অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: বহুমূল্য কাঠ পাচার মামলায় জামিন পেলেন আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) তৃণমূল নেতা পাসাং লামা। আর জেল থেকে বেরনোর পরই, তাঁর জন্য বিপুল সম্বর্ধনার আয়োজন করল তৃণমূল নেতা।


এলাহি সম্বর্ধনা:
দেখো দেখো কউন আয়া...শের আয়া শের আয়া... ঠিক এই স্লোগানেই কাঠ পাচার মামলায় জামিন পাওয়া নেতাকে বরণ করলেন কর্মীরা। প্রায় সাড়ে চার মাস পর, জেল থেকে ছাড়া পেলেন আলিপুরদুয়ারের কালচিনির প্রাক্তন ব্লক তৃণমূল সভাপতি পাশাং লামা। তাঁকে ঘিরে এভাবে উচ্ছ্বাসে মাতলেন অনুগামীরা। এদিন তিনি জেল থেকে বেরনোর পর হাজির ছিলেন কয়েকশো তৃণমূলকর্মী-সমর্থক। তাঁর পাশাং লামাকে কোলে তুলে মিছিল করেন।


কোন মামলা:
চলতি বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি। বহুমূল্য কাঠ পাচারের অভিযোগে, গ্রেফতার করা হয়, কালচিনির (Kalchini) তৃণমূল নেতা পাশাং লামাকে। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক ধারায় মামলা রুজু করে পুলিশ। মুক্তির পরই, কালচিনির বিডিওর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছেন পাশাং। পাশাপাশি, দাবি তুলেছেন সিআইডি (CID) তদন্তেরও। কালচিনির প্রাক্তন তৃণমূল ব্লক সভাপতি পাশাং লামা বলেন, 'আপনারা ভাল করে জানেন কোরাপ্টেড লোক, যিনি পাশ না করেও বসে আছেন। ওর থেকে আমি ভীত। ও আমাকে বলেছিল রাজনৈতিক কেরিয়ার শেষ করে দেবে। ফলে চাই সিআইডি তদন্ত হোক।' একুশের বিধানসভা ভোটে আলিপুরদুয়ার জেলায় তৃণমূলের কোঅর্ডিনেটর পদে ছিলেন পাশাং লামা। কালচিনি বিধানসভা আসনে তাঁকে প্রার্থীও করেছিল দল। ভোটে হেরে যাওয়ার পর তাঁকে কালচিনি ব্লকের তৃণমূল সভাপতি করা হয়। 


তৃণমূলের (TMC) একটি সূত্রে খবর, বহুমূল্য কাঠপাচার সহ একাধিক বেআইনি কাজ নিয়ে পাশাংয়ের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ জমা পড়ছিল দলে ও প্রশাসনে। পুলিশ সূত্রে দাবি, পাশাং লামার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে কয়েক লক্ষ টাকার শাল ও সেগুন কাঠ এবং কাঠের আসবাবপত্র উদ্ধার হয়। ৩ ফেব্রুয়ারি, নেতাজি ইন্ডোরের প্রশাসনিক সভা থেকে, কারও নাম না করে, পদক্ষেপের নির্দেশ দেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী। তার তিনদিনের মাথায় গ্রেফতার করা হয় পাশাং লামাকে। গ্রেফতারির পরই, তাঁকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়। পাশাং লামা বলেন, 'এমনও দিন আসে, যে পরম বন্ধুও শত্রু হয়ে যায়। সব দিয়ে তৃণমূল করেছি। কিন্তু জানিনা, আমার সেবা ভক্তির মাঝে কি এমন ত্রুটি হয়েছে যারজন্য কু-নজরে পড়তে হয়েছে।' এদিন পাশাংয়ের আইনজীবী জানান, সবকটি মামলাতেই জামিন পেয়েছেন পাশাং।


বিজেপির কটাক্ষ:
তবে এমন কাজে বিজেপির নিশানায় রয়েছে তৃণমূল। রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেন, 'তৃণমূল নিজেদের মুখ রক্ষা করতে একে সরিয়েছে। তৃণমূল দলটা পুরোটাই কাটমানির টাকায় চলে। চোরের শিরোমণি, তারা তো এভাবেই সম্বর্ধনা দেবে।' আলিপুরদুয়ারের তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক  ভাস্কর মজুমদার বলেন, 'ব্যক্তিগত কারণে কেউ যদি আইনের দ্বারা শাস্তি পান তৃণমূল কংগ্রেস এইক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ বা প্রভাবিত করে না। ব্যাক্তিগত কাজকর্মের ফলে নিজেকেই ভুগতে হবে। তবে পাশাং লামার আগামী দিনের রাজনৈতিক ভবিষ্যত নিয়ে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বই সিদ্ধান্ত নেবে।'


আরও পড়ুন: মিলছে না পরিষেবা, পঞ্চায়েত ভোটে পুরসভার দাবি উঠল শিলিগুড়ি লাগোয়া মাটিগাড়া, বাগডোগরায়