সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের (Justice Abhijit Ganguly) কাছ থেকে প্রাথমিকে নিয়োগ (Primary Recruitment) সংক্রান্ত ২টি মামলা (Case Transfer) গেল বিচারপতি অমৃতা সিন্হার (Justice Amrita Sinha) বেঞ্চে। সৌমেন নন্দী এবং রমেশ মালিকের দায়ের করা মামলা গেল বিচারপতি অমৃতা সিন্হার এজলাসে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে মামলা সরালেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি।
প্রেক্ষাপট...
প্রাথমিকের নিয়োগ সংক্রান্ত ২টি মামলা বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চ থেকে সরানোর নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া সাক্ষাৎকারের তর্জমার সত্যতা বিচার করে নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রথমবার হাইকোর্টে উঠেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় আদালতে বলেছিলেন, 'অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-কুন্তল ঘোষকে খুব দ্রুত জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত সিবিআইয়ের'। এরপরই ১৩ এপ্রিল বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। সেই মোতাবেক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মামলায় স্থগিতাদেশের মেয়াদ বৃদ্ধি কথা জানায় সুপ্রিম কোর্ট। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেদিন এবিপি আনন্দে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ ওঠে সুপ্রিম কোর্টে।১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২-এ এবিপি আনন্দের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুমন দে-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারের একটি ৪ পাতার তর্জমা সেদিন কোর্টে পেশ করেন অভিষেকের আইনজীবী। এরপরই এবিপি আনন্দকে সাক্ষাৎকার নিয়ে হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে নির্দেশ দেয় আদালত। প্রধান বিচারপতি বলেন, সেই সাক্ষাৎকারে বিচারপতির বক্তব্য এবং মন্তব্য নিয়ে গোটা বিষয়টি তিনি জানাতে চান। সেই সাক্ষাৎকারের তর্জমার সত্যতা বিচার করেই প্রাথমিকের নিয়োগ সংক্রান্ত ২টি মামলা বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়ের কাছ থেকে সরানোর নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট। গত শুক্রবার রাতে সেই নির্দেশ নিয়ে মুখ খোলেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায়। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন, আগামীদিনে দুর্নীতি সংক্রান্ত আরও মামলা তাঁর হাত থেকে সরিয়ে নেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি, চাকরিপ্রার্থীদের প্রসঙ্গে বিচারপতি বলেন, আপনাদের বসে থাকার দিন, হয়তো আপনাদের মৃত্য়ুদিন অবধি হতে পারে। সোমবার এজলাসে বসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় বলেছিলেন, 'যে লড়াই শুরু হয়েছে , সে লড়াই চলবে। বিভিন্নভাবে লড়াই চলবে। আমি তো চিরকাল এখানে থাকবো না, কিন্তু লড়াই চলবে।' সেই সঙ্গে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্য়ায় এটাও পরিষ্কার বুঝিয়ে দেন, যে দুর্নীতি ইস্য়ুতে তিনি অবস্থান বদলাবেন না। বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্য়ায়ের এজলাস থেকে প্রাথমিকের নিয়োগ দুর্নীতির মামলা সরানোর নির্দেশে কার্যত আক্ষেপের সুর ধরা পড়ে আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীদের অনেকের গলায়। তা নিয়েও মুখ খোলেন তিনি। অন্যদিকে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তদন্তের গতিপ্রকৃতি নিয়ে CBI-র ভূমিকায় তীব্র ক্ষোভপ্রকাশ করেন আলিপুরের বিশেষ সিবিআই আদালতের বিচারক। বলেন, ২টি মামলা ছাড়া নিয়োগ দুর্নীতির অন্য মামলা- অল আর হোপলেস! নীলাদ্রি-কুন্তল-তাপস কাকে টাকা দিলেন, তিনি তো পিকচারেই নেই! গত শনিবার, কুন্তল ঘোষ, তাপস মণ্ডল ও নীলাদ্রি ঘোষের ১২ মে অবধি জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
আরও পড়ুন:পাহাড় থেকে বরফ তুলে নিয়ে ইনস্ট্যান্ট আইসক্রিম, রেসিপি দেখলেই চমকে যাবেন