কলকাতা: সময়ের নীতিতে রাজনীতিতে এসেছেন বটে। কিন্তু তাঁর কাছে সিনেমা আগে। 'প্রজাপতি' নিয়ে বিতর্কের মধ্যে সাফ জানিয়ে দিলেন অভিনেতা তথা তৃণমূল (TMC) সাংসদ দেব (Dev Adhikari)। জানিয়ে দিলেন, সিনেমার জন্য দেব হয়েছেন তিনি, রাজনীতির জন্য নয় (Projapoti Controversy)।  তাই রাজনীতির সামনে বরাবর শিল্পীসত্ত্বাকেই এগিয়ে রাখবেন (Tollywood)।


সিনেমার জন্য দেব হয়েছেন তিনি, রাজনীতির জন্য নয়, জানিয়ে দিলেন অভিনেতা


বড়দিন এবং দেবের জন্মদিনের লগ্নেই প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে 'প্রজাপতি'। ছবিতে দেবের বাবার চরিত্রে অভিনয় করেছেন মিঠুন চক্রবর্তী। একদা তৃণমূল ছিলেন বটে। কিন্তু ফুল পাল্টে বর্তমানে বিজেপি তিনি। কিন্তু রাজনৈতিক অবস্থান দেব এবং মিঠুনের একসঙ্গে কাজ করার পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। বরং রাজনীতির ঊর্ধ্বে শিল্পের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সৌজন্যের বার্তাই দেন তাঁরা।


কিন্তু তাঁদের ছবি 'প্রজাপতি' নিয়েই এই মুহূর্তে বিতর্ক তুঙ্গে। বাঙালির ঐতিহ্যের নন্দনে দেব-মিঠুনের 'প্রজাপতি' ছবিটিকে জায়গা দেওয়া হয়নি বলে অভিযো। খোদ দেব বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছেন। তাতে প্রতিবাদ জানিয়েছেন সমাজের সব স্তরের মানুষ জনই। মিঠুন রয়েছেন বলেই 'প্রজাপতির প্রতি এমন আচরণ এবং নন্দনে 'প্রজাপতি' ব্রাত্য হওয়ার নেপথ্যে রাজনীতিই কাজ করছে বলে উঠছে অভিযোগ।


সেই বিতর্কের মধ্যে এবিপি আনন্দে এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে নিজের অবস্থান জানিয়ে দিলেন দেব। বললেন, "আমার কাছে সিনেমা আগে। রাজনীতির জন্য নয়, সিনেমার জন্য দেব হয়েছি আমি প্রয়োজনে আবার মিঠুনকে নিয়ে কাজ করব।"


আরও পড়ুন: Projapoti Controversy: নন্দনে ছবি দেখানো মুখ্যমন্ত্রীর হাতে নেই, প্রজাপতি বিতর্কে মুখ খুললেন ফিরহাদ


নন্দনে ছবি শো পাওয়া নিয়ে নানা তত্ত্ব উঠে আসছে। কিন্তু সে সবকে গুরুত্ব দিতে নারাজ দেব। তাঁর কথায়, "আমার কোনও দুঃখ হয়নি। নন্দনে শো পাওয়া, না পাওয়া, আলাদা বিষয়। শুধু এটুকু বলার ছিল যে, নন্দনে যে টাকায় সিনেমা দেখানো হয়, সেখানে যা পরিবেশ, তাতে মধ্যবিত্তের পকেটে টান পড়ে না। কী হনি, কী হতে পারত, সেই তত্ত্বে বিশ্বাসী নই আমি। কী হতে পারে, তা নিয়ে ভাবি।"


কিন্তু প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শিবিরের বাসিন্দা মিঠুনকে ছবিতে নেওয়াতেই কি এত ঝক্কি! মাঝপথে থামিয়ে দিয়ে দেব বলেন, "এর পরও যদি আমার কাছে এমন চিত্রনাট্য আসে, যেখানে মিঠুনকে লাগবে, আবারও ওঁকে নিয়ে ছবি করব। আমার কাছে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত, সিনেমাই সবকিছু। কোনও দিন সিনেমার মধ্যে রাজনীতি ঢোকাইনি, আবার সিনেমার মধ্যেও রাজনীতি ঢোকাইনি। দু'টো আলাদা জগৎ আমার কাছে। যথেষ্ট সৎ ভাবে দুই জগতের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করেছি। একজনও বলতে পারবেন না, কোনও দিন রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে কাজ বের করার চেষ্টা করেছি বা রাজনৈতিক রংয়ের জন্য কাউকে বলছি, তুমি আমার সঙ্গে কাজ করতে পারবে না। কনও শিল্পী, অভিনেতাকে লাগবে মনে হলে আপ্রাণ চেষ্টা করব, পায়েও পড়ে যাব। টাকা বেশি হলে বলব, দিতে পারব না, আবার আপনাকে ছাড়া ছবিও বানাতে পারব না। এমনই মানুষ আমি।"


মিঠুন থাকাতেই নন্দনে শো পায়নি 'প্রজাপতি', উঠছে অভিযোগ


নন্দনে 'প্রজাপতি' শো না পাওয়ার নেপথ্যে রাজনীতি কাজ করছে বলে অভিযোগ উঠলেও, রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম যদিও সেই দাবি খারিজ করে দিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, "নন্দনে শো না পাওয়ার বিষয়টির কারণ হল যে, নন্দনে ছবি দেখানোর বুকিং হয়। আগে থেকে সেই বুকিং সেরে রাখতে হয় সংশ্লিষ্ট ছবির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন যাঁরা, তাঁদের। এই বুকিংয়ের বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রীর হাতে নেই। হতে পারে 'প্রজাপতি' ছবির জন্য আঘে চিঠি দেওয়া হয়নি। অন্য কেউ আগে চিঠি দিয়েছেন। তাই মিঠুন চক্রবর্তী রয়েছেন বলে প্রজাপতি শো পেল না , তা সত্য নয়। কারণ ওই ছবিতে দেবও রয়েছেন।" তবে রাজ্য সরকারের তরফে সাফাই দেওয়া হলেও, অভিযোগ কিন্তু থামানো যাচ্ছে না। এর আগে অনীক দত্তের 'অপরাজিত' ছবিও নন্দনে জায়গা পায়নি সেই ছবিতে তৃণমূল যুব কংগ্রেসের নেত্রী সায়নী ঘোষ থাকা সত্ত্বেও নন্দনে শো মেলেনি। সেই সময়ও বিতর্ক বাধে।