অরিন্দম সেন, আলিপুরদুয়ার: চিতাবাঘের আক্রমণে মৃত্যু হল বৃদ্ধার। ফালাকাটা থানার (Falakata Police Station) দলগাও চা বাগানের গাড়ি লাইনের ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে খবর, বুধবার সন্ধে নাগাদ এলাকার বাসিন্দা রাইলো মিঞ্জ (৬৫) চা বাগানের পাশে শৌচকর্ম করতে গিয়েছিলেন। রাতের অন্ধকারে সেখানেই তাকে চিতাবাঘ আক্রমণ করে। তার চিৎকারে বেরিয়ে আসে পরিবার এবং প্রতিবেশীরা। স্থানীয়রা রাইলো মিঞ্জের গলায় গুরুতর ক্ষতচিহ্ন দেখতে পান। চিতার থাবায় তখন ক্ষতবিক্ষত বৃদ্ধা। রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয়রা বৃদ্ধাকে বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানেই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌছয় জলদাপাড়া জাতীয় উদ্যানের অন্তর্গত দলগাও রেঞ্জ বন কর্মীরা। ঘটনায় শোকের ছায়া এলাকায়।
একাধিকবার বাঘের হানা: এর আগে সুন্দরবনে দফায় দফায় বাঘ আতঙ্ক ছড়িয়েছিলয আজ কুলতলি তো কাল পাথরপ্রতিমা। সুন্দরবনে একের পর এক জায়গায় লোকালয়ে ঢুকে পড়ছিল বাঘ। বাঘকে আটকাতে জঙ্গল লাগোয়া জাল কেটে, স্থানীয়রা নিজেদের বিপদ নিজেই ডেকে আনছে বলে জানিয়েছিল বনদফতর।
কখনও মৈপীঠ, কখনও বা পাথরপ্রতিমা। যেখানে বাঘের ভয়, যেখানে সন্ধে হয়। বাঘের ভয়ে কার্যত সিঁটিয়ে থাকতে হচ্ছিল সুন্দরবনকে। গত এক মাসে একাধিকবার লোকালয়ে ঢুকে পড়েছে বাঘ। কখনও দেখা গেছে পায়ের ছাপ, কখনও গর্জনের চোটে রাতে চোখের পাতা এক করতে পারেননি বাসিন্দারা। গতবছর শীতে যেখানে একটাও বাঘ লোকালয়ে ঢোকেনি বলে দাবি করছে বনদফতর, সেখানে এবছর শুধু ডিসেম্বর মাসেই দেখা যাচ্ছে অন্য ছবি। কেন বারবার লোকালয়ে ঢুকে পরছে বাঘ?
সুন্দরবনে নয়া ব্যবস্থা: বনদফতরের আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, আসলে খাল কেটে কুমির আনার মতোই, জাল কেটে বাঘ আনছেন স্থানীয় বাসিন্দারাই। মাছ আর কাঁকড়া ধরতে গিয়ে বনদফতরের দেওয়া জাল কেটে ফেলছেন তাঁরা। নাইলনের নেট ছেড়ে শেষে স্টিলের ফেন্সিং দেওয়ার ব্যবস্থা করে বনদফতর। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। তাও কেটে ফেলেছেন স্থানীয়রা। আর তাতেই বিপত্তি ঘটছিল। অনেক জায়গাতেই আবার নদীতে চড়া পরে গিয়েছে। ফলে সাঁতার কাটতেও খুব একটা কসরত করতে হচ্ছে না বাঘকে। ২০২১ সালে শীতকালে সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে বেরিয়ে পড়েছিল ৭ টি বাঘ। ২০২২ সালে সেই সংখ্যাটা শূন্য। আর, এ বছর শীতে ইতিমধ্যেই লোকালয়ে চলে এসেছিল ৩ টি বাঘ। যা নিয়ে চিন্তা বাড়ছিল বনদফতরের। তারপর জানানো হয়, নিরাপত্তার জন্য এবার ফেন্সিং কেটে দিলে নেওয়া হবে কড়া ব্যবস্থা। ড্রোনের মাধ্যমে সার্ভিল্যান্স চলবে বলেও জানানো হয় বনদফতরের তরফে।