গৌতম মণ্ডল, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ফের সুন্দরবনের (Sundarban) লোকালয়ে ঢুকে পড়ল কুমির (Alligator)। সোমবার বেলা এগারোটা নাগাদ পাথরপ্রতিমার (Patharpratima) লক্ষ্মীজনার্দনপুরের ভুলুগিরির ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় কুমিরটিকে দেখতে পান এলাকার মানুষ। শোরগোল পড়ে যায় চারদিকে। খবর যায় বন দফতরের বিট অফিসে। বিকেট চারটে নাগাদ হয় জালবন্দি হয় পূর্ণবয়স্ক কুমিরটি।


কী ভাবে জালে?
গত বেশ কয়েক মাস ধরে সুন্দরবনের লোকালয়ে কুমির ঢোকার ঘটনা ঘটছে। এদিন পাথরপ্রতিমার লক্ষ্মীজনার্দনপুরের ভুলুগিরির ব্রিজ সংলগ্ন এলাকায় কুমিরটিকে দেখতে পেলে আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন স্থানীয়রা। পুকুরে কুমির ঢুকে পড়ায় এলাকায় শোরগোল শুরু হয়ে যায়। বন দফতরের নলগড়া বিট অফিসে খবর গেলে বনকর্মীরা জাল নিয়ে এলাকায় পৌঁছন। ঘিরে ফেলেন পুরো পুকুরটি। অবশেষে বিকেল চারটে নাগাদ জালে ধরা পড়ে কুমির। আপাতত সেটিকে বিট অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সুন্দরবনের নদীতে ছেড়ে দেওয়া হবে তাকে। বন দফতরের কর্মীদের ধারণা, পাশের নদী থেকে জোয়ারের জলে সেটি পুকুরে ঢুকে পড়েছিল।


আগেও এক ঘটনা...
গত মার্চেও প্রায় একই রকম ঘটনা ঘটেছিল পাথরপ্রতিমার দিগম্বরপুরে। সেখানকার পঞ্চমেরবাজার এলাকায় বাসুদেব ঘড়ার পুকুরে একদিন সকালে একটি কুমির ভেসে থাকতে দেখেন এলাকারই কেউ কেউ। বিষয়টি চাউর হতে সময় লাগেনি। পাল্লা দিয়ে ছড়ায় আতঙ্ক। যার পর থেকে পুকুরপাড়ে কাতারে কাতারে মানুষের ভিড়। শেষমেশ বন দফতরের রামগঙ্গা রেঞ্জে খবর পাঠানো হয়। বনকর্মীরা এসে জাল দিয়ে কুমিরটিকে বন্দি করেন। বনকর্মীদের ধারণা, পাশের জগদ্দল নদী থেকে কুমিরটি পুকুরে ঢুকেছিল। এর আগেও এই ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনায়। গত বছর অক্টোবরে বাড়ির পুকুরে কুমির চলে আসায় আতঙ্ক ছড়িয়েছিল দক্ষিণ ২৪ পরগনার রায়দিঘিতে। খবর দেওয়া হয় বন দফতরে। তবে সে বারও বন দফতরের কর্মীরা কুমিরটিকে ধরে নিয়ে যান। সেটিকে ছাড়া হয় বনি ক্যাম্পের কাছে একটি খালে। স্থানীয় বাসিন্দা অনিল দাসের বাড়ির পুকুরে ঘটনার দিন সকালে কুমির দেখে প্রতিবেশীদের চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায়। এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে কুমিরের আতঙ্ক। সঙ্গে সঙ্গে খবর দেওয়া হয় বন দফতরে। চলে আসেন বন দফতরের কর্মীরাও। তারপর নানা কসরত করে জাল দিয়ে অবশেষে কুমিরটিকে বাগে আনা সম্ভব হয়েছিল। সেটিকে বন দফতরের কর্মীরা রায় দিঘির রেঞ্জ অফিসে নিয়ে যান। দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডিএফও মৃণালকান্তি মণ্ডল বলেছিলেন, "কুমির সুস্থ রয়েছে। ওই জায়গায় বহু লোকের ভিড় হয়ে গিয়েছিল।" রেঞ্জ অফিসে কুমিরটির মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়। পর দিন ভোরে সুন্দরবনের বনি ক্যাম্পের কাছে ঠাকুরের জলে ছাড়া হয় কুমিরটিকে।


আরও পড়ুন:অমানবিক ! রাস্তায় নাচতে না চাওয়ায় বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন তরুণকে 'কটূক্তি, মারধর'