কলকাতা: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে শিকেয় উঠেছে পরিমিতি বোধ। পরস্পরকে আক্রমণ করতে গিয়ে কুরুতিকর ভাষা ব্যবহারে পিছপা হচ্ছেন না, শাসক-বিরোধী কোনও শিবিরই। রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি (Akhil Giri) সম্প্রতি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে (Droupadi Murmu) নিয়ে কুমন্তব্য করেন। তার পাল্টা, রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা (Birbaha Hansda) সম্পর্কে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর (Suvendu Adhikari) কুমন্তব্যের আগের একটি ভিডিও সামনে এসেছে। তা নিয়ে টানাপোড়েনের মধ্যেই শুভেন্দু এবং বিজেপি (BJP) নেতৃত্বকে একহাত নিলেন তৃণমূল (TMC) সাংসদ তথা দলের সর্বভারতীয় সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
বীরবাহা-মন্তব্যে শুভেন্দু ও বিজেপি-কে নিশানা অভিষেকের
মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বলেন, "(দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে) অখিল গিরির মন্তব্য সমর্থন করে না দল। ওই দিনই অবস্থান জানিয়ে দেওয়া হয়েছে স্পষ্ট ভাবে। আমাদের সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কার জন্য় ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু বীরবাহাকে নিয়ে ওঁর মন্তব্যে ক্ষমা চাইতে পারবেন বিজেপি নেতৃত্বের। সে ক্ষমতা আছে ওঁদের?"
অভিষেক আরও বলেন, "উনি কী ভাবেন নিজেকে? যাকে খুশি, যা ইচ্ছা বলতে পারেন? বীরবাহা হাঁসদা এবং দেবনাথ হাঁসদাকে কুরুচিকর ভাষায় আক্রমণ করেছেন। দেবনাথ জঙ্গলমহলের মাটির ছেলে, বীরবাহা জঙ্গলকন্যা। বীরবাহাকে মন্ত্রী করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর উনি বলছেন, 'এরা আমার জুতোর তলায় থাকে'!"
রাষ্ট্রপতিকে নিয়ে অখিলের মন্তব্যে তোলপাড় হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। কিন্তু বীরবাহাকে নিয়ে শুভেন্দুর মন্তব্যে কার্যতই ধরি মাছ না ছুঁই নীতি নিয়ে চলছে বঙ্গ বিজেপি। রাষ্ট্রপতি দেশের সাংবিধানিক প্রধান, বীরবাহা রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, এমন তুলনা টেনে বিষয়টিকে লঘু করে দেখানোর চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ উঠে আসছে। সেই আবহেই এই বিতর্কে মুখ খুললেন খোদ অভিষেকও।
এ দিকে, বীরবাহা সম্পর্কে কুরুচিকর মন্তব্যের জেরে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন সিঙ্গুরের দুই আদিবাসী যুবক। বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের দাবিতে সিঙ্গুর থানায় যুব তৃণমূলের বিক্ষোভ। অখিল-ইস্যু চাপা দিতেই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাল্টা তোপ বিজেপির।
বীরবাহা-মন্তব্যে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের সিঙ্গুরে
মঙ্গলবার সিঙ্গুর ব্লক যুব তৃণমূলের উদ্যোগে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে আদিবাসী সম্প্রদায়কে অসম্মানের অভিযোগ তুলেছেন অভিযোগকারীরা। শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের দাবিতে থানা চত্বরে বিক্ষোভও দেখান যুব তৃণমূল কর্মীরা।