আশাবুর হোসেন, সমীরণ পাল, কলকাতা : দু'রাত পার। কেন্দ্রীয় বঞ্চনার অভিযোগে রাজভবনের সামনে ধর্নায় অনড় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ( Abhishek Banerjee ) । কাটিয়ে ফেলেছেন দুই রাত। রাজ্যপালের ( C V Ananda Bose ) সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়া ইস্তক তিনি সেখান থেকে নড়ছেন না , জানিয়ে দিয়েছেন দৃঢ়প্রত্যয়ী সাংসদ। এদিকে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস এখন রাজধানীতে। সেখান থেকে ফিরছেন তিনি শৈলশহরে । এমত পরিস্থিতিতে দার্জিলিং এর রাজভবনে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের দেখা করতে ডেকেছেন রাজ্যপাল। 


সেইমতো শনিবার রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে দার্জিলিং যাচ্ছেন তৃণমূলের ৩ প্রতিনিধি। তাঁর মধ্যে রয়েছেন দুই সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, মহুয়া মৈত্র ও পঞ্চায়েতমন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার। দিল্লি থেকে ফিরে বিকেল সাড়ে ৫টায় দার্জিলিং রাজভবনে তৃণমূলের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করবেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।


দিল্লি যাওয়ার আগে মহুয়া মৈত্রর মন্তব্য,' কলকাতায় এসে ভুক্তভোগী পরিবারের সঙ্গে দেখা করুন। পাহাড়ের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মোকাবিলা প্রশাসন করছে, রাজ্যপাল দার্জিলিঙে কেন? ' অন্যদিকে বিমানবন্দরে দাঁড়িয়ে সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ' রাজ্যপালকে সম্মান জানাতেই তাঁরা উত্তরবঙ্গে গিয়ে দেখা করছেন।' 


এদিকে সি ভি আনন্দ বোস কলকাতায় ফিরে তৃণমূলের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে দেখা না করা পর্যন্ত ধর্না চালিয়ে যাবেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবারই তিনি ধর্না মঞ্চ থেকে জানান, 'আপনি নমিনেটেড। আমরা নির্বাচিত। আকাশ-পাতাল তফাত। আপনি বলছেন ঘেরাও না ঘর আও। কার বাড়িতে যাব, উনি তো ঘরেই নেই।  আমরা দরকার হলে কয়েকজনকে দার্জিলিং-এও পাঠাতে পারি। তাহলে অন্তত বাংলায় তো আসবেন। হাফ রাস্তা তো আসুক। হঠাৎ পালিয়ে গেলেন। উনি ইমেল পাঠিয়েছেন বিকেল সাড়ে ৫টায় দেখা করতে চান। আমরা পদটাকে সম্মান করি, বাংলাকে সম্মান করি। বাংলার অধিকারের স্বার্থে লড়াই করছি বলে, ২-৩ জনকে কাল পাঠাব।'


রাজ্যপালকে কটাক্ষ করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আরও বলেন, 'আপনার তো ৪ তারিখ রাতে কলকাতায় আসার কথা ছিল। দিল্লিতে কোনও কর্মসূচি নেই। হয়তো আজ অপেক্ষা করছিলেন সুপ্রিম কোর্টের রায় কী হয়? মুখ থুবড়ে পড়েছেন। সুপ্রিম কোর্ট উপাচার্য নিয়োগের শখ সুপ্রিম কোর্ট কেড়ে নিল। এত মানুষের চোখের জল পার পাবেন না। জমিদাররাও পাবে না। আজ সুপ্রিম কোর্টের রায় তারই প্রথম ধাপ। ' প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, রাজ্যপালের অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়ো প্রসঙ্গে শুক্রবার শীর্ষ আদালত জানিয়ে দেয়,  যাঁদের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হিসাবে নিয়োগ করা হয়েছে, তাঁরা কোনও ভাতা বা সুযোগ সুবিধা পাবেন না।  পাশাপাশি, রাজ্যে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এবং আচার্যকে 'কফির টেবিলে' বসে আলোচনার পরামর্শও দিল সর্বোচ্চ আদালত। সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশ, মামলা চলাকালীন রাজ্যপাল আর কোনও উপাচার্য নিয়োগ করতে পারবেন না। কার্যত উপাচার্য নিয়োগ মামলায় শুক্রবার ধাক্কাই খেয়েছেন রাজ্যপাল।