কলকাতা: পাভলভ হাসপাতাল (Calcutta Pavlov Hospital) কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আরও বড় দুর্নীতির অভিযোগ উঠল। নজরদারি ছাড়াই আবাসিকদের খরচ বাবদ ১৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। জানা গিয়েছে, ঠিকাদারের সঙ্গে বিভাগীয় প্রধানের আঁতাঁতে পাস হয়ে যায় বিল। দেখা গিয়েছে রোগীদের খাবারের পরিমাণ কম ও নিম্নমানের। ফলে দীর্ঘক্ষণ না খেয়ে থাকতে হয় রোগীদের, নেই কোনও ডায়েট কমিটি। 


আবাসিকদের পোশাকের জন্য বছরে ১ কোটি টাকার বেশি বরাদ্দ হলেও ছেঁড়া পোশাক পরিয়ে রাখা হয় আবাসিক রোগীদের। রোগীদের দেওয়া হয় না অন্তর্বাস। শেষ নয় এখানেই। উঠেছে আরও অভিযোগ, হাসপাতালের আউটডোরের অবস্থাও দুর্বিষহ। জানলা-দরজা ভাঙা, শৌচাগার ব্যবহারের অযোগ্য। সাধারণ চিকিৎসা সরঞ্জাম, ওষুধ নেই হাসপাতালে। স্বাস্থ্য দফতরের নজরদারি দলের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে এগুলি। সূত্রের খবর, লিখিত জবাব চেয়ে ৭ দিনের সময়সীমা দেওয়া হয়েছে হাসপাতাল সুপারকে।


গত সেপ্টেম্বরে পাভলভ থেকে উধাও হয়ে যান নাদিয়ালের বোন-হত্যাকারী বিচারাধীন বন্দি। সম্মান রক্ষার অজুহাতে বোনকে খুনের পর কাটা মাথা হাতে থানায় হাজির হয়েছিল নিজেই। পাভলভ মানসিক হাসপাতাল থেকে পালায় সেই বিচারাধীন বন্দি মেহতাব হোসেন। হাসপাতাল সূত্রে খবর মেলে রাতে হঠাত্‍ই উধাও হয়ে যায় মেহতাব। সঙ্গে সঙ্গে ঘটনার কথা জানানো হয় তপসিয়া থানাকে। শহর ও আশেপাশের সব জেলার থানায় পাঠানো হয় ছবি। কিন্তু এখনও কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। ঘটনায় প্রশ্নের মুখে পড়ে মানসিক হাসপাতালের নিরাপত্তা। 


সুপারকে শোকজ: মানসিক সমস্যার (Mental Problem) চিকিৎসার জন্য রাজ্যের প্রথম সারির সরকারি মানসিক হাসপাতাল পাভলভের (Pavlov) সুপারকে শোকজ করল স্বাস্থ্য দফতর। চরম অব্যস্থার অভিযোগ তুলে আর সেই অভিযোগে হাসপাতাল (Hospital) সুপারকে শোকজ করল স্বাস্থ্য দফতর (Health Department)।


কী অভিযোগ? গত এপ্রিল ও মে মাসে দু’ দফায় পাভলভ হাসপাতাল পরিদর্শন করেন স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে উল্লেখ, পাভলভে মহিলা আবাসিকদের ২টি ঘরে তালাবন্দি করে রাখা হয়েছে। অপরিচ্ছন্ন, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তাঁরা রয়েছেন। পাভলভের আবাসিকদের গায়ে ক্ষতচিহ্ন, ঘা রয়েছে বলে স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে উল্লেখ।


আরও পড়ুন, উত্তরবঙ্গজুড়ে প্রবল বৃষ্টি, তোর্সা নদীতে জারি হলুদ সতর্কতা


রিপোর্টে আর কী বলা হয়েছে?  রিপোর্টে বলা হয়েছে, আবাসিকরা কী অবস্থায় রয়েছেন তা দেখার প্রয়োজন বোধ করেননি কোনও চিকিত্সক, নার্স ও সুপার। আবাসিকদের খাবারের গুণমান ও পরিমাণ নিয়েও অভিযোগ রয়েছে। আবাসিকদের সঙ্গে অমানবিক আচরণের কোনও ব্যাখ্যা দিতে পারেননি সুপার, উল্লেখ স্বাস্থ্য দফতরের রিপোর্টে। পাভলভের সুপারের কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।                  


অভিযোগ, হাসপাতালের ওয়ার্ড চালাচ্ছেন ইন্টার্নরাই। রাউন্ডে আসেন না সুপার, ডেপুটি সুপার, নার্সিং ইনচার্জ কেউই। এমনকী রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট ডায়েটও নেই। স্বাস্থ্য বিভাগের প্রশ্ন আবাসিকদের সুরক্ষা যদি সুনিশ্চিত না হয় তাহলে রোগীদের জন্য নির্দিষ্ট প্রকল্পের টাকা তাহলে কোথায় খরচ হচ্ছে? রিপোর্টে উঠে এসেছে ১৩ জন মহিলা আবাসিককে ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছে।