সমীরণ পাল, অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও দীপক ঘোষ, কলকাতা: বাংলা সফরে অমিত শাহর মুখে শোনা গেল ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্য ছাড়া অনুপ্রবেশ এবং চোরাচালান আটকানো মুশকিল। খুব তাড়াতাড়ি সেই সাহায্য পাওয়ার মতো রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি করা হবে। শাহের এই মন্তব্যে পাল্টা প্রশ্ন ছুড়ে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর প্রশ্ন,  "তাহলে অমিত শাহ কি পরিস্থিতি তৈরির জন্য চক্রান্ত করছেন?"


ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য অমিত শাহের


বাংলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সমালোচনা করে, বার বার কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবিতে সুর চড়াচ্ছেন বিজেপি নেতারা। রামপুরহাট কিংবা হাঁসখালিকাণ্ডের মতো ঘটনায় তাদের মুখে শোনা যাচ্ছে, ৩৫৫ কিংবা ৩৫৬ ধারা জারির সওয়াল। এই প্রেক্ষাপটে বুধবার হিঙ্গলগঞ্জে বিএসএফ-এর অনুষ্ঠানে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেন শাহ। বলেন, "অনুপ্রবেশ এবং চোরাচালান স্থানীয় প্রশাসনের সাহায্য ছাড়া রোখা মুশকিল। সেই সাহায্যও খুব তাড়াতাড়ি পাওয়া যাবে এমন রাজনৈতিক পরিস্থিতি দ্রুত এখানে তৈরি হবে। জনতার এমন চাপ তৈরি হবে যে, সাহায্য করতেই হবে।"


তার পাল্টা কড়া জবাব দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, "অমিত শাহ আগুন নিয়ে খেলবেন না। বিএসএফকে রাজ্যের এক্তিয়ারের মধ্যে অনুপ্রবেশ করতে বলবেন না। প্ররোচনা দেওয়া বন্ধ করুন। আপনি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আপনার কাজ গরু পাচার, কয়লা পাচার বন্ধ করা। ইডি, সিবিআই, আইটিকে বাড়িতে বসে কাজে লাগানোর বাইরেও কোনও কাজ করুন।"


আরও পড়ুন: IPL 2022: জাডেজাকে অধিনায়ক করাটাই ভুল ছিল, কেন বলছেন সহবাগ?


শাহের মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলেও প্রশ্ন উস্কে দিয়েছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি তৈরি হবে বলতে কী বোঝাতে চাইলেন শাহ, কৌতুহলী অনেকেই। গত বছরই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়েছে। তাতে ২০০ আসনের টার্গেট নিয়ে নামলেও দুই অঙ্ক পেরোতে পারেনি বিজেপি। বরং আগের চেয়ে ক্ষমতা বাড়িয়ে, ২০০-র বেশি আসনে জয়ী হয়েছে তৃণমূল। সেই প্রেক্ষাপটে অমিত শাহর মন্তব্যকে স্রেফ হাততালি কুড়োনোর চেষ্টা হিসেবেই দাবি করছে তৃণমূল। 


অমিত শাহকে পাল্টা হুঁশিয়ারি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের


সম্প্রতি বিএসএফের কাজের পরিসর বৃদ্ধি নিয়ে বাগযুদ্ধে জড়িয়েছিল কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার। গরু পাচারকাণ্ড সামনে আসার পর, বিএসএফের ভূমিকা নিয়ে তৃণমূল এবং বিজেপির তরজার পারদ আরও চড়ে। বুধবার তাই বিএসএফের অনুষ্ঠানে অমিত শাহের বক্তব্য, উস্কে দিল নতুন জল্পনা। কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED), কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI) এবং আয়কর দফতর (IT)-কে ব্যবহার করছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা।