গ্রেটার নয়ডা: পণের জন্য স্ত্রীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ। একরত্তি ছেলেও বাবার বিরুদ্ধে বয়ান দিয়েছে। কিন্তু ধরা পড়েও আফশোস নেই গ্রেটার নয়ডার বাসিন্দা বিপিনের। পুলিশিের পিস্তল ছিনিয়ে হেফাজত থেকে পালাতে উদ্যত হয়েছিল সে। পায়ে গুলি করে তাকে নিরস্ত করে পুলিশ। আপাতত হাসপাতালে ভর্তি সে। মৃতার শাশুড়ি দয়াবতীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। (Woman Burnt Alive for Dowry)

সংবাদ সংস্থা ANI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিপিনের নির্বিকার আচরণই ফুটে উঠেছে। তার বক্তব্য, “কোনও আফশোস নেই আমার। আমি ওকে মারিনি। নিজেই নিজের মৃত্যু ঘটিয়েছে ও। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া অত্যন্ত স্বাভাবিক।” যদিও বিপিনের ছোট্ট ছেলে আগেই জানিয়েছে, বিপিনই লাইটার জ্বালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় মৃতার গায়ে। (Greater Noida Woman Burnt Alive)

গত বৃহস্পতিবার গ্রেটার নয়ডায় পুড়ে মৃত্যু হয় এক নিক্কি নামের এক তরুণীর। সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও ভাইরাল হয়, যাতে দেখা যায়, বিপিন এবং বাড়ির লোকজন মিলে নিক্কিকে বেধড়ক মারধর করছে। একটা সময় পর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। টলতে টলতে সেই অবস্থায় নীচে নামার চেষ্টা করেন ওই তরুণী। একটা সময় পর মাটিতে বসে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে মারা যান তিনি। 

বিষয়টি সামনে আসতেই শোরগোল পড়ে যায়। সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলেন নিক্কির দিদি কাঞ্চন। জানান, তাঁদের দুই বোনের একই বাড়িতে বিয়ে হয়। কিন্তু পণের জন্য লাগাতার অত্যাচার চালানো হচ্ছিল তাঁদের উপর। ৩৬ লক্ষ টাকা চাওয়া হচ্ছিল। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে তাঁকেও মারধর করা হয়। জ্ঞান ছিল না তাঁর। এর পর বোনের উপর চড়াও হয় শ্বশুরবাড়ির লোকজন। বোনকে বাঁচানোর চেষ্টা করেও সফল হননি তিনি। 

নিক্কির বাবা বি সিংহ বলেন, “ওরা খুনি। গুলি করে মেরে ফেলা উচিত। ওদের বাড়ি ভেঙে দেওয়া হোক। পার্লার চালিয়ে ছেলেকে বড় করছিল আমার মেয়ে। ওকে অত্যাচার করছিল ওরা। গোটা পরিবার যুক্ত। আমার মেয়েকে খুন করেছে।” কাঞ্চনের দাবি, দুই বোন মিলে যে পার্লার চালাচ্ছিলেন, তাতে ঘোর আপত্তি ছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজনের। অথচ মাসের শেষে সব টাকা নিয়ে নিত। কাঞ্চন জানিয়েছেন, আগুনের শিখা যখন বোনকে গ্রাস করছে, সেই সময় জল ঢেলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন তিনি। কিন্তু মাঝপথে অজ্ঞান হয়ে যান। পরে কেউ বা কারা হাসপাতালে নিয়ে যান নিক্কিকে। কিন্তু প্রাণ বাঁচেনি। যেভাবে অত্যাচার করে মেরে ফেলা হয়েছে বোনকে, শ্বশুরবাড়ির লোকেদেরও একই শাস্তি চান কাঞ্চন।