সাগরদিঘি, মুর্শিদাবাদ: ২৭ ফেব্রুয়ারি মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘিতে উপনির্বাচন। এখন তুঙ্গে উঠেছে প্রচার। রবিবার, সাগরদিঘিতে ভোট প্রচারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঞ্চ থেকে কংগ্রেস, বাম ও বিজেপিকে একসারিতে রেখে আক্রমণ শানালেন অভিষেক। 


মীরজাফর প্রসঙ্গ:
প্রচারের সময় পলাশির যুদ্ধের প্রসঙ্গ তুলে আনেন অভিষেক। পলাশিতে মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতার কারণেই হেরেছিলেন সিরাজ-উদ-দৌল্লা। সেই প্রসঙ্গ তুলে দলের মধ্যে 'মীরজাফর'দের সতর্ক করলেন তিনি। এদিন অভিষেক বলেন, '২০২১-এর ভোটের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সাগরদিঘির উপনির্বাচন। সিপিএম-কংগ্রেস-বিজেপির অশুভ আঁতাঁতকে জবাব দেওয়ার সময় এসেছে। মীরজাফরদের হারাতে হবে। একটা বুথেও তৃণমূল হারলে, সেটা হবে মীরজাফরের বুথ।'


অভিষেকের অভিযোগ, এই উপনির্বাচনে বাম, কংগ্রেস ও বিজেপি একসঙ্গে লড়ছে। তিনি বলেন, 'কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে বিজেপির যোগ রয়েছে।' এদিন মঞ্চ থেকেই কংগ্রেস প্রার্থীর সঙ্গে শুভেন্দু অধিকারীর ছবি দেখান তিনি। শোনান একটি অডিও ক্লিপও। 'সংখ্যালঘু বুথগুলোতে জোড়া ফুল জিতবে না কীভাবে বলছেন?' অডিও ক্লিপ শুনিয়ে বিস্ফোরক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। 


নিশানায় অধীর:
অধীর চৌধুরীকে আক্রমণ অভিষেকের। তাঁর অভিযোগ, 'অধীর চৌধুরী অমিত শাহের বাহিনী নিয়ে চলছেন কেন? যারা এনআরসি-র কথা বলে, তাদের বাহিনী নিয়ে চলছেন অধীর। এই মীরজাফরকে চিনে রাখুন, হারাতেই হবে।' অধীর চৌধুরীকে মীরজাফর বলে নিশানা অভিষেকের। তাঁর দাবি, 'বিজেপির বি টিম হিসেবে কাজ করছে কংগ্রেস। কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানে বিজেপিকে ভোট দেওয়া।' তাঁর আরও অভিযোগ, 'রাবণের যেমন ১০টা মাথা, বিজেপির এখানে তিনটে মাথা। একদিকে অমিত শাহ-সুকান্ত মজুমদার-দিলীপ ঘোষরা, অন্যদিকে অধীর-সুজনরা। কাশ্মীরে জঙ্গি হামলায় মুর্শিদাবাদের কর্মীর বাড়িতে একদিনও গিয়েছে কংগ্রেস-সিপিএম? আমরা সবসময় মানুষের পাশে থাকি।'


সাগরদিঘির সভা থেকে অভিষেক বলেন, 'আমরা রক্ত দিয়ে লড়াই করতে প্রস্তুত। বাংলার শান্তি-শৃঙ্খলা নষ্ট করতে দেব না। একমাসের মধ্যে আবার আসব সাগরদিঘিতে। মুর্শিদাবাদ গদ্দার-মীরজাফরদের সঙ্গে নেই।'

কোথায় দাঁড়িয়ে সাগরদিঘি:
গতবছর ২৯ ডিসেম্বর, সাগরদিঘির তৃণমূল বিধায়ক ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী সুব্রত সাহার মৃত্যু হয়। ২০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন কমিশন জানিয়ে দেয়, ২৭ ফেব্রুয়ারি সেখানে উপনির্বাচন হবে। ১৯৭৭ থেকে ২০১১- একটানা বামেদের দখলে ছিল এই সাগরদিঘি বিধানসভা কেন্দ্র। ২০১১ সালে রাজ্যে শাসকের সঙ্গে বদলে যায় সাগরদিঘির রং। এরপর, ২০২১ পর্যন্ত সাগরদিঘির রাশ ছিল তৃণমূলের হাতে। ২০২১-এর ভোটে সাগরদিঘিতে দ্বিতীয়স্থানে ছিল বিজেপি। জোটে লড়ে তৃতীয় স্থান পেয়েছিল বাম-কংগ্রেস।


আরও পড়ুন: ভাইরাল অডিওকাণ্ডে কোচবিহারে বিজেপি কর্মীকে গ্রেফতার পুলিশের