করুণাময় সিংহ, মালদা: ফের একশো দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল জেলায়। এবার মালদার গাজোলে তৃণমূল পরিচালিত দেওতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তুললেন গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁদের দাবি, ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ১০০ দিনের কাজে ৩৫৬টি প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে  কিন্তু একটিও গাছ না দিয়ে প্রায় ৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধান, অঞ্চল সভাপতি ও পঞ্চায়েত কর্মীদের একাংশ। মালদার জেলা শাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। যদিও তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি ফারাদ হোসেন তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।পঞ্চায়েত প্রধান রিজিয়া সুলতানার কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি। 


কী অভিযোগ:
রুক্ষ জমির ওপর দাঁড়িয়ে আছে শুধু একটা হলুদ রঙের বোর্ড। তাতে লেখা রয়েছে, এখানে তৈরি হবে বাগান এবং পোল্ট্রি ফার্ম।  বরাদ্দ ২ লক্ষ ৪৬ হাজার ৪৮১ টাকা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বোর্ড লাগানো হয়েছে কিন্তু কাজ হয়নি। শুধু একটা নয়, এমন বোর্ডের সংখ্যা নাকি অনেক রয়েছে। এভাবেই অন্তত ৫ কোটি টাকা লোপাট হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। সূত্রের খবর, ওই পঞ্চায়েত এলাকায় ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে ১০০ দিনের কাজের জন্য ৩৫৬টি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। যার মধ্যে ছিল ড্রাগন ফল চাষ, কলাগাছ চাষ, পোল্ট্রি শেড নির্মাণ প্রভৃতি। কিন্তু স্থানীয়দের অভিযোগ একটিও গাছ না দিয়ে বা শেড না বানিয়ে ৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন পঞ্চায়েত প্রধান রিজিয়া সুলতানা, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি ফারহাদ হোসেন সহ পঞ্চায়েত কর্মীদের একাংশ। এক বাসিন্দা আমিরুল রহমান বলেন, 'আমার বাড়িতে পঞ্চায়েতের লোক এসেছিল। আমি জানতামই না যে আমার জমিতে ড্রাগন, কলা লাগানোর প্রকল্প নেওয়া হয়েছে এবং তা রূপায়িত হয়েছে।'


অভিযোগ নিয়ে পঞ্চায়েত প্রধান রিজিয়া সুলতানাকে বারবার ফোন করা হলেও ফোন সুইচড অফ ছিল। বাড়িতে গিয়েও তাঁকে পাওয়া যায়নি। অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের দেওতলা অঞ্চল সভাপতি ফারহাদ হোসেন। তিনি বলেন, 'আমাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ ভিত্তিহীন। নিয়ম মেনে সমস্ত কাজ হয়েছে।'


বিজেপির তোপ:
মালদা উত্তরের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, 'কোথাও রিগিং করে কোথাও মেম্বারকে কিনে তৃণমূল লুটপাট করার জন্যই পঞ্চায়েতগুলি দখল করেছে। আমরা কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েত মন্ত্রীকে জানাব এইসব ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থা করা যায়।'


তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, 'দল কাউকে দুর্নীতি করার অনুমতি দেয়নি। প্রশাসন তদন্ত করবে। কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হবে।' এই বিষয়ে জেলাশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে গ্রামবাসীদের একাংশ। জেলাশাসক নিতিন সিংহানিয়া জানিয়েছেন, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে

আরও পড়ুন: টন টন কয়লা উদ্ধার! বীরভূমে ফের ফাঁস পাচার ছক