সন্দীপ সমাদ্দার, পুরুলিয়া: পুরুলিয়ার (Purulia) হুড়া থেকে আটক গরু, মোষ বোঝাই ২২টি গাড়ি। উদ্ধার শতাধিক গবাদি পশু। বেশ কয়েকটি বাছুরের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় ৪০ জনকে গ্রেফতার করেছে হুড়া থানার পুলিশ। গতকাল গভীর রাতে হুড়ার হাটতলা এলাকায় গরু, মোষ বোঝাই গাড়ি আটক করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও তৃণমূল নেতা সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, পুলিশ ও বিজেপির আঁতাঁতে গরু পাচার চলছে। প্রশাসনকে জানানো সত্ত্বেও কাজ হয়নি বলে অভিযোগ শাসক-নেতার। বিজেপির প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। 


উল্লেখ্য়, গরু পাচারকাণ্ড নিয়ে তোলপাড় চলছে রাজ্যজুড়ে। তদন্তে তৎপর সিবিআই, ইডি- দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা। গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। এই আবহে পুরুলিয়ার হুড়া ফের গরু ও মোষ বোঝাই ২২টি গাড়ি আটক করল পুলিশ।


এদিকে, গরুপাচার মামলায় (Cattle Smuggling Case) অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে (Saigal Hossain) হেফাজতে পেতে জরুরি ভিত্তিতে শুনানির জন্য ইডি-র (ED) আবেদনে সাড়া দিল না হাইকোর্ট। এই মামলাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত শুনানির জন্য গতকাল কলকাতা হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে আর্জি জানায় ইডি। প্রয়োজনে রবিবার ছুটির দিন, এমনকি রাতেও শুনানির শুনানির জন্য তারা প্রস্তুত বলে জানানো হয়। সায়গলকে নোটিস পৌঁছে দিতে আজ আসানসোল জেলেও যান ইডি-র আধিকারিকরা। যদিও ইডি-র আবেদনা সাড়া না দিয়ে মঙ্গলবার নির্ধারিত দিনেই শুনানি হবে বলে হাইকোর্ট জানিয়েছে।


সায়গলকে নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদনে সাড়া দিল না হাইকোর্ট


এর আগে, সায়গলকে ট্রানজিট রিমান্ডে দিল্লি নিয়ে যাওয়ার জন্য ইডি-র আবেদন খারিজ করে দেয় আসানসোলের ভেকেশন কোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। মঙ্গলবার সেই মামলার শুনানি হওয়ার কথা ছিল। গরুপাচার মামলায় সিবিআইয়ের পর সায়গল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে ইডি। বর্তমানে আসানসোল জেলে রয়েছেন অনুব্রতর দেহরক্ষী।


এ দিকে, গরুপাচার মামলায় এ বার হাওয়ালা-যোগের অভিযোগ তুলল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI)। তাদের দাবি, বাংলাদেশের গরু পাচারকারীদের টাকা হাওয়ালার মাধ্যমে এ রাজ্যে পৌঁছত। প্রোটেকশন মানি হিসেবে সেই ভাগ পৌঁছত বিএসএফ আধিকারিক, স্থানীয় পুলিশ এবং রাজনৈতিক নেতাদের কাছে।


গরু পাচার মামলার তদন্তে উঠে পড়ে লেগেছে সিবিআই, ইডি- দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা। গ্রেফতার হয়েছেন তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল। জেলবন্দি তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকেও হেফাজতে নিতে চেয়ে দফায় দফায় জেরা করছে ইডি।


এই আবহে ফের সামনে এল গরু পাচারের অভিযোগ। সীমান্তে চলল গুলি। শনিবার তখন গভীর রাত। বিএসএফ সূত্রে খবর, নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বিষ্ণুপুর বর্ডারে ১৫-২০ জন দুষ্কৃতী গরু পাচারের চেষ্টা করছিল। জওয়ানরা তাদের ধাওয়া করলে, ধারাল অস্ত্র ও লাঠি নিয়ে হামলা চালানো হয়। শূন্যে গুলি ছোড়েন বিএসএফ জওয়ানরা। তা সত্ত্বেও দুষ্কৃতীরা মারধর চালিয়ে যায়। পরিস্থিতি সামলাতে পাচারকারীদের লক্ষ্য করে গুলি চালায় বিএসএফ।