প্রবীর চক্রবর্তী, কলকাতা: শহরের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের চার বছরের ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় স্কুলেরই দুই শিক্ষকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। রায় ঘোষণা করল আলিপুরের বিশেষ পকসো আদালত। রায়ে খুশি ছাত্রীর পরিবার।
রায় ঘোষণা করল আলিপুরের বিশেষ পকসো আদালত: ৫ বছর ধরে লড়াই করার পর মিলল বিচার। দোষীদের শাস্তি ঘোষণা হল শুক্রবার।শহরের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে চার বছরের ছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের ঘটনায় স্কুলেরই দুই শিক্ষককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিলেন বিচারক। সেই সঙ্গে দু’জনকেই দিতে হবে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা।জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাস কারাবাসে থাকতে হবে তাঁদের। কারাদণ্ড, জরিমানা ছাড়াও বিচারকের নির্দেশ, সরকারের পক্ষ থেকে শিশুর পরিবারকে দিতে হবে ৫ লক্ষ টাকা।
২০১৭-র ৩০ নভেম্বর শহরের ওই ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের শৌচাগারে ৪ বছরের পড়ুয়াকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। ঘটনার দিন রাতেই যাদবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে শিশুর পরিবার। ১ ডিসেম্বর বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পরই শোরগোল পড়ে যায় রাজ্যে।স্কুলের সামনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অভিভাবকরা। ওইদিনই অভিযুক্ত দুই স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে পকসো আইনে মামলা রুজু হয়। ঘটনার তদন্তভার নেয় লালবাজারের গোয়েন্দা বিভাগ।দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর গত বুধবার স্কুলেরই দুই শিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করে আলিপুরের পকসো আদালত।এদিন হল সাজা ঘোষণা।
বুধবার স্কুলেরই দুই শিক্ষককে দোষী সাব্যস্ত করে আলিপুরের পকসো আদালত। ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ ডি ধারা ও পকসো আইনে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আজ সাজা ঘোষণা হয়।
আলিপুর পকসো আদালতের সরকারি আইনজীবী মাধবী ঘোষ বলেন, 'লার্নেড স্পেশাল কোর্ট ২ আসামীকেই শিশু সুরক্ষা আইনের ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছে।' ছাত্রীর পরিবার চায়, দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক, যাতে ভবিষ্যতে কোনও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আর কেউ এ ধরনের ঘৃণ্য কাজের কথা ভাবতে না পারে।
ওই ঘটনার পরে সরকারি নির্দেশিকা:
ওই ঘটনার পরে বেসরকারি স্কুলগুলির উদ্দেশ্যে পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছিল রাজ্য সরকার। বাসেও থাকতে হবে মহিলা কর্মী।
ওই ঘটনায় বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 'যা ঘটেছে তা ঠিক নয়। টিচারদের আরও দায়িত্বশীল হতে হবে। প্রাইভেট স্কুলগুলিকে আরও দায়িত্ববান হতে হবে। টোটাল শিক্ষক সমাজ খারাপ নয়। যারা খারাপ, তাদের আইসোলেট করতে হবে। দুষ্টুদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। আপসের কোনও প্রশ্ন নেই। অন্যায়ের ক্ষমা নেই।'