সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: বাংলার শিক্ষিকাকে (Bengali Teacher) বরখাস্তের নোটিস ঘিরে বিতর্কের জের। উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Pargana) আড়িয়াদহে স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখাল কয়েকটি সংগঠন। চাপের মুখে পড়ে সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের কথা জানাল স্কুল কর্তৃপক্ষ। ৪ বিক্ষোভকারীকে আটক করেছে পুলিশ। 


বাংলা ভাষার শিক্ষিকাকে বরখাস্তের নোটিস ঘিরে স্কুলের সামনে ধুন্ধুমার। অবশেষে দাবি মেনে নিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। উত্তর ২৪ পরগনার আড়িয়াদহের (Arihadaha) বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল হোলি চাইল্ড। বাংলা ভাষা অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে বলে উল্লেখ করে, সম্প্রতি স্কুলের বাংলার শিক্ষিকা দেবস্মিতা রায়কে চাকরি থেকে বরখাস্তের নোটিস পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। নোটিস ভাইরাল হয় সোশাল মিডিয়ায়। এরপরই শুরু হয় বিতর্ক। 


সোমবার স্কুলের সামনে বিক্ষোভ শুরু হয়। এদিন স্কুলে যান কামারহাটির (Kamarhati) বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra)। স্কুল কর্তৃপক্ষ ও বাংলার শিক্ষিকাকে নিয়ে বৈঠক করেন তিনি। কার্যত স্কুল কর্তৃপক্ষের পাশে দাঁড়িয়ে বিক্ষোভের কড়া নিন্দা করেন বিধায়ক। কিন্তু, বিক্ষোভের মুখে অবশেষে সিদ্ধান্ত বদল করে বরখাস্তের নোটিস প্রত্য়াহারের কথা জানায় স্কুল কর্তৃপক্ষ। নোটিসে প্রিন্টিং মিসটেক হয়েছে বলে তাদের দাবি। 


আড়িয়াদহ হোলি চাইল্ড স্কুলের টিচার ইনচার্জ কমলেশ বসু  বলছেন, 'বিনয়ের সাথে প্রস্তাব দিলাম আপনি আবার জয়েন করুন। বিধায়ক কাউন্সিলর ছিলেন। উনি তৃপ্ত হলেন। আমিও খুশি'। এর পর মদন মিত্রর ফেসবুক লাইভ থেকে নিজের প্রতিক্রিয়া জানান ওই শিক্ষিকা। অন্যদিকে, স্কুলের সামনে বিক্ষোভ দেখানোয় ৪ জনকে আটক করে বেলঘরিয়া থানার পুলিশ। 


ঘটনার প্রেক্ষাপট: বেশ কিছুদিন আগেই ভাইরাল হয় সেই চিঠি। স্কুলে নাকি বাংলা ভাষার পড়ুয়াই নেই। তাই বাংলার শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করার নোটিস দিতে গিয়ে বিতর্কে জড়ায় আড়িয়াদহর হোলি চাইল্ড স্কুল (Ariadaha Holi Child School)। নোটিসে লেখা হয়- বাংলা ভাষা প্রায় অস্তিত্বহীন। স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, ভুলবশত ওই লাইন থেকে একটি শব্দ বাদ পড়ে যায়। পরে সংশোধন করে চিঠি পাঠানো হয়েছে শিক্ষিকাকে।


'বাংলা ভাষা প্রায় অস্তিত্বহীন! প্রয়োজন নেই বাংলার শিক্ষিকা!' রাজ্যের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল এমনই নোটিস পাঠাল শিক্ষিকাকে! যা নিয়ে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক।  উত্তর ২৪ পরগনার আড়িয়াদহের বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল হোলি চাইল্ড। সম্প্রতি এই স্কুলের বাংলা ভাষার শিক্ষিকাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নোটিস পাঠায় কর্তৃপক্ষ। নোটিসটি ভাইরাল হয় সোশাল মিডিয়ায়।


তাতে লেখা হয়, আমাদের স্কুলে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে বাংলা ও হিন্দি পড়ানো হয়। প্রায় সব পড়ুয়াই হিন্দি পড়ে। বাংলা ভাষা প্রায় অস্তিত্বহীন। সেই কারণে স্কুলে এখন বাংলা শিক্ষিকার প্রয়োজন নেই। আপনাকে দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হল। বিতর্কের মুখে পড়ে তড়িঘড়ি নোটিস সংশোধন করে আবার পাঠানো হয়। 


সংশোধিত নোটিসে বিতর্কিত লাইনটি বদলে লেখা হয়, বাংলা ভাষার ছাত্র আমাদের স্কুলে প্রায় অস্তিত্বহীন। আড়িয়াদহ হোলি চাইল্ড স্কুলের ইনচার্জ কমলেশ বসুর সাফাই, শারীরিক কারণে হয়তো ভুল করে ছাত্র শব্দটা বাদ পড়ে গিয়েছিল। উনি আমার সঙ্গে কথা বলতে পারতেন।


আমরি বাংলা ভাষার স্বীকৃতির জন্য ঐতিহাসিক সংগ্রাম হয়েছে পদ্মাপারে। টেমসের তীরে পূর্ব লন্ডনের হোয়াইটচ্যাপেল মেট্রো স্টেশনে ঝুলছে বাংলায় লেখা বোর্ড। বাংলা ভাষা শিখতে রীতিমতো শিক্ষক রেখে পড়াশোনা করছেন এ রাজ্যের রাজ্যপাল। আর সেই রাজ্যেরই একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে বাংলা ভাষার ছাত্র নেই বলে বরখাস্ত করে দেওয়া হল শিক্ষিকাকে! যে শিক্ষিকাকে নোটিস দেওয়া হয়েছে, তাঁর সঙ্গে বার বার যোগাযোগ করা হলেও প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তাঁর ফোন বেজে গিয়েছে।