কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা: এতদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (Educational Institutes) খোলার জন্য আন্দোলন হয়েছে। সরকার যখন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে (School, College, University) সশরীরে ক্লাসের (Offline class) ছাড়পত্র দিয়েছে, স্কুলে স্কুলে চলছে অষ্টম থেকে দ্বাদশের ক্লাস, পাড়ায় শিক্ষালয়ে উপচে পড়া ভিড়, তখন অভিযোগ উঠছে অফলাইন ক্লাস না করানোর। আর সেই অভিযোগ ঘিরে সরগরম রাজ্যের পাঁচতারা বিশ্ববিদ্যালয় যাদবপুর (Jadavpur University)।


মঙ্গলবার উপাচার্যের দফতরের বাইরে বিক্ষোভ দেখান যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং শাখার পড়ুয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, ক্যাম্পাসে এলেও ক্লাসরুম বন্ধ। শিক্ষকদের একাংশ অনলাইন ক্লাস করতেই বাধ্য করাচ্ছেন।


সরকারি নির্দেশে যেখানে ৩ তারিখ থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস শুরু হয়ে যওয়ার কথা, সেখানে যাদবপুরের এই ছবি প্রশ্ন তুলেছে। সমস্যার কথা মেনে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিভাগীয় প্রধানদের অফলাইন ক্লাস করার বার্তা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। 


যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য চিরঞ্জীব ভট্টাচার্য বলেছেন, ‘সমস্যা একটা আছে। ১০ তারিখ বিভাগীয় প্রধানদের বৈঠকে ডেকেছি। আলোচনা হবে। ইমেল করে জানানো হচ্ছে অফলাইন ক্লাস করা হোক।’


বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে দাবি, দূর-দূরান্তের পড়ুয়ারা যারা এখনও ক্যাম্পাসে আসতে পারেনি, তাদের তরফে অনলাইন ক্লাসের দাবি ছিল। পাশাপাশি, শিক্ষকদের একাংশও করোনা আবহে ক্লাসরুমে আসতে অনিচ্ছুক। তবে সরকারি নির্দেশ মেনে, আগামী দিনে যে অফলাইন ক্লাসই হবে, সেই মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। 


এদিকে, রাজ্য সরকারের ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’ এর ধাঁচে ছোটদের জন্য ওপেন এয়ার ক্লাস এবার বেসরকারি স্কুলে। বৃহস্পতিবার থেকে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস শুরু হচ্ছে অষ্টম থেকে দ্বাদশের। অন্যদিকে, সরকারি ও সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলের প্রাক প্রাথমিক থেকে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে ‘পাড়ায় শিক্ষালয়’। এবার খানিকটা সেই ধারায় সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াদের জন্য, শ্রেণিকক্ষের বাইরে পঠনপাঠন শুরু করছে শহরের একাধিক বেসরকারি স্কুল। রানিকুঠির ফিউচার ফাউন্ডেশন স্কুল অভিভাবকদের নোটিস দিয়ে জানিয়েছে, বুধবার থেকে শুরু হবে খোলা আকাশের নীচে ক্লাস। একইভাবে লেক গার্ডেন্সের রামমোহন মিশন হাই স্কুল ক্লাসের বাইরে খেলার মাঠে সোমবার থেকে শুরু করছে প্রথম থেকে সপ্তমের পঠনপাঠন। এমনকী, আইসিএসই স্কুল সংগঠনের তরফেও বাকিদের এই উদ্যোগে সামিল হতে আর্জি জানানো হচ্ছে।


শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, এমন উদ্যোগ নিতেই পারে বেসরকারি স্কুলগুলি। পাড়ায় শিক্ষালয় প্রকল্পের ধাঁচে পঠনপাঠনের উদ্যোগকে তাঁরা স্বাগত জানাচ্ছেন।