কলকাতা: যাঁকে ঘিরে এত প্রচার, যাঁর জয় ঘিরে ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছিল বাম-কংগ্রেস, সেই বিধায়কই তৃণমূল শিবিরে যাওয়ায় কার্যত হোঁচট খেল কংগ্রেস। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, 'মানুষের রায় ছিল বায়রন বিশ্বাস কংগ্রেসের এমএলএ হোক। দিদি ও খোকাবাবুর ইচ্ছে ছিল মানুষের রায়কে পদাঘাত করে এগিয়ে যাব। নির্বাচনে পরাজয় মেনে নিতে পারেনি তৃণমূল। তাই ভোটের পর বারবার চেষ্টা করে গিয়েছে বায়রনকে তৃণমূলে নিতে। যা যা করেছে তাতে স্পষ্ট হয়েছিল, তৃণমূল এই হারকে মেনে নেবে না।'
সাফল্যের তিন মাসের মধ্যেই ধাক্কা সাগরদিঘি মডেলে। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলের যোগ দিলেন বাম সমর্থিত কংগ্রেস বিধায়ক বায়রন বিশ্বাস। উন্নয়ন করার দাবি নিয়ে তৃণমূলে যোগ দিয়ে বায়রনের দাবি, তাঁর জেতার পিছনে কংগ্রেসের কোনও অবদান নেই। ব্যক্তিগত ক্যারিশ্মাতেই তিনি জিতেছেন বলেও দাবি করেছেন। পাশাপাশি, অধীর চৌধুরী বিজেপির বিরুদ্ধে কথা বলছেন না- এটাও তাঁর দলবদলের কারণ বলে জানিয়েছেন তিনি।
বায়রন বিশ্বাস যে দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলে যোগ দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তা স্পষ্ট হয়েছে অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্যায়ের কথাতেই। জয়ের পর থেকেই বায়রন তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছিলেন বলে জানিয়েছেন অভিষেক। শেষ পর্যন্ত সোমবার নবজোয়ার কর্মসূচি চলাকালীন পূর্ব মেদিনীপুরে অভিষেকের সঙ্গে দেখা করেন বায়রন। সেখানেই তৃণমূলের যোগ দেন তিনি। তৃণমূলে যোগ দিয়েই বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন বায়রন। ‘কংগ্রেসে কাজ করতে পারছিলাম না, আমি বরাবরই তৃণমূলে ছিলাম’ দলবদলের পর মন্তব্য বায়রন বিশ্বাসের। আর বায়রন যোগের পর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘জেতার পরই বায়রন বলেছিলেন তৃণমূলে আসবেন। জেতার পর আমার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করেছেন বায়রন’, দাবি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘বায়রন বিশ্বাসকে তৃণমূলে স্বাগত। আশা করি বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাবেন বায়রন। কংগ্রেস-সিপিএম জোটে কাদের সুবিধা হয়েছে মানুষ দেখেছে। কংগ্রেস-সিপিএম জোটে বিজেপির লাভ হয়েছে।
বায়রনের তৃণমূল-যোগের পর তীব্র কটাক্ষ করেছেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচি। তিনি বলেন, 'বিশ্বাস করা দোষ না। বিশ্বাস ভাঙাটা দোষ। আগে তো বোঝা যায়নি। পরে বোঝা গিয়েছে। বেসিক্যালি মাদকাসক্ত ছেলে। মাদকাসক্ত হলে তো কংগ্রেস করা যাবে না। অধীরবাবু আসলে চট করে মানুষকে বিশ্বাস করে ফেলেন। মানুষজনকে ভালবাসেন। এটাই ওঁর দোষ।'