অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার : সিকিমে হড়পা বানে (Sikkim Flash Floods) মৃত ভারতীয় জওয়ানের কফিনবন্দি দেহ ফিরল কালচিনির (Kalchini) বাড়িতে। গান স্যালুটে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হল শহিদ জওয়ান বিমল ওঁরাও-কে (৪০)। গোটা ঘটনায় বাকরুদ্ধ পরিবার। এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নিজের বীর সন্তানের ছবি বুকে জড়িয়ে ধরে বৃদ্ধ বাবাও জানালেন বিদায়।
আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলার কালচিনি ব্লকের মধু চা বাগানের মুন্সি লাইনের আদিবাসী দিনমজুর পরিবারের ছেলে বিমল। সেনাবাহিনীর বিন্নাগুড়ি ছাউনিতে গাড়ি চালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন । ২০০৫ সাল থেকে ভারতীয় সেনায় যুক্ত ছিলেন বলে পরিবার সূত্রে খবর। স্ত্রী এবং একমাত্র সন্তান ছাড়াও, পরিবারে বৃদ্ধ বাবা-মা, এক ভাই এবং এক বোন রয়েছে।
সেনাবাহিনী সূত্রে জানা গেছে, সিকিমের জুলু থেকে গাড়িতে ফিরছিলেন তাঁরা। পথে সিকিমের বারদং-এ বিশ্রাম করছিলেন। মঙ্গলবার সেই সময় গভীর রাতে জলোচ্ছ্বাসে সব ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এরপর বুধবার শিলিগুড়ির গাজলডোবায় ভেসে ওঠে তাঁর দেহ।
আজ সকালে বিমলের দেহ মধু চা বাগানের মুন্সি লাইনে নিয়ে আসে সেনাবাহিনী। সেখানে পরিবারের ক্রিয়াকর্মের পর কালচিনির বাসরা নদীর শ্মশানে তাঁকে গান স্যালুটে শেষ শ্রদ্ধা জানায় সেনাবাহিনী। উপস্থিত ছিলেন মেজর জেনারেল অজয় সিং সহ অন্যান্য পদাধিকারীরা। এলাকার বহু মানুষ উপস্থিত থেকে শেষ শ্রদ্ধা জানান শহিদ সেনা জওয়ানকে।
সিকিমে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে (Sikkim Disaster) ৭ জওয়ান-সহ মৃতের সংখ্যা বেড়ে কমপক্ষে ৪০। আরও একটি মেঘভাঙা বৃষ্টির আশঙ্কা থাকায় সিকিম প্রশাসনের তরফে পর্যটকদের সতর্ক করা হয়েছে। মেঘভাঙা বৃষ্টির জেরে তৈরি হওয়া জলোচ্ছ্বাসে সিকিমে ১১টি সেতু ভেঙে গেছে। এর পাশাপাশি জলের পাইপলাইন, সেচলাইন এবং চার জেলার ২৭৭টি বাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয়দের উদ্ধারের জন্য উত্তর সিকিমে এনডিআরএফ এর দলকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
বন্যার কারণে সামরিক সরঞ্জাম তিস্তায় (Teesta) ভেসে গিয়েছে, তার মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র এবং বিস্ফোরকও রয়েছে। সেনার তরফে সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। নদীতে বা নদীর পাশে কোনওরকম অচেনা জিনিস দেখলে, কোনওরকম প্যাকেজ বা আগ্নেয়াস্ত্র দেখলে তা হাত দিতে বারণ করা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে জানাতে বলা হয়েছে স্থানীয় থানায়। ভেসে যাওয়া জিনিসপত্র উদ্ধারের জন্য একাধিক তল্লাশি দল পাঠানো হয়েছে সেনার (Indian Army) তরফে।