অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: স্বাধীনতার প্রায় ৭৪ বছর পর স্বাস্থ্য পরিষেবার অধিকার পেলেন গ্রামের মানুষ। প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা পেলেন আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) জেলার প্রত্যন্ত বক্সা পাহাড়ের ১১টি গ্রামের মানুষ। প্রশাসনের এই ভূমিকায় স্বস্তি স্থানীয়দের।


বক্সা (Buxa) পাহাড়ের বক্সা ডুয়ার্স গ্রামে তিন শয্যা বিশিষ্ট আধুনিক সাজে সজ্জিত এই কমিউনিটি হেলথ ইউনিট (Community Health Unit)। এদিন উদ্বোধন  করেন আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক (Aliourduar District Magistrate) সুরেন্দ্র কুমার মীনা। উপস্থিত ছিলেন কালচিনি ব্লক (Kalchini Block) আধিকারিক সহ স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। এদিন পাহাড়ি পথ পেরিয়ে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে আসেন জেলাশাসক।


জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, প্রাথমিকভাবে সপ্তাহে একদিন এখানে বহির্বিভাগ চালানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া প্রসূতি মহিলাদের জরুরি পরিষেবা দেওয়ার জন্য সর্বক্ষণের একজন আশা কর্মী থাকবেন। এই কেন্দ্রকে বড় করতে প্রায় ১৬ লক্ষ টাকা অনুমোদন করা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর।


উল্লেখ্য, আলিপুরদুয়ার জেলার কালচিনি ব্লকের অন্তর্গত বক্সা পাহাড়। সমুদ্রপৃষ্ট থেকে প্রায় ২৬০০ ফুট উচ্চতার এই পাহাড়ে ১১-টি গ্রামের প্রায় ৩০০০ মানুষের বসবাস। মূলত ডুকপা জনজাতির এই গ্রামগুলো স্বধীনতার বহু বছর পরও ছিল অন্ধকারেই। ২০১৭-১৮ সালে প্রথম সেখানে বিদ্যুৎ পৌঁছায়। কিন্ত যোগাযোগ ব্যবস্থা এখনও অনুন্নত। ফলে চিকিৎসা পাওয়ার জন্য নেমে আসতে হয় প্রায় ৩৫ কিলোমিটার দূরে কালচিনি ব্লকের লতাবাড়ি রুরাল হাসপাতাল অথবা প্রায় ৩১ কিলোমিটার দূরে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল। মাঝে সনতলাবাড়িতে একটি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র থাকলেও প্রত্যন্ত আদমা গ্রাম থেকে দূরত্ব প্রায় ১১ কিলোমিটার।


পাহাড়ি এই রাস্তার বেশির ভাগ অংশই পায়ে হেঁটে যাতায়াত করতে হয়। রাত বিরেতে জরুরি পরিষেবা পেতে হলে সমস্যায় পড়তে হয় সাধারণ মানুষকে। প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে রোগী অথবা প্রসূতি মায়েদের  স্ট্রেচার অথবা কাপড়ের সাহায্যে বাঁশে ঝুলিয়ে হাসপাতালে নিয়ে আসতে হয়।  দুয়ারে করোনা ভ্যাকসিনের পর গ্রামেই কমিউনিটি হেলথ ইউনিট-এর মাধ্যমে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিষেবা পাওয়ায় খুশি বক্সা পাহাড়ের মানুষ।


আরও পড়ুন: Birbhum: ইলামবাজারের গোপালনগরে বিজেপি কর্মী খুনে ২ অভিযুক্তের আত্মসমর্পন