আলিপুরদুয়ার: বেশকিছু দিন ধরেই তীব্র জলকষ্ট (Water Crisis)। নলকূপ থেকে জল উঠছে না। কুয়োও শুকিয়ে গিয়েছে। জলের অভাবে নাজেহাল আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) ২ নং ব্লকের তুরতুরি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। ওই পঞ্চায়েত এলাকায় তুরতুরি বেলতলা, ধওলাঝোড়া এবং নূরপুর গ্রামের বেশকিছু এলাকায় জলসঙ্কট তীব্র আকার নিয়েছে। কী কারণে এমন অবস্থা? তা খতিয়ে দেখতেই এবার আলিপুরদুয়ার-২ নং ব্লকে হাজির হল স্টেট ওয়াটার ইনভেস্টিগেশন ডিরেক্টরেটের জলপাইগুড়ির দফতর। পৌঁছেছেন ভূতত্ত্ববিদ (Geologist)-সহ তিন জনের একটি দল।
কী সমস্যা?
জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের হাতেগোনা কয়েকটি গভীর নলকূপ রয়েছে। সেগুলি থেকেও জল উঠছে কম। ফলে এলাকার মানুষদের নাকাল অবস্থা। প্রয়োজনীয় জল আনতে হচ্ছে অনেক দূরের গভীর নলকূপ থেকে। একই পরিস্থিতি ওই এলাকা সংলগ্ন কুমারগ্রাম ব্লকের কার্তিকা এবং ফাঁসখাওয়া চা বাগানের শ্রমিক মহল্লাতেও। তাঁদের নির্ভর করতে হচ্ছে বাগান কর্তৃপক্ষের জলের গাড়ির উপর। দিনে একবার সেই জলভর্তি গাড়ি এলে পাইপ নিয়ে ট্যাঙ্ক থেকে জল ভরছেন বাসিন্দারা। চলছে হুড়োহুড়ি। দিনে একবার ট্যাঙ্ক আসায় প্রয়োজনের তুলনায় অনেক কম জল মিলছে তাঁদের। আলিপুরদুয়ার-২ নং ব্লকসহ সংলগ্ন কুমারগ্রাম ব্লক নিয়ে প্রায় ২০ হাজার মানুষ এমন জল কষ্টে রয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। বেশ কয়েক বছর ধরেই গরমের সময়, মে-জুন-জুলাই মাসে এমন দেখা যাচ্ছে। যা অবশ্য বর্ষা এলে অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যায়।
কারা খতিয়ে দেখলেন?
এই পরিস্থিতিতে আলিপুরদুয়ার-২ নং ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগ নেয়। তাঁদের উদ্যোগেই জলস্তর নেমে যাওয়ার কারণ অনুসন্ধানে এলাকায় হাজির হয়েছে একটি ভূতত্ত্ববিদের দল। স্টেট ওয়াটার ইনভেস্টিগেশন ডিরেক্টরেটর, জলপাইগুড়ি দফতরের দুই ভূতত্ত্ববিদ সৌমিক চট্টোপাধ্যায় এবং রাজর্ষি বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে জলের এই সমস্যা খতিয়ে দেখেন আলিপুরদুয়ার-২ নং ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অনুপ দাস।
কারণ কী?
প্রশাসন সূত্রে খবর, এই সমস্যার বেশ কয়েকটি কারণ প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে। ওই এলাকাগুলির পাশেই একটি নদীতে জল শুকিয়ে গিয়েছে, এছাড়া পাহাড় লাগোয়া এলাকা হওয়ায় এমন হতে পারে। ভূমিকম্পের মতো কারণও এমন ঘটনার পিছনে থাকতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞদের একাংশ। এ দিন ভূবিজ্ঞানীরা ওই এলাকায় বিভিন্ন নলকূপগুলি এবং কুয়োগুলির গভীরতা পরীক্ষা করে দেখেন। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন। ওই এলাকায় কখনও ভূমিকম্প হয়েছিল কিনা, কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগ কবে ঘটেছে, সেই সমস্ত বিষয়ে খোঁজ-খবর নেন। সব খতিয়ে দেখে একটি রিপোর্ট তৈরি করে সেই রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে বলে জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন: ভাড়া বাড়িতে ছাপা হচ্ছিল ৫০০ টাকার জাল নোট, তারপর?