রীর সঙ্গে কোন প্রকার যোগাযোগ রাখেননি। অপরদিকে দেবায়ন কর্মকারের প্রথম পক্ষের স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদ হয়ে যায় ২০১২ সালে, সেই পক্ষের দু'বছরের এক পুত্র সন্তানও আছে।
তাঁদের সম্পর্ক কেমন ছিল, কোনও বিবাদ সৃষ্টি হয়েছিল কি না, তা এখনও জানা যায়নি। ঘটনার তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। দেহ পাঠানো হয়েছে ময়না তদন্তে।