উজ্জ্বল মুখোপাধ্যায়, কলকাতা: ঘড়িতে ৬টা বেজে ৫ মিনিট। শুক্রবার সন্ধে, বেশিরভাগ কর্মচারীই বেরিয়ে গিয়েছেন। হঠাতই আগুন লাগল চাঁদনি চকের এলআইসি বিল্ডিংয়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে দমকলের ৪টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পরে আরও ২টি ইঞ্জিন আসে। আশার কথা একটাই, কোনও বড় মাপের ক্ষতি হয়নি। যে ক'জন বিল্ডিংয়ের মধ্যে ছিলেন তাঁদেরও নামিয়ে আনা গিয়েছে।


যা জানা গেল...
সূত্রের খবর, চাঁদনি চকের এলআইসি বিল্ডিংয়ের চার তলায় আগুন লেগেছিল। দমকলের ধারণা, এসি থেকে শর্ট সার্কিট হয়েই ঘটনাটি ঘটে। আর তার পর সেই আগুন  ছড়িয়ে পড়ে। ওই বিল্ডিংয়ের তিন তলায় একটি পাইপের গুদাম ছিল। অগ্নিকাণ্ডের ফলে সেখান থেকেও প্রচুর কালো ধোঁয়া ছড়াতে শুরু করে। দাউদাউ করে জ্বলতে থাকে আগুনও। একই তলায় এলআইসি-রও একটি গুদাম রয়েছে। কিন্তু কোনওক্রমে সেটি  বেঁচে যায়। সার্বিক ভাবে শেষ পর্যন্ত বড় কোনও বিপদ হয়নি। যদিও এদিনের ঘটনার পর দুটি গুরুত্বপূর্ণ নিয়ে ফের আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রথমত, এদিন যখন আগুন লাগে, তখন অফিস-টাইমের শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে লোকজনের সংখ্যা অনেকটাই কম ছিল। কিন্তু এই ধরনের দুর্ঘটনা অন্য সময়ে হলে কী ঘটতে পারত, কতটা ক্ষয়ক্ষতি হত, ভেবেই আঁতকে উঠছেন অনেকে। দ্বিতীয়ত যে এসির শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার সম্ভাবনা জানা যাচ্ছে, তার রক্ষণাবেক্ষণের অভাব নিয়ে অভিযোগ নতুন নয়। বিদ্যুৎ-সংযোগের দিকটিও রক্ষণাবেক্ষণ করার কথা। এই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলিই কি যথেষ্ট খেয়াল রাখা হয় না? যার ফলে একের পর এক আগুন লাগার ঘটনা ঘটে চলেছে? প্রশ্ন উঠছেই।


বার বার অগ্নিকাণ্ড...
এর আগে, ২০২০ সালের অক্টোবরে এলআইসি বিল্ডিংয়ের চার তলায় আগুন লেগেছিল। সে বার অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করা হয় ৩ জনকে। বিল্ডিংয়ের কর্মীরা জানান, একটি বিকট আওয়াজের পর ৪ তলার কিছু কর্মীর চিৎকার শোনা যায়। কালো ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারিদিক।  তার পর গত জুলাইয়ে ভয়াবহ আগুনে ভস্মীভূত হয়ে যায় হাওড়ার মঙ্গলাহাট। গভীর রাতের আচমকা অগ্নিকাণ্ডে ছারখার হয়ে যায় প্রায় ১হাজার দোকান। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চালায় দমকলের ১৮ টি ইঞ্জিন। তার পরও ক্ষতি আটকানো যায়নি। ব্যবসায়ীদের অবশ্য দাবি, স্থানীয় প্রোমোটার শান্তিরঞ্জন দে, হাট ভেঙে বহুতল তৈরি করতে চাইছিলেন। সেই কারণে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে প্রোমোটারের বিরুদ্ধে অভিযোগ। পর দিন সকালেও পুরোপুরি নেভেনি আগুন। মন্ত্রী অরূপ রায়কে ঘিরে বিক্ষোভ দানা বাঁধে।                                   


আরও পড়ুন:'দুর্গা' বানান জিজ্ঞাসা করতেই দুর্গতি, বিচারপতির 'ইন্টারভিউয়ে' ফেল ২০১৪-র টেট উত্তীর্ণ