হায়দরাবাদ: ইউনিফর্ম নিয়ে সহপাঠীদের বিদ্রুপের শিকার। বাড়ি ফিরে নিজেকে শেষ করে দিল চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। বাথরুমে ঢুকে স্কুলেরই আই কার্ডের ফিতেয় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়ল। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। স্কুলে ব়্যাগিং, ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ যে ভাবে বাড়ছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছেন সকলে। (Hyderabad Boy Harassed by Classmates)

Continues below advertisement

হায়দরাবাদের চন্দনাগড় এলাকা থেকে এই ঘটনা সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, ন’বছর বয়সি ওই বালক একটি বেসরকারি স্কুলে চতুর্থ শ্রেণিতে পাঠরত ছিল। স্কুলে সহপাঠীদের বিদ্রুপের শিকার হয় সে। পরিপাটি করে ইউনিফর্ম না পরায়, তাকে রীতিমতো হেনস্থা করা হয়। এর পরই আত্মঘাতী হয় ওই পড়ুয়া। (Hyderabad School Student Harassed)

পুলিশ সূত্রে খবর, মঙ্গলবার বিকেলে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরে ওই বালক। বাড়িতে সেই সময় কেউ ছিলেন না। আর তাতেই স্কুলের আই কার্ড নিয়ে বাথরুমে ঢুকে যায়। আই কার্ডের ফিতেয় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়ে। বাড়িতে ঢুকে ছেলেকে ওই অবস্থায় দেখে হতবাক হয়ে যান সকলে। তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। কিন্তু সেখানে চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

Continues below advertisement

খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছয় পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য ছেলেটির দেহ নিয়ে যাওয়া হয় গাঁধী হাসপাতালে। আইনি প্রক্রিয়া মিটিয়ে,শেষকৃত্যের জন্য ছেলেটির দেহ তুলে দেওয়া হয় পরিবারের হাতে। গোটা ঘটনায় শোকের আবহ এলাকায়। ওই বালকের মা-বাবার বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ। ঠিক কী ঘটেছিল ওই দিন, তা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

ছেলেটির বাবা শঙ্কর জানিয়েছেন, তাঁর ছেলে বেশ ছটফটে ছিল। কারও সঙ্গে কখনও সমস্যা হয়নি কখনও। এই ঘটনায় স্তম্ভিত তিনি। একটি অভিজাত আবাসনে নিরাপত্তারক্ষীর চাকরি করেন শঙ্কর। সেখানেই একটি ঘরে পরিবার নিয়ে থাকেন। ছেলের স্কুলে এক সময় গাড়িও চালাতেন তিনি। 

ওই টুকু ছেলে আত্মঘাতী হওয়ায় স্কুলের পরিবেশ নিয়েও প্রশ্ন উঠছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কাউকে হেনস্থা করা আইনত অপরাধ হিসেবেই গণ্য হয়। সেই সংক্রান্ত আইনও রয়েছে দেশে। কিন্তু তার পরও লাগাতার এই ধরনের ঘটনা উঠে আসছে। এক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্ত হলে পড়ুয়াদের স্কুল থেকে সাসপেন্ড করা বা অন্যত্র পাঠিয়ে দেওয়ার বিধান রয়েছে। পাশাপাশি, বয়স অনুযায়ী কাউন্সেলিংও হয়। 

কিন্তু শিশুদের অধিকার নিয়ে সমাজসেবামূলক কাজ করেন যাঁরা, তাঁদের মতে স্কুলের মধ্যেই পড়ুয়াদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নজর রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। তাহলে এই ধরনের ঘটনা এড়ানো সম্ভব হবে বলে মত তাঁদের।